এক মাসের কঠোর সিয়াম সাধনার পর উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে সারাদেশে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর েউদযাপিত হচ্ছে। হিংসা বিদ্বেষ ভুলে ভাতৃত্বের বন্ধনে মেতেছে সারাদেশ।
রাষ্ট্রপ্রধান আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশবাসীকে ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন এবং একই সাথে সবাইকে সম্প্রীতির আহ্বান জানিয়েছেন। শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ, বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াসহ সব রাজনৈতিক দলের নেতারা।
শুক্রবার সন্ধ্যায় শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা যাওয়ায় এবার ২৯ রোজা শেষে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় এই উৎসব উদযাপিত হচ্ছে সারাদেশে।
শনিবার সকালে সারা দেশে শুরু হয়েছে ঈদ জামাত। রাজধানীতে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মধ্যেই দলে দলে মানুষ ছুটছেন বিভিন্ন ঈদগাহ ময়দান ও মসজিদে।
বরাবরের মতো এবারও রাজধানীতে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে, সকাল সাড়ে ৮টায়। বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে সকাল ৭টায় শুরু হয়েছে ঈদ জামাত। সেখানে ঈদের পাঁচটি জামাত হবে।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি, মন্ত্রিসভার সদস্য, সংসদ সদস্য, রাজনীতিবিদসহ সব শ্রেণি পেশার মানুষ জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে ঈদের প্রধান জামাতে অংশ নিয়েছেন।
প্রতিবারের মতো এবারও সকাল ১০টায় দেশের বৃহত্তম ঈদ জামাত হবে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে। দূর-দূরান্ত থেকে মুসল্লিদের আসার সুবিধার জন্য ‘শোলাকিয়া স্পেশাল’ নামে দুটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বঙ্গভবনে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে সবার সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।
দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেন, শান্তিপূর্ণ ও সৌহার্দ্যময় সমাজগঠনে ঈদুল ফিতরের আবেদন চিরন্তন। ঈদুল ফিতরের শিক্ষা আমাদের সুন্দর ও সমৃদ্ধ সমাজগঠনে উদ্বুদ্ধ করুক- এ প্রত্যাশা করি।
জাতিকে ‘ঈদ মোবারক’ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে বলেন, ঈদ শান্তি, সহমর্মিতা ও ভ্রাতৃত্ববোধের অনুপম শিক্ষা দেয়। সাম্য, মৈত্রী ও সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ করে সকল মানুষকে।
মধ্যপ্রাচ্যে বৃহস্পতিবার শাওয়ালের চাঁদ দেখা যাওয়ায় শুক্রবার সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, জর্ডান, মিশর, ইয়েমেন ও লিবিয়ায় ঈদ উদযাপিত হয়েছে। ঈদ উদযাপিত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রেও। সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে বাংলাদেশেও বিভিন্ন জেলার শতাধিক গ্রামে শুক্রবার ঈদ উদযাপিত হয়েছে।
ঈদ উপলক্ষে শনিবার দেশের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল, কারাগার, শিশু পরিবার, ছোটমনি নিবাস, সামাজিক প্রতিবন্ধী কেন্দ্র, সরকারি আশ্রয় কেন্দ্র, শিশু বিকাশ কেন্দ্র, সেফ হোমস, ভবঘুরে কল্যাণ কেন্দ্র ও দুস্থ কল্যাণ কেন্দ্রে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হবে। বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেসরকারি টেলিভিশনগুলো ঈদের আগে-পরে কয়েক দিন ধরে বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করছে। সংবাদপত্রগুলো শুক্রবার প্রকাশ করেছে বিশেষ ক্রোড়পত্র।
জাতীয় পর্যায়ের সঙ্গে সমন্বয় রেখে স্থানীয় পর্যায়ে সিটি করপোরেশন, জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগেও দেশব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।