,সাভারে ধসে পড়া রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানার বিরুদ্ধে নির্ধারিত সময়ে সম্পদ বিবরণী দাখিল না করার অভিযোগে ‘নন-সাবমিশন’ মামলা দায়েরের অনুমোদন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদক কার্যালয়ে সোমবার কমিশন এ মামলার অনুমোদন দেয়। শিগগিরই মামলাটি দায়ের করা হবে। দুদক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
দুদক সূত্র জানায়, সোহেল রানা কারাগারে থাকায় জেল সুপারের মাধ্যমে তার সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ জারি করে দুদক। নির্ধারিত সময়ে তিনি সম্পদ বিবরণী দাখিল না করে তার স্ত্রীর মাধ্যমে সময় বৃদ্ধির আবেদন করেন। এ আবেদন গ্রহণযোগ্য নয় বলে কমিশনের আইন শাখা থেকে মতামত দেওয়া হয়। সে অনুসারে কমিশনের চেয়ারম্যান মো. বদিউজ্জামান এ মামলা দায়েরের অনুমোদন দেন।
সূত্র আরও জানায়, রানা প্লাজা ধসের পর পরই সোহেল রানার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানে নামে দুদক। ২০১৩ সালের ২৫ এপ্রিল সোহেল রানার বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের ঘোষণা দেয় কমিশন। অভিযোগ অনুসন্ধানে ২৮ এপ্রিল দুই সদস্যের একটি অনুসন্ধান টিম গঠন করা হয়।
৩০ এপ্রিল কমিশনের অনুসন্ধান টিম ঢাকার সাভারের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালায়। ওই বছরের ১৫ মে অনুসন্ধান টিম সোহেল রানার সম্পদ বিবরণী নোটিশ জারির সুপারিশ করে। তবে সোহেল রানা কারাগারে থাকায় সৃষ্ট আইনি জটিলতায় টানা দুই বছর পর চলতি বছরের ২ এপ্রিল কাশিমপুর কারাগার কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সম্পদ বিবরণীর নোটিশ জারি করা হয়।
অনুসন্ধান প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, ১০ থেকে ১২ বছরের মধ্যে সাভারে রানা দুটি বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণ করেন। একটি হলো ৫০ শতাংশ জমির উপর নির্মিত ধসে যাওয়া ৯তলা ভবন রানাপ্লাজা, আরেকটি আট তলা রানা টাওয়ার (প্রতি ফ্লোর ৪০০০ বর্গফুট)। সাভারে সোহেল রানার পাঁচ তলা আবাসিক ভবন এবং মানিকগঞ্জের সিংগাইর থানার জয়মন্ডপ গ্রামের বাড়িতে একটি দোতলা ভবন রয়েছে।
এ ছাড়া রানা ব্রিকস ও এম এ কে ব্রিকস নামে দুটি ব্রিক ফিল্ডও রয়েছে। সাভার পৌর এলাকা ও পৌর এলাকার বাইরে রানা ও তার বাবা-মা’র নামে প্রচুর সম্পদ রয়েছে। সাভার বাসস্ট্যান্ডে রানার নামে রানা অয়েল মিলও রয়েছে।
অস্থাবর সম্পদ হিসেবে ট্রাক, প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাস রয়েছে। এ ছাড়া এক্সিম ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, ডাচ-বাংলা ব্যাংক ও ব্র্যাক ব্যাংকে পাঁচটি ঋণ হিসাবসহ ২৩টি ব্যাংক হিসাব রয়েছে। এর মধ্যে রানার নামে ৩৫ লাখ টাকার একটি এফডিআরও রয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের ২৯ এপ্রিল সোহেল রানাকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর থেকে তিনি কারাগারে আছেন। এদিকে চলতি বছরের ১২ এপ্রিল প্রায় ১৭ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সোহেল রানার বাবা আব্দুল খালেক ও মা মর্জিনা বেগমের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা করে দুদক।
দুদকের উপ-পরিচালক এস এম মফিদুল ইসলাম ও উপ-পরিচালক মো. মাহবুবুল আলম এ সব অভিযোগ অনুসন্ধান করেন।