নিজস্ব প্রতিনিধিঃ নড়াইলে গাছের সাথে বেঁধে নির্যাতনকারী ববিতার স্বামী সেনা সদস্য শফিকুল শেখকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।সোমবার (১১ মে) সন্ধ্যায় সিলেটের শাহ পরান (রাঃ) পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে।লোহাগড়া থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ লুৎফর রহমান জানান, ইতোমধ্যে এ ঘটনায় ৩ জনকে আটক করা হয়েছে। মামলার আসামি হাসান শেখ, ছালাম শেখ,জিরিন আক্তার, নান্নু শেখ ও আজিজুর রহমান আরজু কে গ্রেফতারে জোর তৎপরতা চলছে।৫ মে পুলিশ ববিতার অন্যতম নির্যাতনকারী কালাম শেখ, ৯ মে ভোরে শফিকুলের চাচা হিরু শেখ কে এবং ১১ মে সন্ধ্যায় প্রধান আসামী সেনা সদস্য শফিকুল কে লোহাগড়া থানার এসআই নজরুল সিলেটের শাহ পরান (রাঃ) পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এসআই আলমগীরের সহযোগিতায় ওই এলাকা থেকে গ্রেফতার করেন।নড়াইলের পুলিশ সুপার সরদার রকিবুল ইসলাম শফিকুলকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, লোহাগড়া হাসপাতালে ববিতার নিরাপত্তায় পুলিশ স্কোয়ার্ড মোতায়েন করা হয়েছে।নড়াইলের সিভিল সার্জন সুব্রত কুমার সাহা বলেন, লোহাগড়া হাসপাতালে ববিতার পূর্ণ চিকিৎসা চলছে।ববিতা জানান, এখনো আমার কোমরে, হাতের দুটি ডানায়, দুই পায়ে ব্যাথা।জ্বর আসছে।
নড়াইলের জেলা প্রশাসক আঃ গাফ্ফার খান ও সিভিল সার্জন সুব্রত কুমার সাহা রোববার রাতে ববিতাকে দেখতে লোহাগড়া হাসপাতালে আসেন।সোমবার সকালে লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মোকতার হোসেন, ওসি শেখ লুৎফর রহমান ও উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মৌসুমীরাণী মজুমদার হাসপাতালে এসে ববিতার খোঁজ খবর নেন।
উলে¬খ্য যে, কাশিপুর ইউপির শালবরাত গ্রামের ছালাম শেখের ছেলে সেনাসদস্য শফিকুল শেখের (২৬) সাথে পার্শ্ববর্তী এড়েন্দা গ্রামের ইসমাইল মোল্যার মেয়ে নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজের স্নাতক প্রথম বর্ষের ছাত্রী (প্রাইভেট) ববিতার মোবাইল ফোনে প্রেমজ সম্পর্ক গড়ে ওঠে।প্রেমজ সম্পর্কের জের ধরে ২০১৩ সালের ২১ নভেম্বর ইসলামী শরিয়ত মোতাবেকগোপনে তাদের বিয়ে হয়(কাবিন রেজিস্ট্রি তারিখ ২২ নভেম্বর)। একপর্যায়ে ববিতার স্বামী সিলেট সেনানীবাসের ৩৮ বেঙ্গলে কর্মরত সেনাসদস্য শফিকুল শেখ ও তার শ্বাশুড়ি তাকে ঘরে তুলে নেবে না বলে তালবাহানা শুরু করে। পরে শফিকুল ববিতার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। ববিতা এ নিয়ে হতাশ হয়ে পড়েন।শফিকুল গত মাসে ছুঁটিতে বাড়ি এলে ববিতা খবর পেয়ে শ্বশুর বাড়িতে (গত ৩০ এপ্রিল) উপস্থিত হয়ে স্ত্রীর মর্যাদা দাবি করেন। যৌতুক না দিয়ে স্ত্রীর মর্যাদা চাওয়ায় ৩০ এপ্রিল সকাল ৭ টার দিকে (নির্যাতনের ঘটনার দিন) ক্ষিপ্ত হয়ে ববিতার স্বামী, শ্বাশুড়ি, শ্বশুরবাড়ির আত্মীয় স্বজন ববিতাকে শ্বশুর বাড়ির পার্শ্ববর্তী রাস্তার পাশের মেহগনি গাছের সাথে বেঁধে মারপিট করে।মারপিটে ববিতা জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। খবর পেয়ে লোহাগড়া থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠায়।নির্যাতনের ঘটনায় ববিতার মা খাদিজা বেগম বাদি হয়ে জামাই শফিকুল শেখ, হাসান শেখ, ছালাম শেখ, জিরিন আক্তার, কালাম শেখ, আজিজুর রহমান আরজু, নান্নু শেখসহ ৭ জনকে আসামী করে ৫ মে লোহাগড়া থানায় নারী ওশিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন।
নড়াইল প্রতিনিধিঃ হিমেল মোল্যা