কটিয়াদী, কিশোরগঞ্জ থেকে সুবল চন্দ্র দাস।
নিম্নমানের সামগ্রী ও কাজের কারণে কিশোরগঞ্জ-ভৈরব মহাসড়কের ৫৮ কিলোমিটার সড়ক পথের স্থানে স্থানে বড় বড় ফাটল ও গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। রাজনৈতিক প্রভাব আর অর্থের দাপট কাজে লাগিয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের যোগসাজশে ঠিকাদাররা নিম্নমানের ইট, সুরকি, পাথর ব্যবহারের পাশাপাশি নামমাত্র বিটুমিন ব্যবহার করায় এ নাজুক অবস্থার তৈরি হয়েছে। আর এ রাস্তা সংস্কারের নামে প্রতি বছর দরপত্র আহ্বান করে একই কায়দায় সুবিধা লুটে নিচ্ছে সংশ্লিষ্টরা। ১২ নভেম্বর এ সড়ক পথে ভৈরব থেকে কিশোরগঞ্জ এসে ২০ দলীয় জোটের জনসভায় যোগ দিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বর্তমান সরকারের সমালোচনা করতে গিয়ে এ সড়ক পথটির উদাহরণ টানেন। তিনি বলেন, এ সড়ক পথটিই সরকারের উন্নয়নের নাজুক চিত্রের কথা বলে দেয়। ভৈরব থেকে সড়ক পথে কিশোরগঞ্জ আসতে গিয়ে আমার কোমরে ব্যথা হয়ে গেছে। রোববার সরেজমিন পরিদর্শনকালে কিশোরগঞ্জ-ভৈরব মহাসড়কের কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার বড়পুল এলাকার হিমু ফিলিং স্টেশনের সামনের ও আশপাশের সড়ক, পাকুন্দিয়া উপজেলার পুলেরঘাট বাজার ও আশপাশের সড়ক, কটিয়াদী উপজেলা সদর বাসস্ট্যান্ড ও আচমিতা এলাকার আশপাশের সড়ক, কুলিয়ারচর উপজেলার মীরেরচর ও ভৈরব উপজেলার কালিকাপ্রসাদ এলাকার এ সড়ক পথের স্থানে স্থানে অসংখ্য ফাটল ও বড় বড় গর্ত চোখে পড়ে। অধিকাংশ স্থানে কার্পেটিং সিলকোড উঠে গিয়ে পাথর সুরকিগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে। ফলে যানবাহন চলাচল চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। প্রতিদিনই এসব স্থানে ঘটছে দুর্ঘটনা। কিশোরগঞ্জ জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলমগীর মুরাদ রেজা জানান, নিম্নমানের কাজের কারণে সংস্কার কাজ শেষ হতে না হতেই রাস্তাটি আগের চেহারায় ফিরে গেছে। বর্তমানে এ সড়ক সম্পূর্ণভাবে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। কিশোরগঞ্জ থেকে ভৈরব ভায়া সায়েদাবাদ চলাচলকারী বাস সার্ভিসের কর্মকর্তা রুপন ঘোষ জানান, গেল বছরও এ রাস্তায় ঠিকাদাররা কাজ করেছে। কিন্তু মাস ঘুরতে না ঘুরতেই রাস্তাটি নষ্ট হয়ে যায়। এ গুরুত্বপূর্ণ সড়ক পথটি দিয়ে প্রতিদিন দেশের পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলের হাজার হাজার বাস, ট্রাক, লরিসহ বিভিন্ন ধরনের যাত্রী ও মালবাহী গাড়ি চলাচল করে। ফাটল কিংবা গর্ত এড়িয়ে চলাচল করতে গিয়ে প্রতিদিনই অনেক যানবাহনকে দুর্ঘটনার শিকার হতে হচ্ছে। এ ব্যাপারে কিশোরগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলাম দাবি করেন, গত বছর উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে এ সড়ক পথের ২৫ কিলোমিটার সড়কে ৭ মিলিমিটার করে সিলকোডের কাজ হয়। এছাড়া এরই মধ্যে আরও ২৫ কিলোমিটার রাস্তার কাজের দরপত্র আহবান করা হয়েছে। শিগগির এ কাজ শুরু হবে।