নিজস্ব প্রতিবেদক : বেনাপোল আন্তর্জাতিক কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন ভবনের নিরাপত্তা ও পাসপোর্ট যাত্রীদের হয়রানি বন্ধে বুধবার থেকে বহিরাগত দালাল পবেশে নিষেধাজ্ঞাসহ ইমিগ্রেশন ভবনে ১৬ টি সিসি ক্যামেরা ¯’াপন করেছেন সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
জানা যায়, যোগাযোগ ব্যব¯’া সহজ হওয়ায় এ পথে প্রতিদিন সাড়ে ৩ থেকে ৪ হাজার হাজার পাসপোর্ট যাত্রী ব্যবসা, চিকিৎসা ও ভ্রমনের কাজে যাতায়াত করছে। কিš‘ এ পথে ভ্রমনে তাদের হয়রানির শেষ নেই।
চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন ভবনে ভ্রমন ট্যাক্স কাটতে সোনালী ব্যাংকে ৫শ টাকার রশিদ নিতে বাড়তি ১০ টাকা ঘুষ দিতে হয়। কাস্টমস পার হতে বকশিষের নামে পাসপোর্ট প্রতি ৫০ টাকা আদায় করে কাস্টমস সিপাইরা। পরবর্তীতে ইমিগ্রেশনে প্রাইভেট সার্ভিস পাসপোর্টে ছিল করতে ২শ থেকে ৫শ টাকা, ট্যুরিষ্ট ও মেডিকেল ভিসার যাত্রীদের ৫০ থেকে ১০০ টাকা হারে আদায় করে ইমিগ্রেশন পুলিশ। তার পরে আবার এসআই রবিউলের কাছে গেলে পাসপোর্ট প্রতি সীল মারতে ১ থেকে ২’শ টাকা দিতে হয়।
পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় কাজ শেষে পরিবারের জন্য সামান্য কেনাকাটা করে দেশে ফেরার সময় আবারো বেনাপোল চেকপোস্ট কাস্টমস সদস্যরা যাত্রীদের কাছ থেকে মাথা পিছু ২’শ টাকা থেকে শুরু করে ৫’শ টাকা পর্যন্ত আদায় করছে।
এসময় কেউ এই অবৈধ টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে বিভিন্ন অযুহাতে তাদের ঘন্টার পর ঘন্টা দাড় করিয়ে রাখা হয়। এদের হাত থেকে রোগী, শিক্ষক, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী কেউই রেহায় পায়না।
এছাড়া ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস কর্তৃপক্ষের নিজস্ব কিছু ও বহিরাগত দালাল কর্তৃক ট্রাক্স ফাঁকির ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটছে। এরা সহজ সরল যাত্রীদের কাজ করিয়ে দেওয়ার নাম করে ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে ভারতে পার করে দি”েছ। এতে সরকার লাখ লাখ টাকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হ”েছ।
এদিকে, মঙ্গলবার সকালে শার্শা উপজেলা চেয়ারম্যানের ১১জন মেহমান ভারতে যাওয়ার সময় কবলে পড়ে ইমিগ্রেশন পুলিশের এসআই রবিউলের। তিনি পাসপোর্ট প্রতি ২’শ টাকা চাঁদা দাবি করলে প্রতিবাদ করা হয়। এসময় এসআই রবিউল বলেন, কারো পরিচয় দিয়ে লাভ নেই। অনেক টাকা খরচ করে বেনাপোল ইমিগ্রেশনে এসেছি। এখানে লাইনে পাসপোর্টে সীল মারালে ১’শ টাকা এবং লাইন ছাড়া সীল মারলে ২’শ টাকা দিতে হবে। নইলে অণ্য ডেস্কে দেখেন। পরে সাংবাদিক কিংবা ঢাকা ক্লাবের সদস্য পরিচয় দিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি তার কাছ থেকে। বিষয়টি ইমিগ্রেশনের সেকেন্ড অফিসার জাকিরের কাছে জানালে তিনি পাসপোর্টগুলিতে সীল মেরে দেন। পাসপোর্ট নং গউ. তঅঐওউ ঝওউউওকণ-ইঅ০৩৩৮১৫৪, জঙতও ঝওউউওকণ-ইঅ০৩৩৮১৫৫, গউ. জঊঙঅঘ-ইঅ০৩৩৫৯২১, গঝঞ. অণঅঝঐঅ ঝওউউওকও-ইঅ০৩৩৬৭১১, জঅইঊণঅ ঝটখঞঅঘঅ-ইই০০৮৪৬৬৫ সহ ১১টি পাসপোর্ট।
বিভিন্ন মহল থেকে এসব অভিযোগ আসার পরে গত সপ্তাহে ইমিগ্রেশন ভবনে ব্যবসায়ী, কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন প্রতিনিধিরা বৈঠক করেন। এসময় ইমিগ্রেশন পুলিশ ও কাস্টমস কর্মকর্তারা তাদের সদস্য কর্তৃক যাত্রী হয়রানির বিষয়টি অস্বিকার করেন। এক পর্যায়ে সর্বসম্মতি ক্রমে ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস ভবনের চারিপাশে সিসি ক্যামেরা লাগানোর সিদ্ধান্ত হয়। যা চলমান। কি¯‘ বহিরাগত পাসপোর্ট দালালদের আনাগোনা কমলেও ভিতরে থাকা পাসপোর্ট দালালদের কর্মরিতি থামেনি।
এ বিষয়ে ইমিগ্রেশন ওসি মনিরুজ্জামান বলেন, ভিতরে থাকা এরা দালাল হলেও তারা আমাদের অনেক উপকারে আসে। এরা আমাদের সহযোগি হিসাবে দীর্ঘদিন ধরে এখানে কাজ করছে। এজন্য এদেরকে তাড়ানো সম্ভব নয়। তবে তাদেরকে কোন বেতন দেওয়া হয়কিনা জানতে চাইলে তিান জানান, তাদের বেতন তারা পাসপোর্ট যাত্রীদের কাছ থেকে তৈরি করে নেয়। এজন্য তাদেরকে আলাদা বেতন দিতে হয়না।