নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বেনাপোল পুলিশকে মারধর, সরকারি কর্তব্য কাজে বাধা প্রদান, কাস্টমস কর্মকর্তাকে প্রাণ নাশের হুমকি, বোমা বিষ্ফোরণ ও ইমিগ্রেশন ভবন ভাংচুরের ঘটনায় পোর্ট থানায় পৃথক ভাবে তিনটি মামলা হয়েছে।রবিবার, ঘটনার দিবাগত রাতে (১০ মে) তদন্ত শেষে ইমিগ্রেশন পুলিশের এসআই জাকির হোসাইন বাদী হয়ে রাশেদসহ ১৭ জনের নামে এবং অজ্ঞাত আরো অনেকের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা করেন।মামলা নং-২৯, ধারা- ১৪৩/১৮৬/৩৫৩/৩৩২/৩৩৩/৪৪৮/৪২৭/৫০৬/৩৪ পিসি ও মামলা নং ৩০, ধারা ১৯০৮ সালের বিস্ফোরক উপাদানবলী আইনের ৩/৪/৫।অপরদিকে, বেনাপোল কাস্টমস হাউসের রাজস্ব কর্মকর্তা হাসানুজ্জাান বাদী হয়ে একই রাতে উল্লেখিত ১৭ জনসহ অজ্ঞাত আরো অনেকের বিরুদ্ধে পৃথক আরেকটি মামলা করেছেন। মামলা নং ৩১, ধারা- ১৯৭৪ সালের স্পেশাল পাওয়ারস এ্যাক্ট এর ১৫(১)/১৬(২)।মামলাগুলির আসামীরা হলেন, গ্রেফতারকৃত- বেনাপোল পোর্ট থানার দিঘিরপাড় গ্রামের মৃত আফতাব আলীর ছেলে রাশেদ আলী(৩৮), আঃ সাত্তারের ছেলে ইদ্রিস আলী, ড্রাইভার আনছার গাজীর ছেলে আমিন উদ্দিন গাজী(৩১), বড় আঁচড়া গ্রামের আঃরহিমের ছেলে মনিরুজ্জামান মনি(২৫), সাদিপুর গ্রামের মোস্তফা বিশ্বাষের ছেলে রাসেল বিশ্বাষ(২৫), নড়াইল জেলার কালিয়া থানা নয়াগ্রামের “বর্তমান যশোরের কোতয়ালী থানার কাজিপাড়া এলাকার রেজার বাড়ির ভাড়াটিয়া আসলাম হোসেনের স্ত্রী সাহেদা বেগম(৩৭), তার স্বামী ও মৃত মকসুদ আহম্মদের ছেলে আসলাম হোসাইন(৪০)।পলাতক আসামীরা হলেন, বেনাপোল পোর্ট থানার কাগজপুকুর এলাকার মৃত সলেমানের ছেলে সাইফুল্লাহ(২৯), মসলেম আলীর ছেলে পিন্টু(২৭), আঃ কাদেরের ছেলে রহিম(৪৫), গয়ড়া এলাকার আঃওহাবের ছেলে লিয়াকত আলী(৩৫), দিঘিরপাড় এলাকার কালু মিয়ার ছেলে রুপচান(৩০), ভবারবেড় এলাকার আবুল মোল্লার ছেলে সাহাজউদ্দিন(৩৬), দিঘিরপাড় এলাকার আঃ রহমানের ছেলে রায়হান(২৮), ভবারবেড় এলাকার ইসমাইলের ছেলে আকতার(২৯), আঃমান্নানের ছেলে হিরা(২৯), কাগমারি এলাকার মফিজুরের ভাইপো হাফিজুর(৩০) সহ অজ্ঞাত আরো অনেকে।বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের এসআই জাকির হোসেন ও কাস্টমস হাউসের রাজস্ব কর্মকর্তা হাসানুজ্জামানের এজাহার থেকে জানাযায়, গত শুক্রবার (৮মে) শাহিদা নামের এক পাসপোর্ট যাত্রী (উল্লেখিত ৬ নং আসামী) ৩ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকার ভারতীয় শাড়ী-থ্রিপিছ নিয়ে আসায় বৈধ কোন কাগজপত্র না পেয়ে আইসিপি বিজিবি ক্যাম্পের সদস্যরা মালামালগুলি আটক করে আইন মোতাবেক কাসমস কর্তৃপক্ষের নিকট জমা দেন। তার জের ধরে রবিবার(১০মে) দুপুর পৌনে ২টার সময় রাশেদ বাহিনীর উল্লেখিত আসামীরা বে-আইনি ভাবে মারাত্বক অস্ত্র-সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে কাস্টমস অফিসে প্রবেশ করে। এ সময় তারা কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা হাসানুজ্জামানকে উক্ত মালামালগুলি ফেরত দেওয়ার জন্য ভয়ভীতি ও প্রাণ নাশের হুমকি প্রদান করেন। তখন কাস্টমস কর্তৃপক্ষের ফোনালাপের মাধ্যমে পুলিশ ঘটনাস্থলে চলে আসে। বে-আইনি কাজে বাধা প্রদান করলে আসামীরা রাশেদের নেতৃত্বে পুলিশকে আক্রমন করিয়া কনস্টেবল সাখাওয়াত হোসেন, মেজবাউল আলম, আসমত, এখলাছুর রহমান ও হিঙ্গুল মিয়াকে মারপিট করিয়া গুরুতর জখম, কাস্টমস অফিসের কাঁচের দরজা, ওয়ালে সংযুক্ত গ্লাস পিটায়ে ভাংচুর করে। হুকুমে আসামীরা তাহাদের হাতে থাকা বোমা নিক্ষেপ করিয়া ত্রাস সৃষ্টি করে। এ সময় পুলিশ জীবন ও সরকারি সম্পদ রক্ষার স্বার্থে শর্টগান দিয়ে ১৫ রাউন্ড গুলি ও ৫ রাউন্ড টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। আসামীরা ছত্রভঙ্গ হয়েগেলে ঘটনাস্থল থেকে ইদ্রিস আলী ও আমিন উদ্দিন গাজীকে ২টি বোমাসহ এবং অন্যান্য আসামীদের হাতে লাঠি ও লোহার রডসহ সঙ্গীয় অফিসার ফোর্সদের সহায়তায় আটক করা হয়েছে। পুলিশ কর্তৃক এজাহার ভুক্ত ২৯ নং মামলাটির তদন্ত করছেন পোর্ট থানার এসআই দীন মোহাম্মদ, ৩০ নং মামলাটি এসআই মনিরুল ইসলাম ও কাস্টমসের ৩১ নং মামলাটি তদন্ত করছেন এসআই মফিজুর রহমান।বেনাপোল পোর্ট থানার অফিসার ইনচার্য(ওসি) অপূর্ব হাসান মামলা তিনটির বিষয় নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আসামীরা যতো বড়ো শক্তিশালী নেটওর্য়াকের লোক হোক তাদেরকে আইনের আদালতে বিচার করানো হবে। পলাতক আসামীদের আটকের অভিযান অব্যহত আছে। বেনাপোলে পর্যাপ্ত পরিমানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ টহল জোরদার রাখা হয়েছে।
বেনাপোল প্রতিনিধি (যশোর)ঃ রুবেল