সরকারের বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলন শুরুর ঘোষণা দিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস) সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা। পার্বত্য (শান্তি) চুক্তি বাস্তবায়নে আগামী ৩০ এপ্রিলের মধ্যে কার্যকর উদ্যোগ না নিলে ১ মে (২০১৫) থেকে এই আন্দোলন শুরু হবে বলে জানান সন্তু লারমা।
শনিবার রাজধানীর সুন্দরবন হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ ঘোষণা দেন।
সন্তু লারমা বলেন, চুক্তি স্বাক্ষরের ১৬ বছর পেরিয়ে গেলেও চুক্তি বাস্তবায়নে সরকার গড়িমসি করছে। ৩০ এপ্রিলের মধ্যে এ চুক্তি বাস্তবায়নে সময়সূচি ভিত্তিক কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ না করলে ১ মে থেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির নেতৃত্বে সরকারের বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলন শুরু করা হবে। এছাড়া চুক্তি পরিপন্থী ও জুম্মস্বার্থবিরোধী সব কার্যক্রমের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ আন্দোলন জোরদার করার ঘোষণাও দেন এই বর্ষীয়ান নেতা।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ১৯৯৭ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের পরে তৎকালীন শেখ হাসিনা সরকার ৩ বছর ৮ মাস ক্ষমতায় থাকাকালে পার্বত্য আঞ্চলিক পরিষদ আইন ও তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ আইন প্রণয়ন; আঞ্চলিক পরিষদ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন; ভারত থেকে জুম্ম শরণার্থীদের প্রত্যাবাসন, চুক্তি মোতাবেক পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তাবয়ন কমিটি ও ভূমি টাস্কফোর্স গঠনের বিষয়গুলো বাস্তবায়ন করেছে। কিন্তু ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার আবার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় যাওয়ার পর প্রায় ছয় বছর অতিক্রান্ত হলেও কতিপয় বিষয় বা কর্ম তিন পার্বত্য জেলা পরিষদে হস্তান্তর ব্যতীত পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির অবাস্তবায়িত বিষয়সমূহ বাস্তবায়নে কোনো কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করেনি।
সন্তু লারমা বলেন, রাঙামাটিতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং মেডিকেল কলেজ স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হলেও তাতে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ ও পার্বত্যবাসীর মতামত ও স্বার্থকে পদদলিত করা হয়েছে। তিন জেলায় প্রশাসনের ছত্রছায়ায় ভূমি আগ্রাসনের ফলে স্থানীয় পাহাড়ি-বাঙালি অধিবাসীরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছে বলেও বক্তব্যে উল্লেখ করেন তিনি।
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতি অভিযোগ করেন, সাম্প্রতিক সময়ে আদিবাসী নারীদের উপর সহিংসতার মাত্রা উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে চলেছে। সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত তিন মাসে পার্বত্য চট্টগ্রাম ও সমতল অঞ্চলে অন্তত ১৬ জন পাহাড়ি নারী যৌন ও শারীরিক সহিংসতা এবং অপহরণের শিকার হয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলেন অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সহ-সভাপতি সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদার, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ সরেন, বেসরকারি সংস্থা ইনিস্টিটিউট অব এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইইডি) নির্বাহী পরিচালক নুমান আহমেদ খান এবং মানবাধিকার কর্মী অ্যাডভোকেট নীলুফার বানু।
post by usman gony
– See more at: http://www.swadeshnews24.com/2014/11/29/