প্রতিবেদকআরো আড়াই মাস পর যে ফাইওভারে গাড়ি চলাচলের কথা, এখনও সেই ফাইওভার অর্ধেক নির্মাণ পর্যন্ত এগুতে পারেনি। নির্মাণের সময় যেমন বেড়েছে, তেমনি প্রতিনিয়ত বাড়ছে জনদুর্ভোগও। মেয়াদ অনুযায়ী, আগামী বছরের ফেব্র“য়ারি মাসে মগবাজার-মৌচাক ফাইওভার নির্মাণ শেষ হওয়া কথা। কাজের ধীরগতিতে এখন সেটি পিছিয়ে গেছে আরো আট মাস। ২০১৫ সালের অক্টোবরে সাতরাস্তা থেকে হলিফ্যামিলি ও বাংলামোটর থেকে মৌচাক মোড় পর্যন্ত ফাইওভার চালুর আশা প্রকল্প পরিচালকের। মগবাজার-মৌচাক ফাইওভার নির্মাণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী নাজমুল আলম জানান, আগামী বছরের অক্টোবর নাগাদ তারা কাজ শেষ করতে পারবেন। এ পর্যন্ত কাজের অগ্রগতি প্রায় ৪৫ শতাংশ। জনদুর্ভোগের বিষয়টি স্বীকার করে এই প্রকৌশলী বলেন, চেষ্টা করা হচ্ছে, জনদুর্ভোগ কমিয়ে কাজ চালিয়ে যাওয়া। কিন্তু, জনদুর্ভোগ যেমন হচ্ছে, তেমনি কাজেরও অসুবিধা সৃষ্টি হচ্ছে। এেেত্র ‘ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট’- বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে বলে মনে করেন তিনি। মগবাজার এলাকার বাসিন্দা ডা. জামাল উদ্দিন জানান, সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মৌচাক থেকে মগবাজার এলাকায় যানজটের অন্যতম কারণ ফাইওভার নির্মাণযজ্ঞ।
ফাইওভার নির্মাণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা জনদুর্ভোগ কমানোর জন্য কোনো উদ্যোগই নেননি। রাস্তা বন্ধ, আবার কোথাও কোথাও রাস্তা সরু করে দেওয়া হয়েছে। কখনো রাস্তার ওপর নির্মাণযন্ত্র ফেলে রাখায় আটকে থাকছে গাড়ির সারি। আর দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
এ ব্যাপারে নগর স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেন, যে কোনো নির্মাণযজ্ঞের আগে জনদুর্ভোগ লাঘবের বিষয়টি প্রাধান্য দেওয়া উচিত। কিন্তু, নগর উন্নয়নের নামে যে সমস্ত কার্যক্রম চলছে, তাতে জনদুর্ভোগ লাঘবের বিষয়টি উপেতি থাকছে।
এতে যেমন কাজগুলোতে দীর্ঘসূত্রিতা তৈরি হচ্ছে, তেমনি নগরবাসীর উপকারের জন্য করা কাজ উল্টো নগরবাসীকে বীতশ্রদ্ধ করে তুলছে- বলেন ইকবাল হাবিব।
এছাড়া মানুষের স্বাস্থ্য, সময় এবং পারিপার্শ্বিকতা হুমকির পর্যায়ে চলে যাচ্ছে বলে মনে করেন তিনি।
মালিবাগ রেলগেট ও রামপুরা এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ফাইওভার নির্মাণের জন্য এই সড়কটির কয়েকটি স্থান জুড়ে চলছে খোঁড়াখুঁড়ি। কোথাও কোথাও আবার ক্রেন দিয়ে মাটি সরিয়ে নেওয়ার কাজ চলছে। এসব কারণে দিনভর দীর্ঘ যানজটে আটকা পড়ে থাকছে শত শত যানবাহন।
এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী নাজমুল আলম জানান, রামপুরা এলাকার দিকে নতুন করে কাজ শুরু হয়েছে। রামপুরা অংশের কাজের মেয়াদ ২০১৬ সাল পর্যন্ত। বিকল্প সড়ক না থাকায় একই সড়কে যান চলাচল আবার কাজ দুটোই চালিয়ে নিতে হচ্ছে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রকল্প এলাকায় ওয়াসা, তিতাস, টিঅ্যান্ডটি এবং ডিপিডিসির মতো সেবা সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয়হীনতার কারণে ফাইওভারের কাজ চলছে ধীরগতিতে।
মগবাজার মৌচাক-বাংলামোটর সাতরাস্তা সোয়া আট কিলোমিটার দীর্ঘ ফাইওভারটির নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করা হয় ২০১৩ সালের ১৬ ফেব্র“য়ারি।
এই সড়কটি ফাইওভার নির্মাণ কাজের জন্য জনদুর্ভোগ সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনতে বার বার সরেজমিন পরিদর্শন করে নির্দেশনা দিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এমনকি প্রধানমন্ত্রীর কাছে নালিশেরও হুমকি দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু, দুর্ভোগ কোনো অংশেই কমছে না- এমন অভিযোগ সড়কে চলাচলকারী সাধারণ যাত্রীদের।
– আশিকুর রহমান চৌধুরী স্বদেশ নিউজ২৪,কম