নগরায়ন, জনসংখ্যাবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে খাদ্য উৎপাদন, জ্বালানি এবং শিল্প-কলকারখানার জন্য পানির চাহিদা বাড়তে থাকায় বিশ্বে আগামী ১৫ বছরে অর্থাৎ, ২০৩০ সালের মধ্যে পানির যোগানে ৪০ শতাংশ ঘাটতি দেখা দেবে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড ওয়াটার ডেভেলপমেন্ট রিপোর্ট-২০১৫ তে বলা হয়েছে ২০০০ সালের হিসেব অনুযায়ী, ভারতে নলকূপের সংখ্যা প্রায় এক কোটি ৯০ লাখ। যেখানে ১৯৬০ সালে যে সংখ্যা ১০ লাখেরও কম ছিল।
প্রযুক্তির এই বিপ্লব দেশটির দারিদ্র্য বিমোচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। কিন্তু কৃষিক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়নের উল্টোপিঠে মহারাষ্ট্র ও রাজেস্থানের মত কয়েকটি রাজ্যে বিশুদ্ধ পানির তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে।
‘টেকসই পৃথিবীর জন্য পানি’ শিরোনামে ওই প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, বাড়তে থাকা জনসংখ্যা, কৃষি ও জ্বালানি বিভাগের জন্য আরো অনেক পানি চাই।
এখন থেকে ২০৫০ সাল পর্যন্ত বিশ্বের খাদ্য চাহিদা পূরণ করতে কৃষিক্ষেত্রে আরও ৬০ শতাংশ উৎপাদন বাড়াতে হবে। ফলে পানির উৎসের ওপর চাপ আরও বাড়বে।
ওদিকে, ২০০০ থেকে ২০৫০ সালের মধ্যে শিল্পে পানির চাহিদা ৪০০ শতাংশ বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর ফলে ২০৫০ সাল নাগাদ পানির চাহিদা আরও ৫৫ শতাংশ বাড়বে। অথচ এরই মধ্যে ভূঅভ্যন্তরের ২০ শতাংশ পানি ব্যবহার করা হয়ে গেছে।
নিবিড় সেচ, অনিয়ন্ত্রিতভাবে পানিতে কীটনাশক ও রাসায়নিক মিশে যাওয়া, দূষিত পানি পুনরায় বিশুদ্ধকরণ পদ্ধতির অনুপস্থিতি ভয়ঙ্কর ভবিষ্যতের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলেও ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
জাতিসংঘের ‘ওয়ার্ল্ড ওয়াটার ডেভেলপমেন্ট’ বিভাগের প্রধান মাইকেল জারাউড জনগণকে হিসাব করে পানি ব্যবহার করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “যেহেতু ঝুঁকি অনেক বেশি তাই (পানি রক্ষায়) আমাদের এক হয়ে কাজ করতে হবে। আমরা বসে থাকতে পারি না আমাদের এখনই কাজ শুরু করেতে হবে।”
“টেকসই উন্নয়নের জন্য পানি এবং স্বাস্থ্যব্যবস্থার গুরুত্ব আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। এছাড়া, এগুলোর সঙ্গে জলবায়ুর পরিবর্তন, কৃষি, খাদ্য নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য, জ্বালানি, সাম্যতা, লিঙ্গ এবং শিক্ষা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এখন আমাদের জরুরি ভিত্তিতে এ বিষয়ে বিচার-বিবেচনা, পর্যবেক্ষণ ও বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিতে হবে।”