যথাযথ মর্যাদা ও উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে আজ ২১ নভেম্বর সশস্ত্র বাহিনী দিবস উদযাপিত হবে। দেশের সকল সেনানিবাস, নৌ ঘাঁটি ও স্থাপনা এবং বিমান বাহিনী ঘাঁটির মসজিদসমূহে দেশের কল্যাণ ও সমৃদ্ধি এবং সশস্ত্রবাহিনীর উত্তরোত্তর উন্নতি ও অগ্রগতি কামনা করে ফজরের নামাজ শেষে বিশেষ মোনাজাতের মধ্য দিয়ে দিবসের কর্মসূচি শুরু হবে।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর থেকে এ সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে যে, ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সশস্ত্রবাহিনীর সদস্যদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ দিন সকালে ঢাকা সেনানিবাসের শিখা অনির্বাণে পুস্পস্তবক অর্পণ করবেন। এরপর সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ইকবাল করিম ভূঁইয়া, নৌবাহিনী প্রধান ভাইস এডমিরাল এম ফরিদ হাবিব ও বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার মার্শাল মোহাম্মদ ইনামুল বারী নিজ নিজ বাহিনীর পক্ষ থেকে শিখা অনির্বাণে পুস্পস্তবক অর্পণ করবেন। তিন বাহিনী প্রধানরা বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।
প্রসঙ্গত, দিবসটি উপলক্ষে সশস্ত্রবাহিনীর সর্বাধিনায়ক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক পৃথক বাণী প্রদান করেছেন।
সশস্ত্র বাহিনী দিবস ২০১৪ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী ঢাকা সেনানিবাসস্থ সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে বীরশ্রেষ্ঠদের উত্তরাধিকারী এবং নির্বাচিত সংখ্যক খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা জানাবেন।
এছাড়াও ২০১৪-১৫ সালে সশস্ত্র বাহিনীর শান্তিকালীন সেনা/নৌ/বিমান বাহিনী পদক এবং অসামান্য সেবা পদকপ্রাপ্ত সদস্যদের পদকে দেবেন প্রধানমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা, সেনাবাহিনী প্রধান, নৌবাহিনী প্রধান, বিমান বাহিনী প্রধান, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও), প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব, প্রেস সচিব ও সচিব, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তাগণ উপস্থিত থাকবেন।
দিবসটি উপলক্ষে ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে একটি বৈকালিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত থাকবেন। এ সংবর্ধনায় উল্লেখযোগ্য আমন্ত্রিত ব্যক্তিত্বদের মধ্যে রয়েছেন জাতীয় সংসদের স্পীকার, প্রধান বিচারপতি, প্রাক্তন রাষ্ট্রপতিরা, সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা, প্রাক্তন উপদেষ্টারা, মন্ত্রী ও মন্ত্রীর পদমর্যাদা সম্পন্ন ব্যক্তিগণ, প্রতিমন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদা সম্পন্ন ব্যক্তিগণ, সুপ্রীম কোর্টের বিচারপতিগণ, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও কমিশনারগণ, বাংলাদেশে নিযুক্ত বিদেশী রাষ্ট্রদূতগণ, মন্ত্রীপরিষদ বিভাগের সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব, ঢাকা এলাকার সংসদ সদস্যগণ, বাহিনীত্রয়ের প্রাক্তন প্রধানগণ, ২০১৪ সালের স্বাধীনতা পুরস্কার প্রাপ্ত ও একুশে পদক প্রাপ্ত ব্যক্তিবর্গ, সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ, নির্বাচিত রাজনৈতিক ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, স্বাধীনতা যুদ্ধের সকল বীরশ্রেষ্ঠের উত্তরাধিকারীগণ, স্বাধীনতা যুদ্ধ এবং স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ঢাকা এলাকায় বসবাসরত খেতাবপ্রাপ্ত কর্মকর্তা/তাঁদের উত্তরাধিকারীগণ, উচ্চপদস্থ বেসামরিক কর্মকর্তাগণ এবং তিন বাহিনীর চাকুরিরত ও অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাবৃন্দ। উক্ত অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ টেলিভিশন সরাসরি সম্প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে তিন বাহিনী প্রধানগণ নিজ নিজ বাহিনীর খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা/তাঁদের উত্তরাধিকারীদের অনুরূপ সংবর্ধনা প্রদান করবেন। ঢাকা ছাড়াও সাভার, বগুড়া, ঘাটাইল, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, সিলেট, যশোর, রংপুর, খুলনা এবং রাজেন্দ্রপুর সেনানিবাসসমূহেও সংবর্ধনার আয়োজন করা হবে।
এদিকে, দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের জন্য ঢাকার বাইরে দেশের অন্যান্য সেনা গ্যারিসন, নৌ জাহাজ ও স্থাপনা এবং বিমান বাহিনী ঘাঁটিতেও বিভিন্ন কর্মসূচি নেয়া হয়েছে। ঢাকা (সদরঘাট), নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, খুলনা ও বরিশালে বিশেষভাবে সজ্জিত নৌবাহিনী জাহাজসমূহ ২১ নভেম্বর বেলা ২টা থেকে বিকাল ৪টা ৩০মিনিট পর্যন্ত সর্বসাধারণের পরিদর্শনের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
এছাড়া বৃহস্পতিবার সশস্ত্র বাহিনী দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বাংলাদেশ টেলিভিশন রাত আটটার বাংলা সংবাদের পর সশস্ত্র বাহিনীর পরিবেশনায় বিশেষ অনির্বাণ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করেছে। বাংলাদেশ বেতার আগামী ২১ নভেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় বিশেষ দুর্বার অনুষ্ঠান সম্প্রচার করবে। এ অনুষ্ঠানটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলসমূহে পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে সম্প্রচারিত হবে। দিবসটি উপলক্ষে শুক্রবারের বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশিত হবে।
এছাড়াও, সশস্ত্র বাহিনীর পরিচালনাধীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে রচনা, চিত্রাঙ্কন এবং কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হবে।