দেশের রেলক্রসিংগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ ও পারাপারে ঝুঁকি কমানোর উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। এজন্য দেশের পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলের বিদ্যমান ক্রসিংগুলোতে নতুন করে প্রায় ২ হাজার গেট কিপার নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। সম্প্রতি রেল বিভাগের পক্ষ থেকে কমিশনে এ সংক্রান্ত দুটি আলাদা প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। প্রকল্প দুটির অনুমোদন হলে নিয়োগপ্রাপ্ত লোকদের চাকরি পরে স্থায়ীকরণ করা হবে। পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
বাংলাদেশ রেল মন্ত্রণালয়ের এ উদ্যোগ বাস্তবায়নের দুটি প্রকল্পের অধীনে সরকারের ব্যয় হবে প্রায় ১০০ কোটি টাকা। এর আওতায় ওই অঞ্চলের ৬৭২টি রেলক্রসিংয়ের আধুনিকায়ন ও ঝুঁকি নিরসনে সিগন্যালিং ব্যবস্থার উন্নয়ন করা হবে। এজন্য ১ হাজার ৮৯ জন গেট কিপারও নিয়োগ দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
রেল বিভাগ সূত্র মতে, ‘পূর্বাঞ্চলে রেলওয়ের লেভেলক্রসিং গেটগুলোর পুনর্বাসন ও মান উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পটি সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে করা হবে। এতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৫০ কোটি টাকা। রেলওয়ের পূর্ব জোনের এমডি ও ডিজি সেকশনের আওতাভুক্ত জেলাগুলোর রেলক্রসিংকে এ প্রকল্পের আওতায় আনা হবে।
এই অঞ্চলে ৩৪৬টি লেভেলক্রসিং গেট রয়েছে। এর মধ্যে অনুমোদিতে ক্রসিং হল ১৮৯টি আর অননুমোদিত ক্রসিং হল ১৫৭টি। এ প্রকল্পের অধীনে ১ হাজার ৩৮ জন গেট কিপার নিয়োগ দেয়া হবে।
এর মাধ্যমে প্রস্তাবিত রেলক্রসিংগুলোর আধুনিকায়ন ও গেট কিপার নিয়োগের মাধ্যমে সড়ক ও রেল পথের নিরাপদ এবং নির্বিঘ্নে চলাচল নিশ্চিত হবে। এছাড়া এগুলোর সিগন্যালিং ব্যবস্থা আধুনিকায়নের মাধ্যমে সড়ক দুর্ঘটনা কমে আসবে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রেলের পূর্ব জোনের জেলাগুলোতে ৩৪৬টি অনুমোদিত ও ৮১৪টি লেভেলক্রসিং রয়েছে। সড়ক বিভাগ, এলজিইডি, স্থানীয় পৌরসভা ও অন্যান্য সংস্থা কর্তৃক নির্মিত রাস্তাগুলো দিয়ে পারাপার অব্যাহত রয়েছে- যে রাস্তাগুলো নির্মেিণ রেল বিভাগের অনুমোদন নেয়া হয়নি। ফলে এসব রেলক্রসিংয়ে গেট কিপারও নিয়োগ দেয়া হয়নি। এজন্য বিভিন্ন সময় এসব রেলক্রসিংয়ে দুর্ঘটনায় প্রাণহানী ঘটেই চলছে। এ অবস্থায় জনসংখ্যার বর্ধিত চাপকে আমলে নিয়ে এসব রেলক্রসিংয়ের আধুনিকায়ন, গেট নির্মাণ ও প্রয়োজনে প্রশস্তকরণের ব্যবস্থা নেয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।
অন্যদিকে রেলের পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোর রেলক্রসিংয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে আরেকটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। এ প্রকল্পে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৪৮ কোটি টাকা। সরকারের সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নের এ প্রকল্পের অধীনে ৩২৬টি রেলক্রসিংয়ের আধুনিকায়ন করা হবে। এরমধ্যে ২৭৩টি অনুমোদিত ও ৫৩টি অননুমোদিত ক্রসিংকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এজন্য ৮৫১ জন গেট কিপার নিয়োগ দেয়া হবে।
জানা গেছে, ওই অঞ্চলের রেলের ৯৭৮টি অনুমোদিত ক্রসিংয়ের মধ্যে মাত্র ২২১ জন গেট কিপার রয়েছে। বাকিগুলো এখনও অরক্ষিত অবস্থায় চলমান রয়েছে। এ জন্য নতুন করে এসব পদে নিয়োগ দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ২০১৬ সাল নাগাদ প্রকল্প দুটিকে বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ রেলওয়ে।