আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক সুলতানা কামাল বলেছেন, আমাদের পরিস্কার দাবি মেয়েদের বিয়ের বয়স ন্যূনতম ১৮ এবং ছেলেদের বিয়ের বয়স ২১ রাখতে হবে। এই বিষয়ে সরকারের কোনো প্রকার তাল-বাহানা আমরা মেনে নেবোনা। প্রয়োজনে আমরা কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো।
সোমবার জাতীয় প্রেসক্লবের কনফারেন্স লাউঞ্জে সামাজিক প্রতিরোধ কমিটি আয়োজিত ‘বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন ২০১৪’-এ মেয়েদের বিয়ের বয়স ১৮ বহাল রাখার দাবিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘১৬ বছরে এখন পর্যন্ত কোনো মেয়ে স্কুল জীবন শেষ করতে পারে না। সেখানে এই আইন বাস্তবায়িত হলে কোনো মেয়ে কলেজে পর্যন্তও যেতে পারবে না।’
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন নারী প্রগতি সংঘের নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবির।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে নারীর বিয়ের বয়স ১৮ বছর থেকে বাড়ানো উচিত এমন অভিমত ব্যক্ত করে রোকেয়া কবির বলেন, ‘বিয়ের বয়স বাড়ানো হলে বাংলাদেশে যে হারে জনসংখ্যা বাড়েছে তা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। আর সেখানে বিয়ের বয়স ১৬ করা আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত ছাড়া আর কিছুই নয়।’
তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘আগামী ২০১৫ পরবর্তী জাতীয় ও বৈশ্বিক পরিকল্পনায় যখন নারী-পুরুষের সমতা, নারীর মানবাধিকার ও নারীর প্রতি সহিংসতা নির্মূলকরণ কেন্দ্রবিন্দুতে রাখার প্রত্যয় নিয়ে জাতিসংঘ ও সদস্য রাষ্ট্রসমূহ কাজ শুরু করেছে, তখন সরকারের এই অদূরদর্শী অবিবেচনাপ্রসূত সিন্ধান্ত আমাদের পিছিয়ে দিচ্ছে।’
তিনি মন্তব্য বরেন, ‘এখন যদি বিয়ের বয়স ১৬ বছর করে আইন করা হয়, তবে তা হবে আইন করে শিশু ধর্ষণের সামিল।’
যারা এই আইন করতে যাচ্ছে তারা কি তাদের সন্তানদের ১৬ বছরে বিয়ে দেবে এমন প্রশ্ন রেখে গণস্বাক্ষারতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, ‘আমি বুঝতে পারছি না কারা এই আইন পাশ করতে চাচ্ছে, তারা কাদের স্বার্থ হাসিল করতে চাচ্ছে। এই আইন করার অর্থ হচ্ছে বাল্য বিবাহকে উৎসাহীত করা।’
বর্তমানে দেশে বিয়ের বয়স ১৮ বছর। আইন থাকা সত্তেও ১৫ বছরেই অধিকাংশ মেয়েকে বিবাহ দেয়া হয়। সেখানে আইন করে যদি ১৬ বছর করা হয়, তাহলে ১৩ বছরের শিশুকন্যাদের বিয়ে দেয়া হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি আয়শা খানম, সহ-সভাপতি রেখা চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের ড. হামিদা হোসেন, কেয়ার বাংলাদেশের হোমায়রা আজিজ প্রমুখ।