ধামরাইয়ে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রের বাড়ীতে অভিযান চালিয়ে হেরোইন পাওয়া গেছে বলে অভিযোগ ছাত্র সুমন আটক করে। পরে ছাত্রের পরিবারের কাছ থেকে টাকা নিয়ে ছেড়ে দেয় ডিবি পুলিশ । ঘটনা জানাজানি হলে আজ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ডিবি পুলিশ সদস্যদের ধামরাই থানায় হাজির করেন ওই ভুক্তভোগী পরিবারের সামনে। পরে ভুক্তভোগীদের কাছ ঘটনার বিস্তারিত লিখিত নেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীম।
এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবার থেকে জানা গেছে, উপজেলার গোয়ালদী গ্রামের নজরুল ইসলামের বাড়ীতে শনিবার (১৬মে) একটি মাইক্রোতে করে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে কয়েক ব্যক্তি অভিযান চালান। এসময় নজরুল ইসলামের ছেলে সাভার গণবিশ্ববিদ্যালয়ের এলএলবি (অনার্স) তৃতীয় বর্ষের ছাত্র সুমনের থাকার ঘরে তল্লাশি চালিয়ে বিছানায় গাঁজা পাওয়া গেছে বলে সুমনকে আটক করে গাড়ীতে তোলার চেষ্টা করেন। এসময় স্থানীয় ইউপি সদস্য বাচ্চু মিয়া ও একই গ্রামের আবদুল হালিম তাৎক্ষণিকভাবে ওই বাড়ীতে উপস্থিত হন। তাদের মধ্যস্থ্যতায় ২৬ হাজার টাকা বিনিময়ে সুমনকে ছেড়ে দেয় ডিবি পুলিশ পরিচয়দানকারীরা। সুমনকনের পরিবারকে (ডিবি পুলিশ পরিচয়দানকারী) ০১৭১৩৬৪৬১২৮ ও ০১৯৮১৮৭৯৯৯৫ দুটি মুঠোফোন নম্বর দিয়ে আসেন।
সুমন জানায়, একজনের গায়ে ডিবি লেখা জ্যাকেট, একজনের কোমরে রিভলবার এবং অন্যরা সিভিল পোষাকে মোট পাঁচসদস্যের ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে তার থাকার ঘরটি তল্লাশি চালায়। এসময় ডিবি পুলিশ তার থাকার ঘরের ঘাটের নীচে সয়েল পেপার পায়। ওই সয়েল পেপার তার চাচাত ভাই (সদ্য বিদেশ ফেরত) সৌদি থেকে এনেছে। তখন ডিবি পুলিশ বলতে থাকেন হেরোইন খাইতে সয়েল পেপার লাগে এবং ওর কাছে ২০০ পিছ বিচি (ইয়ারা)আছে। এ কথা বলেই তাকে আটক করে।তবে সুমনের দাবী তার ঘরে কোন হেরোইন বা গাঁজা ছিল না।
ঘটনা জানাজানি হলে শনিবার রাতেই ইউপি সদস্য বাচ্চু মিয়া সুমনের মার কাছে ৬ হাজার টাকা ফেরত দিতে চাইলেও সুমনের মা তা নেননি। পরে সুমনের চাচা আবুল হোসেন ওরফে মেহেরের কাছে ৬ হাজার টাকা ফেরত দেন বাচ্চু মিয়া।
এ ঘটনা জানাজানি হলে পুলিশ প্রশাসনে তোলপাড় পড়ে যায়। এতে আজ ঢাকা জেলা (উত্তর) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীম পাঁচ ডিবি পুলিশকে ওই ছাত্র সুমন ও তার মা আছমার উপস্থিতে ধামরাই থানায় হাজির করেন। পরে ওই ছাত্রের মা আছমা আক্তার ও ছাত্র সুমন ডিবি পুলিশের এস আই জহিরুল ইসলামসহ চারজনকে সনাক্ত করেন।
এবিষয়ে ধামরাই থানার অফিসার ইনচার্জ ফিরোজ তালুকদার জানান, ভুক্তভোগীরা ডিবি পুলিশ সদস্যদের সনাক্ত করেছে। ডিবি পুলিশ কি কি ঘটিয়েছে এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্যারের কাছে একটি লিখিত দিয়েছেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশরাফুল আজীম বলেন, প্রাথমিক তদন্তে পাওয়া গেছে ঢাকা জেলা ডিবি পুলিশের একটি দল সুমনের বাড়ীতে অভিযান চালিয়েছে। আর ওই দলের নেতৃত্বে ছিলেন এস আই জহিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, তদন্তকালে প্রাপ্ত তথ্য প্রতিবেদন পুলিশ সুপারকে দেওয়া হবে। তদন্তের ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।