চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ বাকিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কামরুল ইসলামের (৩০) বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ঐ শিক্ষককে বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে আটকে রাখে পরে হাজীগঞ্জ থানা পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির তিন শিক্ষার্থীকে শিক্ষক কামরুল ইসলাম একাধিকবার যৌন নির্যাতন করেন। বিদ্যালয় ছুটির পরে কাজের কথা বলে শ্রেণি কক্ষে তিনি (কামরুল ইসলাম) শিক্ষার্থীদের সাথে এ কাজ করেছেন। গত সোমবার ও গতকাল বুধবার সকাল এগারোটায় দুই জন শিক্ষার্থীর মা এ বিষয়ে বিদ্যালয়ে এসে শিক্ষকদের কাছে মৌখিক অভিযোগ করেন। এর কয়েক দিন আগে আরেকজন অভিভাবক এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক লক্ষ্মণ পালের কাছে মৌখিক অভিযোগ করেছেন। কিন্তু কোন প্রতিকার পাননি। পরে বিষয়টি স্থানীয়ভাবে জানাজানি হলে এলাকাবাসী বিদ্যালয়ে এসে ঘটনার বিচার দাবি করেন। পওে তারা ঐ শিক্ষককে বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে আটক করে রাখেন। বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক লক্ষ্মণ পাল বলেন, প্রধান শিক্ষক না থাকায় আমি বিষয়টি কাউকে জানাইনি। এ ঘটনা এ রকম চরম রূপ ধারণ করবে বুঝতে পারিনি। প্রধান শিক্ষক রওশন আরা জানান, আমি গত রোববার বিদ্যালয়ে যোগদান করেছি। সকালে একজন শিক্ষার্থীর মা এসে আমাকে ঘটনাটি জানান। আমি তাকে বিচারের আশ্বাস দিয়ে জরুরি কাজে শিক্ষা কার্যালয়ে চলে যাই। সেখান থেকে এসে বিদ্যালয়ে অভিভাবকদের সমাগম দেখতে পাই।
রওশন আরার স্বামী ও শ্রীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু বক্কর জানান, ঘটনা সত্য । এলাকাবাসী বার বার ঐ শিক্ষককে বের করে নিতে এসেছে । আমি তাদের বিচারের আশ্বাস দিয়ে এ পর্যন্ত রক্ষা করেছি।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল আউয়াল বলেন, আমি ঘটনাটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি আর তার বিষয়ে কালকে (আজ বৃহস্পতিবার ) সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
ভুক্তভোগী একজন শিক্ষার্থীর অভিভাবক জানান, মেয়ের মা ঘটনাটি আজ সকাল বেলায় আমাকে জানিয়েছেন। আমি এর বিচারের জন্য চেয়ারম্যান সাহেবের কাছে গিয়েছি।
হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ শাহ আলম জানান, ঐ শিক্ষককে জনরোষের হাত থেকে বাঁচাতে আমরা উদ্ধার করে এনেছি। যদি ভুক্তভোগী পরিবার বা বিদ্যালয়ের প্রধান অভিযোগ দেন তাহলে আমরা তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসবো।
ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান জানান, আমরা আজ এ বিষয়ে সমাধানের চেষ্টা করবো।
অভিযুক্ত শিক্ষক কামরুল ইসলাম জানান, আমার কিছু দোষ-ক্রুটি আছে। তবে যৌন হয়রানির অভিযোগটি সঠিক নয়। শিক্ষকের এহেন কর্মকান্ডে এলাকাবাসী ফুসে উঠে।