৫ই জানুয়ারির নির্বাচন ও বিসিএস পরীক্ষা নিয়ে বিতর্কিত বক্তব্য দেয়ার পর এবার এর ব্যাখ্যা দিলেন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের অনুষ্ঠানে এ বিষয়ে বক্তব্য দেয়ার পর ঘরে-বাইরে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। এ অবস্থায় চার দিন আড়ালে থাকার পর আজ গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা। ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো চেয়ারম্যান হিসেবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাহায্য চেয়েছিলেন দাবি করে তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাহায্য চাওয়া কোন অপরাধ নয়। কিন্তু গণমাধ্যমে তার বক্তব্যের অপব্যাখ্যা দিয়ে তাকে হেয় করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। তার বক্তব্যের যে দুটি বিষয়ে নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে পুরো ৪৭ মিনিটের বক্তব্য শুনলে সে ভুল বোঝাবুঝির অবসান হবে বলে দাবি করেছেন এইচটি ইমাম। সকালে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর ধানমন্ডির কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি লিখিত বক্তব্যে বুধবার দেয়া বক্তব্যের ব্যাখ্যা দেন।
বুধবার ছাত্রলীগের সভায় এইচ টি ইমাম ৫ই জানুয়ারির নির্বাচন সম্পর্কে বলেন, নির্বাচনের সময় বাংলাদেশ পুলিশ ও প্রশাসনের যে ভূমিকা, নির্বাচনের সময় আমি তো প্রত্যেকটি উপজেলায় কথা বলেছি, সব জায়গায় আমাদের যারা রিক্রুটেড, তাদের সঙ্গে কথা বলে, তাদের দিয়ে মোবাইল কোর্ট করিয়ে আমরা নির্বাচন করেছি। তারা আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন, বুক পেতে দিয়েছেন। ওই বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়ে এইচটি ইমাম বলেন, ৫ই জানুয়ারির নির্বাচন ঠেকাতে বিএনপি-জামায়াত দেশব্যাপী তা-ব চালিয়েছিল। স্কুল-কলেজ পুড়িয়ে দিয়েছিল। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সেদিনের সাহসী ভূমিকা ছিল প্রশংসনীয়।
তারা নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে তাদের সেই চেষ্টা ব্যর্থ করে দেয়। তাদের সেই দিনের ভূমিকায় দেশের গণতন্ত্র রক্ষা পেয়েছিল। আমি তাদের ধন্যবাদ জানাই। তিনি বলেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ছিল নির্বাচন কমিশনের অধীনে। তবে আমি আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো চেয়ারম্যান হিসেবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাহায্য চেয়েছিলাম। বিএনপি-জামায়াতের তা-বের বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করেছি। তাদের বর্বরতা থেকে দেশকে রক্ষা করার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাহায্য চেয়েছিলাম। এটা কোন অপরাধ নয়। কিন্তু একটি চিহ্নিত মহল আমার বক্তব্যকে অপব্যাখ্যা দিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে। ভুলভাবে উপস্থাপন করে আমাকে হেয় করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এইচটি ইমাম ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেছিলেন, বিসিএসে লিখিত পরীক্ষায় ভাল করতে হবে, ভাইভা আমরা দেখব। এই বক্তব্যের ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, আমার বক্তব্যে সরকারি চাকরি দেয়ার বিষয়টি আলোচনায় এসেছে। আমি সেদিন ছাত্রলীগ নেতাদের পড়াশোনার কথা বলেছিলাম। কারণ যোগ্য হলেই চাকরি পাবেন। রাত জেগে পড়াশোনার কথা বলেছি। বিসিএস-এর লিখিত ও ভাইভা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য কোচিং করার কথা বলেছি। কারণ প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে মেধার কোন বিকল্প নেই। তিনি বলেন, আমি সেদিন কোন পরিস্থিতিতে বক্তব্য দিয়েছিলাম ৪৭ মিনিটের পুরো বক্তব্য শুনলে ভুল বোঝাবুঝির অবসান হবে। কিন্তু কেউ কেউ আমার বক্তব্যের অপব্যাখ্যা দিয়ে আমাকে হেয় করার চেষ্টা করছে।
প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে সংবাদ সম্মেলন করেছেন কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেছেন, এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার সরাসরি যোগাযোগ হয়নি। তবে প্রধামন্ত্রী বিষয়টি অবগত। সংবাদ সম্মেলনের বিষয়টি তিনি জানেন।