ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার হবিরবাড়ী লবণকোঠা গ্রামে একই পরিবারের ২কন্যা শিশু সহ বাবা ও মাকে নৃসংশ ভাবে হত্যা করেছে দূর্বৃত্তরা। এলাকাবাসী ও নিহত পারুলের ভাই জানান, সকালে ঘুম থেকে উঠে ওই বাড়ীর লোকজনের কোন সারা শব্দ না পেয়ে তাদের ডাকা ডাকি করি। পরে কোন সারা না পেয়ে বাড়ীর ভিতরে ঢোকে দেখি বাহির থেকে ঘরে তালা দেয়া । বাড়ীর সামনে রাখা বাস গাড়ীর ভিতর রক্তাক্ত অবস্থায় পারুলের স্বামী হবিরবাড়ী ইউনিয়নের শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বাচ্চুর লাশ উপুড় হয়ে পরে আছে।
পুলিশে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে ঘরের তালা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে মা পারুল (২৮) মেয়ে জিনিয়িা (৬) এবং হোসনা (১) কে রক্তাক্ত লাশ ঘরের মেঝে স্তপাকারে পড়ে থাকতে দেখা যায়। পারুলের মাথায় দাঁয়ের আঘাত ও গলা কাটা এবং স্বাসরোধ করে ২ শিশুকে হত্যা করা হয়েছে।
নিহত পারুলের মা আলাতন জানান, নিহত বাচ্চুর গাড়ীর হেলপার যশোরের তনু (৩০) গতকাল দুপুরে তার কাছ থেকে একটি দা চেয়ে নেয়। রাতে দা চাইলে বলে কাজ শেষ হলে দিয়ে দিব। কিন্তু ঘটনার পর থেকে তাকে আর দেখা যায়নি। পুলিশ জানায় সি আইডি টিম এসে লাশ উদ্ধার করবে।
এই হত্যাকান্ডের মোটিভ এখনো বের করতে পারেনি। এঘটনা এক নজর দেখার জন্য হাজার হাজার উৎসুক জনতা ভিড় করছে। ৪ খুনের ঘটনায় এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছেছেন।
এসআই শামীম বলেন, বাড়ির উঠানের কাছে একটি মিনিবাস ছিল। সেখানেই বাচ্চুকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। আর ঘরে ঢুকে তার স্ত্রীকে কুপিয়ে এবং দুই শিশুসন্তানের মুখ ও হাত-পা বেঁধে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। সকালে তার স্ত্রীর বড় ভাই বাসের মধ্যে বাচ্চুর লাশ দেখতে পেয়ে ডাকচিৎকার শুরু করলে এলাকবাসী এসে ঘরের জানালা দিয়ে বাচ্চুর স্ত্রী ও দুই সন্তানের লাশ দেখতে পেয়ে থানা পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ ঘরের তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে লেপ দিয়ে পেঁচানো অবস্থায় ঘরের মেঝে থেকে শেফালী ও তার দুই শিশুর লাশ উদ্ধার করে। এলাকাবাসীর ধারণা, শেফালীকে ধর্ষণের পর দুই শিশু কন্যাসহ খুন করা হয়েছে। এ সময় বাচ্চুর মা রাবেয়া খাতুন, বৃদ্ধ বাবা ওয়াইজ উদ্দিন ও শাশুড়ি আলতান নেছার কান্নায় আকাশ-বাতাস ভারি হয়ে ওঠে। বাচ্চুর স্ত্রীর বড় ভাই উকিল উদ্দিন ভূঁইয়া জানান, প্রতিদিন আমার বোন-ভাগ্নি সকাল বেলা ঘুম থেকে ওঠে। সকাল ৮টা বেজে যাওয়ার পরও তারা ঘুম থেকে না ওঠায় তাদের মোবাইল ফোনে কল করলে মোবাইল বন্ধ পেয়ে খোঁজ নিতে এসে বাসের মাঝে বাচ্চুর লাশ দেখতে পাই। আমার কান্না শুনে আশপাশের লোকজন এসে ঘরের জানালায় উঁকি দিয়ে দেখি ঘরের মেঝেতে রক্ত মাখা লেপ দিয়ে আমার বোন-ভাগনি ঢাকা রয়েছে। নিহত পারুলের মা আলাতন জানান, নিহত বাচ্চুর গাড়ির হেলপার যশোরের তনু (৩০) গত সোমবার দুপুরে তার কাছ থেকে একটি দা চেয়ে নেয়। রাতে দা চাইলে সে বলে কাজ শেষ হলে দিয়ে দেব, কিন্তু ঘটনার পর থেকে তাকে আর দেখা যায়নি। বাচ্চুর বাবা ওয়াইজ উদ্দিন জানান, আমি পাশের পাড়াগাঁওয়ে স্ত্রীকে নিয়ে থাকি। বাচ্চু তার স্ত্রী-সন্তান নিয়ে এখানে (লবণকুঠায়) থাকত। আমার ছেলেকে আগেও সিডস্টোর বাজারে ব্যাপক মারধর করে আহত করা হয়। এ ব্যাপারে মামলা রয়েছে। পাড়াগাঁও মৌজার ২১ শতাংশ জমি নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে সালাউদ্দিন ও হানিফের বিবাদ চলে আসছে। তারা আমার ওই জমি জোর করে দখল করার চেষ্টা করছে।
By: MD. SUHEL KHAN