আরিফ উদ্দিন, গাইবান্ধা থেকেঃ গবেষণা ও প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ গাইবান্ধার পলাশবাড়ীর কৃতি সন্তান ড. মোহাম্মাদ হোসেন মন্ডল-এর হাতে গত বুধবার সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে স্বাধীনতা পদক ২০১৫ তুলে দেন প্রানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সূত্রে জানা যায়, গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলার কিশোরগাড়ী ইউনিয়নের টেংরা গ্রামে মোহাম্মাদ হোসেন মণ্ডল ১৯৩৬ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মরহুম গরিবুল্লা মন্ডল। তিনি ঢাকাস্থ তদানীন্তন শেরেবাংলা কৃষি কলেজ থেকে ১৯৬০ সালে বি.এজি পরীক্ষায় প্রথম স্থান এবং ১৯৬২ সালে এম.এজিতে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান পেয়ে ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি ফুলব্রাইট স্কলারশীপ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় ইউনিভার্সিটি থেকে ক্রপফিজিওলজিতে ১৯৬৭ সালে এম.এস এবং ১৯৭২ সালে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ১৯৭২-৭৭ মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের আইওয়া স্টেট ইউনিভার্সিটি ও মিনিসোটা ইউনিভার্সিটি থেকে পোস্ট ডক্টরাল ডিগ্রি লাভ করেন।
ড. মোহাম্মাদ হোসেন মন্ডল বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক (গবেষণা) পদে ৮ বছর এবং মহাপরিচালক হিসেবে ৭ বছর দায়িত্ব পালন করেন। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিভিন্ন জার্নালে এযাবৎ তাঁর ৫০টি গবেষণামূলক নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। তিনি গম, ভুট্টা, তৈল-বীজ, ডাল, আলু, মিষ্টি-আলু, তুলা, সবজি এবং মশলা জাতীয় ফসলের বেশকিছু নতুন জাত উদ্ভাবনের কাজ তত্ত্বাবধান করেন। কৃষি গবেষণার মাধ্যমে উদ্ভাবিত প্রযুক্তি কৃষকদের মাঝে দ্রুত প্রসারের লক্ষ্যে তিনি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও গবেষকদের মধ্যে কার্যকর প্রাতিষ্ঠানিক সংযোগ স্থাপন করেন। এ ছাড়া তিনি কৃষি খাতে রিসার্চ রিভিউ সিস্টেম প্রবর্তন করেন, যা কৃষি গবেষণার উৎকর্ষ সাধনে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে।
ড. মোহাম্মাদ হোসেন মন্ডল দেশে ও বিদেশে কৃষি সম্পর্কিত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে দীর্ঘদিন যাবৎ যুক্ত রয়েছেন। তিনি ১৯৭৫-৮১ সালে আমেরিকান সোসাইটি অব এগ্রোনমি ও ক্রপ সায়েন্স সোসাইটি অব আমেরিকা, ১৯৮৮-৯০ মেয়াদে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিড পলিসি ফরমেশন কমিটি এবং ১৯৯০-৯৩ মেয়াদে টেকনিক্যাল এডভাইজরি কমিটি, সিজিপিআরটি সেন্টার, ইন্দোনেশিয়ার সদস্য ছিলেন। তিনি ১৯৮৬-৯২ মেয়াদে ময়মনসিংহস্থ বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট-সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া তিনি কৃষিবিদ ইন্সটিটিউশন বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশ কৃষিতত্ত্ব সমিতির আজীবন সদস্য। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি যুক্তরাষ্ট্রে অধ্যায়নরত অবস্থায় বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা ফাউন্ডেশনের শিকাগো শাখার সক্রিয় সদস্য ছিলেন।