বরগুনা জেলার আমতলী ও তালতলী উপজেলার আরপাঙ্গাসিয়া ও পঁচাকোড়ালিয়া ইউনিয়নের সাথে সংযোগ সেতু একটি। সেই সেতুটির আবার বেহাল দশা। ঝুকিপূর্ণ এই সেতুটি পার হতে প্রতিদিন চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে দুই ইউনিয়নের প্রায় বিশ হাজার মানুষকে। সেতুটির পাশেই পঁচাকোড়ালিয়া বাজার, ইউনিয়ন ভূমি অফিস, মসজিদ, মাদ্রাসা। সেতুটির দু’পাড়ে প্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের নয়টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
স্থানীয় চরকগাছিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রবীণ শিক্ষক বলহরি অধিকারী বলেন, ‘বয়স হয়ে গেছে বাবা, আর পারি না। দুই মাইল পথ কোন মতে হেঁটে আসতে পারলেও এ সেতুটি আর পার হতে পারি না। দাঁড়িয়ে থাকি, কেউ হাত ধরে পার করে দিলে তবেই পার হই। প্রবীণ শিক্ষক ও মুক্তিযোদ্ধা বলহরি অধিকারীর মত একই সমস্যা স্থানীয় অন্যান্য প্রবীণদের ক্ষেত্রে ও।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সেতুটির উপরিভাগের সিøপারগুলো ভেঙে এমন অবস্থা যে পুরুষেরা কোনমতে পার হতে পারলেও নারী ও শিশুদের পক্ষে তা কিছুতেই পার হওয়া সম্ভব নয়। তাছাড়া দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় পণ্য বহন করে নেয়া কোনো ভাবেই সম্ভব নয়। দীর্ঘদিনে সেতুটির সংস্কার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে স্থানীয়রা। দিনের পর দিন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে ধন্না দিয়েও কোন প্রতিকার পায়নি তারা। স্থানীয় অধিবাসী গফুর মিয়া বলেন, ‘এর চেয়ে খেওয়াই ভাল আছিল। বছরে একবার ধান দিতাম আর সারা বছর পার অইতাম নিশ্চিন্তে। এখন ছোড ছোড পোলাপাইন স্কুলে যাইতে পারে না। বাপ-মায়ের খাড়াইয়া থাহন লাগে। বাপ-মায় কাম হরবে নাকি পোলাপানের লইগ্গা খাড়াইয়া থাকপে?’
পঁচাকোড়ালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নজির হোসেন কালু পাটোয়ারী জানান, জেলা পরিষদ থেকে ওই সেতুটির দু’একবার সংস্কার করা হয়েছিল। তবে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বেশি মানুষ চলাচলের কারণে তা দু’দিনেই আবার ভেঙ্গে যায়।
বরগুনার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, লোক সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় সেতুটির ব্যস্ততা বেড়েছে। ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বেশি লোক হওয়ায় সেতুটি দ্রুতই ভেঙ্গে যাচ্ছে। তিনি শিগগিরই সেতুটি পরিদর্শন করে জেলা পরিষদের সাথে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন।