আরিফ উদ্দিন, গাইবান্ধা থেকেঃ ২০ দলীয় জোটের ডাকে জেলা সদরসহ ছয় উপজেলায় ঢিলেঢালাভাবে অবরোধ চলছে। শহরের সড়কগুলোতে মঙ্গলবার সকাল থেকে অন্য দিনের চেয়ে রিকশা, সিএনজি ও অটোবাইক চলাচল করলেও ভারি যানবাহন তেমন একটা চলাচল করতে দেখা যায়নি। বেলা বাড়ার সাথে সাথে শহরের সব দোকানপাট ও মার্কেট খোলা শুরু হয়। বাস টার্মিনাল থেকে কোন দূরপাল¬ার বাস ছেড়ে না যাওয়ায় যাত্রীরা পড়েছেন চরম দুর্ভোগে। গাইবান্ধা সদর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আহমেদ রাজিউর রহমান জানান, অবরোধ কর্মসূচীতে যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে মোড়ে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। পাশাপাশি অতিরিক্ত পুলিশ বিভিন্ন সড়কে টহল জোরদারও করা হয়েছে। অপরদিকে, জেলার পলাশবাড়ীতে মহাসড়কের দখল নিয়ে পুলিশের সঙ্গে অবরোধকারীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার দুপুরে রংপুর-ঢাকা মহাসড়কে উপজেলার মহেশপুর-ব্র্যাক মোড় এলাকায় দফায়-দফায় এ ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। গাইবান্ধা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোশারফ হোসেন জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ও অবরোধকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে ১০ রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করা হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল থেকেই রংপুর-ঢাকা মহাসড়কের মহেশপুর, জুনদহ, গাইবান্ধা-পলাশবাড়ী সড়কের ঠুটিয়াপাকুর এলাকায় অবস্থান নিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করে ২০ দলের নেতা-কর্মীরা। দুপুরে মহেশপুর এলাকায় পুলিশ মহাসড়কে ফেলা কলাগাছ সড়াতে গেলে অবরোধকারীদের সঙ্গে তাদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি সদস্যরা ঘটনাস্থলে আসলে অবরোধকারীরা ৩-৪টি গ্র“পে ভাগ হয়ে মহাসড়কের দু’পাশের গ্রামে ঢুকে পড়ে শে¬াগান দিতে থাকে। এদিকে, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থল থেকে চলে আসলেই অবরোধকারীরা পুনরায় মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করে মিছিল-শে¬াগান দিতে থাকে। ঘন্টাব্যাপী দফায় দফায় এ ঘটনার পুনরাবৃত্তি চলতে থাকে। এছাড়া ২০ দল আহুত অনির্দিষ্ট কালের অবরোধ চলাকালে দুপুর আড়াই টা পর্যন্ত জেলার কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। অন্যদিকে, অবরোধকে কেন্দ্র করে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় বিএনপি- জামায়াতের ৮ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশ জানায়, সোমবার রাতে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম শিবরাম গ্রামের মৃত বেরাজ উদ্দিনের ৪ পুত্র বিএনপি’র কর্মী শফিকুল ইসলাম, বাবলু মিয়া, আনোয়ার হোসেন, আমজাদ হোসেন, তালুক সর্বানন্দ গ্রামের আবুল হোসেনের পুত্র নজরুল ইসলাম, গোপাল চরণের ডাঃ সোলায়মানের পুত্র শফিকুল ইসলাম, দহবন্দ গ্রামের সেকেন্দার আলীর পুত্র জামায়াত কর্মী খয়বার হোসেন। এছাড়া ওই উপজেলার কঞ্চিবাড়ি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ অভিযান চালিয়ে কালিরখামার গ্রামের আব্দুল লতিফের পুত্র জামায়াত কর্মী রফিকুল ইসলামকে গ্রেফতার করে।