চট্টগ্রামে ১৪ দলের একাংশের মেয়র প্রার্থী হিসেবে সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর নাম ঘোষণায় খোদ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগে অন্তর্দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে। এমন প্রার্থিতা ঘোষণায় ১৪-দলীয় জোট প্রধান ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি ‘আস্থাহীনতার প্রকাশ’ বলে অভিযোগ করছেন আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের অন্য শীর্ষ নেতারা। সম্ভাব্য অপর প্রার্থীদের মধ্যেও দেখা দিয়েছে তীব্র অসন্তোষ। এমন অবস্থায় আজ (মঙ্গলবার) বিকালে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা ডেকেছেন সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী। জেলা পরিষদ মিলনায়তনে এ সভায় শেষ পর্যন্ত মেয়র প্রার্থিতা বিষয়ে নতুন কোনো সিদ্ধান্ত আসছে কিনা তা নিয়ে উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে দলের কর্মী সমর্থকদের মাঝে। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আগামীকাল ১১ মার্চ চট্টগ্রামে ১৪ দলের পূর্ব নির্ধারিত পদযাত্রার প্রস্তুতি বিষয়ে মূলত আলোচনা হবে বর্ধিত সভায়। বর্ধিত সভার আগে দুপুরে নিজের চশমাহিলের বাসভবনে মেজবানের আয়োজন করেছেন মহিউদ্দিন চৌধুরী। ১৪ দলের একাংশের রবিবারের সভায় আসন্ন চসিক নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হিসেবে মহিউদ্দিন চৌধুরীর নাম ঘোষণা করায় বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছেন জেলার শীর্ষ আওয়ামী লীগ নেতারাও।
ওই দিনই রাতে মহিউদ্দিন চৌধুরীর চশমাহিলের বাসভবনে উত্তর-দক্ষিণ ও মহানগরীর শাখা সমন্বয় সভা ডাকা হলেও জেলার দায়িত্বশীল শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন না। শেষ পর্যন্ত সভাটি আর হয়নি। এদিকে, মেয়র হিসেবে অপর সম্ভাব্য প্রার্থী নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন ১৪ দলের একাংশের এমন প্রার্থী ঘোষণায় বিস্ময় প্রকাশ করে বলেছেন, আওয়ামী লীগ মহানগরী সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আমিও ১৪ দলের একজন। কিন্তু ওই সভার বিষয়ে আমাকে বলাও হয়নি। তাছাড়া ১৪ দলের প্রধান হলেন আমাদের নেত্রী, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। নেত্রীর সিদ্ধান্তই আমাদের কাছে চূড়ান্ত। অপর সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আলোচিত সাবেক এমপি নুরুল ইসলাম বিএসসি বলেছেন, আঞ্চলিকভাবে এমন করে মেয়র প্রার্থিতা ঘোষণার কোনো সুযোগ নেই। প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তই আমরা মেনে নেব। অপর সম্ভাব্য প্রার্থী ও নগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ, চউক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম ১৪ দলের একাংশের এই মনোনয়ন প্রসঙ্গে বলেন, নেত্রীর ওপর বিশ্বাস থাকলে উনারা এমন করতেন না। নগরীর একটি রেস্টুরেন্টে রবিবার ১৪ দলের সভায় উপস্থিত আওয়ামী লীগের ২ সহ-সভাপতি প্রস্তাবটি মেনে নেননি। তারা দলের নির্বাহী কমিটির সভায় এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার তাগিদ দেন। সভায় ১৪ দলের মধ্যে আওয়ামী লীগের একাংশসহ সাত দলের প্রতিনিধি ছিলেন। ছিলেন না মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। অপর দিকে, মহানগর আওয়ামী লীগের আজকের বর্ধিত সভায় উপস্থিত হওয়ার জন্য গতকাল এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পত্র মারফত বা মুঠোফোনেও আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বলে জানান অর্থ সম্পাদক আবদুচ ছালাম।