রাজধানীর ঝিগাতলার নিজ বাসার অদূরে ফিল্মি স্টাইলে আফজাল হোসেন ওরফে কানা ছাত্তার (৪২) নামে এক ট্যানারি ব্যবসায়ীকে গুলি করে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। রোববার দুপুরে ঝিগাতলার মনেশ্বর রোডে এ ঘটনা ঘটে। নিহত আফজাল দেড় যুগ আগে ৪৮ নাম্বার ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি ছিলেন বলে তার পরিবার দাবি করেছে।
তবে পুলিশের দাবি, আফজালের নামে হাজারীবাগ ও তার আশপাশের থানায় হত্যাসহ ১৫টি মামলা রয়েছে। তিনি হাজারীবাগ থানার দুই নাম্বার তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী। দীর্ঘদিন কারাভোগের পর সম্প্রতি তিনি জামিনে বেরিয়ে এলে তার প্রতিপক্ষরা এ ঘটনা ঘটায়। তার পরিবারের সদস্যদের দাবি রাজনৈতিক বিরোধের জের ধরে এই হত্যাকা- ঘটেছে।
আফজালের ছোট ভাই মাইদুল ইসলাম ওরফে মোতালেব জানান, রোববার দুপুর ২টার দিকে ঝিগাতলার ৮২ নাম্বার মনেশ্বর রোডের বাসার নিচ তলায় শিপা এন্টারপ্রাইজ নামে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যান আফজাল। সেখান থেকে ১৫ গজ দূরে ৩ মাজার মসজিদ সংলগ্ন একটি চায়ের দোকানে যাওয়ার পথে আগে থেকে ওতপেতে থাকা সন্ত্রাসীরা খুব কাছ থেকে তাকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে। এতে তিনি মাথায়, পেটে ও মুখে গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। ঘটনাস্থল থেকে স্থানীয়দের সহায়তায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে দুপুর আড়াইটার দিকে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত আফজালের বাবা মৃত হাজী আব্দুল আজিজ। এক ছেলে ও এক মেয়ের জনক আফজাল ১৯৯৬ সালে ৪৮ নাম্বার ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি ছিলেন। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ পড়ুয়া বড় মেয়ে শিপার নামে তার ওই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চামড়া কেনাবেচা ও প্রক্রিয়াজাতকরণ করা হতো।
তার স্ত্রী শামিনা আক্তার জানান, দীর্ঘদিন কারাভোগের পর ৬ মাস আগে আফজাল জামিনে মুক্তি পান। এরপর থেকে তিনি রাজনীতি ছেড়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে মনোনিবেশ করেন। সম্প্রতি স্থানীয় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দল পরিবর্তন করার জন্য চাপ দেয়া হচ্ছিল। কিন্তু তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেবেন না জানিয়ে দেন। এ নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে তার বিরোধ তৈরি হয়। এর জের ধরে এই হত্যাকা- ঘটতে পারে বলে দাবি করলেও ওই আওয়ামী লীগ নেতাদের নাম জানাতে পারেননি শামিনা আক্তার।
হাজারীবাগ থানার ওসি কাজী মাইনুল হোসেন জানান, আফজাল হাজারীবাগ থানার দুই নাম্বার তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী। তার নামে হাজারীবাগ ও মোহাম্মদপুর থানায় ১৫টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে ৩টি হত্যা, ৩টি অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে অন্যগুলো সন্ত্রাসীমূলক কর্মকা-ের। এসব মামলায় বেশ কয়েক বছর কারাভোগের পর সম্প্রতি তিনি জামিনে মুক্তি পেয়ে পুনরায় সন্ত্রাসীমূলক কর্মকা- চালানোর জন্য দল সাজাচ্ছিলেন। বিষয়টি প্রতিপক্ষের লোকজন হয়তো ভালোভাবে নেয়নি। এছাড়া আগের কর্মকা-ের জন্য অনেকে তার শত্রু ছিল। ধারণা করা হচ্ছে প্রতিশোধ নিতে হয়তো কোনো পক্ষ এই হত্যাকা- ঘটাতে পারে। তবে খুনি যেই হোক তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। এ ঘটনার পর থেকে খুনিদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। তবে গতকাল বিকাল পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। পুলিশ প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য নিয়ে জড়িতদের শনাক্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। –
Post by আশিকুর রহমান চৌধুরী স্বদেশনিউজ২৪.কম