শেখ হাসিনার ছবিতে আগুন দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের জাতিসংঘের সদর দপ্তরের সামনে বিক্ষোভ করেছে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নেতাকর্মীরা। দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে অবরুদ্ধ করে পুলিশের ছোঁড়া পিপার স্প্রে ও টিয়ার গ্যাসে অসুস্থ করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবিতে আগুন ধরিয়ে দিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে প্রতিবাদ জানায় তারা।
গত সোমবার বিকেলে ‘গণতন্ত্র হত্যা’ দিবসের কর্মসূচি অনুযায়ী জাতিসংঘের সদর দপ্তরের সামনে অনুষ্ঠিত এ সমাবেশে স্থানীয় বিএনপিসহ সকল অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেয়।
পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী জাতিসংঘ সদর দপ্তরের সামনে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি নেতা জিল্লুর রহমান জিল্লু, শরাফত হোসেন বাবু ও জসীম উদ্দিন ভুঁইয়ার নেতৃত্ব এ বিক্ষোভ সমাবেশে বিএনপিসহ সকল অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। সমাবেশ চলাকালীন তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে ‘স্বৈরাচার’, ‘গণবিরোধী’ ও গণতন্ত্র হত্যাকারী বলে সরকারবিরোধী বিভিন্ন ধরনের শ্লোগান দেয়।
চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে অবরুদ্ধ করে পুলিশের টিয়ার গ্যাসে অসুস্থ করায় বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবিতে আগুন ধরিয়ে দিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি ও সকল অঙ্গসংগঠন বিকেল ৩টা থেকে জাতিসংঘ সদর দপ্তরের সামনে বিভিন্ন শ্লোগান দেয়া শুরু করে।
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান জিল্লু বলেন, ‘বাংলাদেশের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলের নেতা ও দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে দলীয় কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে সরকারের পেটোয়া পুলিশবাহিনী পিপার স্প্রে আর টিয়ার গ্যাস ছুঁড়ে চরম অন্যায় করেছে। এটা অমার্জনীয়। আগামীতে বিএনপি এ ঘটনার উচিৎ জবাব দেবে।’ কেন্দ্রীয় কর্মসূচির সঙ্গে সমন্বয় রেখে যুক্তরাষ্ট্রেও তারা সরকার পতনের কর্মসূচি অব্যাহত রাখবেন বলে তিনি জানান।
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি ও ৩৪ অঙ্গসংগঠনের প্রধান শরাফত হোসেন বাবু বলেন, ‘বাংলার মানুষ আজ জেগেছে। বর্তমান সরকারের বিএনপিকে দমননীতি আর অত্যাচারে সাধারণ মানুষও অতিষ্ট হয়ে উঠেছে। মানুষের এ গণজাগরণ আর থামানো যাবে না। বিএনপি চেয়ারপারসনকে অবরুদ্ধ করে, সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করে সরকার অগণতান্ত্রিক কাজ করে চলেছে। জোর করে গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিচ্ছে। সরকারের এই নীল-নকশা বাস্তবায়িত হতে দেবে না বিএনপি।’
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক কোষাধক্ষ্য জসীম উদ্দিন ভুঁইয়া বলেন, ‘দলের চেয়ারপারসন ও দেশনেত্রীকে অবরুদ্ধ করার ঘটনা এটাই প্রথম নয়। গত বছরের শুরুতে রোড মার্চ কর্মসূচির সময়ও সরকারের পুলিশ বাহিনী এমন ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে। এটা কোনো স্বাধীন দেশের গণতন্ত্র হতে পারে না। ইট বালি আর সিমেন্টের ট্রাক দিয়ে মানুষের কণ্ঠরোধ করা যায় না।’ ওই ইট আর বালি দিয়ে স্বৈরাচারী ও জালি সরকারের ‘কবর’ বাঁধাই করা হবে। প্রয়োজনে ওই ইট বালুর ট্রাকটিকে জাতীয় যাদুঘরে রাখা হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপি নেতা কাজী শাখাওয়াত হোসেন আজম, হেলাল উদ্দিন, জাসাস কেন্দ্রিয় কমিটির আন্তর্জাতিক সম্পাদক গোলাম ফারুক শাহীন, বিএনপি নেতা এবাদ চৌধুরী, নিউ ইয়র্ক ষ্টেট বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এমএ খালেক আকন্দ, সিটি বিএনপির সভাপতি হাবিবুর রহমান সেলিম রেজা, এমএসআই শাহীন, যুক্তরাষ্ট্র যুবদলের সাধারন সম্পাদক আবু সাইদ আহমদ, তোফায়েল চৌধুরী লিটন, নুরুল আমীন পলাশ, সরোয়ার খান বাবু, আশরাফ হোসেন, আমানত হোসেন আমান, রফিকুল ইসলাম ডালিম, শেখ হায়দার আলী, রেজাউল আজাদ ভুঁইয়া, রুহুল আমিন নাসির প্রমুখ। সমাবেশে বিএনপি নেতাদের মধ্যে অংশ নেন আলহাজ্ব সোলায়মান ভুঁইয়া, আলহাজ্ব শহিদুল ইসলাম শিকদার, এস আই ঢালী, এমএ বাসিত, আব্দুর রহিম, এমলাক হোসেন ফয়সল, চৌধুরী সালেহ আহমেদ, জুবায়ের চৌধুরী শাহীন, প্রকৌশলী এম সায়েম, ওয়াহেদ আলী মন্ডল, শহিদুল ইসলাম আঁকন, জিয়াউল হক মিশন, বুরহান উদ্দিন, রইস উদ্দিন, কাইউম উদ্দিন সোহাগ, মোতালেব হোসেন, মনি আক্তার, সুয়েব আহমেদ চৌধুরী, দেওয়ান রানা আহমেদ, গোলাম হোসেন, রফিক উদ্দিন বাহার, সোলায়মান মিয়া, হাজী নুরুল ইসলাম, জিলাল আহমেদ, মোহাম্মদ আলী রাজা, নুরু আহমেদ, সাদেক সানী, হোসেন মেম্বার, রবিন, নুরুল আলম, মোজাফফর হোসেন প্রমুখ।