খলিলুর রহমান, কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধিঃ কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর, কুলিয়ারচর ভৈরব, নিকলী, অষ্ট্রগ্রাম, হোসেনপুর, পাকুন্দিয়া, তারাইল, মিটামইন, করিমগঞ্জ সহ ১৩টি উপজেলাসহ ভারতীয় খুদ (স্বর্ণালী চাউল) এলসি, নন এলসি ও চোরাই পথে ভারত হতে আসার ফলে দেশীয় চাউল হারিয়ে যেতে বসেছে, দেশীয় চালের কদর ক্রমান্বয়ে হ্যাস পাচ্ছে। দেশীয় কৃষকদের চাউল বিক্রিতে ধ্বস নেমেছে ।
এতে ভারতীয় খুদ এসব বাজারে সয়লাব হওয়াতে রাইছ মিল মালিক ব্যবসায়ীরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েপড়েছে। গতকাল শনিবার বিভিন্ন বাজারে ঘুরে ও ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে জানা গেছে, ভারতীয় খুদ গো-খাদ্য হিসাবে ব্যবহার করার কথা থাকলেও এ খুদ বাজারে কম দাম হওয়ায় এক দিকে দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত পরিবারগণ অবাধে ক্রয় করছে। এর ফলে এসব এলাকার লোকজন এ খুদ (স্বণালী চাউল) খেয়ে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে পারে বলে অনেকে ধারনা করছেন। সূত্রমতে ভারতীয় চাল আমদানির ফলে ভরা মৌসুমে দেশীয় ধান ও চালের ন্যায্য মূল্য না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কিশোরগঞ্জের কৃষক ও চাল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের চাতল মালিকরা। দেশীয় মিল মালিক আর কৃষকদের বাঁচাতে অবিলম্বে সরকারকে চাল আমদানি বন্ধের দাবি জনিয়েছেন তারা। এদিকে দেশীয় বিআর২৮ চাউল ৫০কেজি ওজনের প্রতি বস্তা ১৭৫০ টাকা, বিআর২৯ চাউল ৫০কেজি ওজনের বস্তা ১৬৮০-১৭০০ টাকায় বিক্রির কথা থাকলেও ভারতীয় খুদ (স্বর্ণালী চাউল) ৫০কেজি ওজনের প্রতি বস্তা ১২৩০-১২৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু এ খুদ বিভিন্ন বাজারে বিক্রি হওয়ার কারণে যেমন হাজার হাজার রাইছ মিল ব্যবসায়ীরা সরাসরি কৃষক ও পাইকারদের নিকট থেকে ধান ক্রয় করে চাউল উৎপাদন করতেন। কিন্তু এখন দেশীয় হাজার হাজার মন বস্তা চাউল গোডাউনে রাখার ফলে সেগুলো বিক্রি করতে না পারায় লাখ লাখ টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। ফলে সাধারন ব্যাবসায়ীরা অসহায় হয়ে পড়ছেন একমাত্র ভারতীয় খুদের কারণে। বিভিন্ন রাইছ মিলের শ্রমিকদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, এখন রাইছ মিলে দেশীয় ধানের আমদানী না থাকার কারণে তাদের কোন কাজ নেই। এর ফলে গত কয়েক মাস ধরে তারা এখন সংসার চালাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন। কিশোরগঞ্জ এর কয়েকজন রাইছ মিলের মালিক মো: সাইদুর রহমান, মিজবাহ উদ্দিন, নুরুল ইসলাম, বিভাস চন্দ্র সাহা, আনোয়ার উদ্দিন খান, মঞ্জিল মিয়া সহ অটো রাইছ মিলের প্রায় ৩০জন মালিক গতকাল শনিবার ভোরের পাতা প্রতিনিধিকে জানান, ভারতীয় খুদ (স্বর্ণালী চাউল) অবাধে আমদানী হওয়ার ফলে দেশীয় চাউলের চাহিদা একেবারে কমে গেছে। একই সঙ্গে বিআর২৮ ধান ও বিআর ২৯ ধান এখন আর মিলে কেহ না নিয়ে আসার ফলে এখন তারা পথে বসেছেন। বাজিতপুরের সরারচর অটো রাইছ মিল মালিক সমিতির অজিত চন্দ্র সাহা, ব্যবসায়ী সালাহউদ্দিন, আমির হাসান কুফিয়া, মঞ্জু মিয়া এ প্রতিনিধিকে জানান, ভারতীয় খুদ এভাবে আসতে থাকলে কৃষি খাত ধ্বংশ হয়ে যাবে। ব্যবসায়ীদের ব্যবসা বাণিজ্য ক্রমান্বয়ে বন্ধ হয়ে যাচ্চে এ অবস্থায় চলতে থাকলে ব্যবসায়ীরা পথে বসে পরবে। তারা আরো জানান ভারতীয় খুদ (স্বণালী চাউল) গো-খাদ্য হিসাবে ব্যবহার করার কথা, কিন্তু এ খুদ অল্প মূল্য পেয়ে জনগণ খেয়ে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে পারে বলে তিনি ধারণা করছেন। ব্যবসায়ীরা অবিলম্ভে ভারতীয় খুদ (স্বণালী চাউল) বন্ধ করার জন্য সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি। বাজিতপুর আবাসিক মেডিকেল অফিসার(আর.এম.ও) ডা. এইচ আর সরকার জানান, ভারতীয় খুদ (স্বণালী চাউল) গো-খাদ্য হিসাবে ব্যবহার হওয়ার কথা, কিন্তু মানুষ এ খুদ(স্বর্ণালী চাউল) খেলে স্বাস্থ্যের হুমকির সম্মুখীন হতে পারে বলে তিনি উল্লেখ করেন।