ভারতীয় ক্রিকেটে বোর্ডের প্রধান ছিলেন বেশ কিছু দিন। এখন পালন করছেন আইসিসি চেয়ারম্যানের পদ। এন শ্রীনিবাসনের কাছে সাংবাদিকেরা জানতে চাইতেই পারেন, র্যাঙ্কিংয়ের দুই নম্বরে থাকা ভারত কেন এভাবে সিরিজ হারল বাংলাদেশের কাছে। ‘জানি না’ বলে প্রশ্নটার উত্তর এড়িয়ে গেলেন শ্রীনি। তবে উত্তর না দিয়েও দিলেন। প্রশ্নটাকে পুঁজি করে তির ছুড়লেন তাঁর প্রতিপক্ষ শিবিরে। আরও স্পষ্ট করে বললে বিসিসিআই সচিব অনুরাগ ঠাকুরের দিকে।
অনুরাগের ওপর শ্রীনির রাগ অনেক পুরোনো। শ্রীনি যখন দোর্দণ্ড প্রতাপে ভারতীয় ক্রিকেট শাসন করছেন, সেই সময় তাঁর সিংহাসনে প্রথম ধাক্কাটি অনুরাগই দিয়েছিলেন। অনুরাগ ২০১৩ সালে প্রথম প্রশ্ন তোলেন, চেন্নাই সুপার কিংসের সঙ্গে শ্রীনির জামাতা মায়াপ্পনের সংশ্লিষ্টতা নিয়ে। বিসিসিআইয়ের এ ব্যাপারে দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেন। আইপিএল কেলেঙ্কারি ফাঁস হওয়া, মায়াপ্পন গ্রেপ্তার হওয়ার পরও শ্রীনি যখন সিংহাসন আঁকড়ে ধরে রেখেছিলেন, অনুরাগ আর তাঁর অনুগতরা শ্রীনির সঙ্গে নিরাপদ দূরত্ব তৈরি করেন। শ্রীনির পায়ের নিচ থেকে ধীরে ধীরে মাটি সরে যায়।
ভারতীয় ক্রিকেটের মসনদে ফিরে আসার পর জগমোহন ডালমিয়া অনুরাগকে নিজের সবচেয়ে কাছের মিত্র বানান। ডালমিয়া আর অনুরাগের যৌথ প্রচেষ্টাতেই বিসিসিআই থেকে শ্রীনির ছায়া ধীরে ধীরে সরে যেতে থাকে। সেই শ্রীনি মুছে যেতে যেতে ফের দৃশ্যপটে দৃশ্যমান। তাঁকে হটিয়ে দেওয়ার ডালমিয়াদের ছক ব্যর্থ করে আবারও ভারতীয় ক্রিকেট প্রশাসনে ফিরে এসেছেন দেশটির ক্ষমতাধর এই ব্যবসায়ী। এ মাসের শুরুতে তামিল নাড়ু ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি পদে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন। ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান হওয়ার ফলে শ্রীনি এখন বিসিসিআইর যেকোনো সিদ্ধান্তে ভোট দেবার ক্ষমতাও পেয়েছেন।
স্বাভাবিকভাবে বাংলাদেশের বিপক্ষে ভারতের সিরিজ হারের পূর্ণ সদ্ব্যবহার করতে পিছপা হননি শ্রীনি। এ ব্যাপারে সাংবাদিকেরা তাঁর মন্তব্য জানতে চাইলে বলেছেন, ‘আমি তো আর বিসিসিআই প্রেসিডেন্টের পদে নেই। আমাদের একজন খুবই দক্ষ সচিব আছেন—অনুরাগ ঠাকুর। তাঁকে গিয়ে এই প্রশ্নটা করুন।’