বাংলাদেশ থেকে নির্মাণকর্মী নেবে জাপান। এসএসসি পাস হলেই চলবে। নির্মাণ ও অবকাঠামোগত বিষয়ে জ্ঞান থাকলেই মিলতে পারে জাপানের টিকিট।
২০২০ সালে গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক ও প্যারা অলিম্পিকের আসর বসছে জাপানে। এ উপলক্ষে দেশটিতে নতুন নতুন স্থাপনা গড়তে ও অবকাঠামোগত উন্নয়নে লাগবে অনেক নির্মাণ শ্রমিক। কাজের সুযোগ পাবেন বাংলাদেশিরাও। বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নেওয়ার বিষয়ে জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) সঙ্গে চুক্তি করেছে জাপানের আন্তর্জাতিক জনশক্তি উন্নয়ন সংস্থা আইএম জাপান।
যোগ্যতা
বিএমইটি জানায়, এসএসসি পাস হলেই চলবে। অগ্রাধিকার পাবে কারিগরি বিভাগের প্রার্থী। অবকাঠামো বা নির্মাণসংশ্লিষ্ট বিষয়ে কাজ জানাশোনা কিংবা ভোকেশনাল ও কারিগরি প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশিক্ষণ নেওয়া থাকলেও অগ্রাধিকার পাওয়া যাবে। জাপানি ভাষা ও সংস্কৃতি বিষয়ে জ্ঞান বিবেচিত হবে বাড়তি যোগ্যতা হিসেবে। বয়স হতে হবে ২০ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে।
কতজন যেতে পারবে
নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের চাহিদার বিপরীতে কর্মীসংখ্যা নির্ধারণ করা হবে। প্রাথমিকভাবে প্রায় দুই হাজার কর্মী জাপানে কাজে যাওয়ার সুযোগ পাবে। এক বছর শিক্ষানবিশ হিসেবে কাজ করতে হবে। সংশ্লিষ্ট কাজে দক্ষতা অর্জন করতে পারলে আরো দুই বছর কাজ করার সুযোগ পাওয়া যাবে। সরাসরি সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে কর্মী বাছাই করা হবে। শারীরিক ফিটনেস বা মেডিক্যাল টেস্টে উত্তীর্ণ হওয়ার পর নির্মাণ ও অবকাঠামোগত বিষয়ে জ্ঞান থাকলেই মিলতে পারে জাপানের টিকিট।
সব খরচ দেবে জাপান
নির্বাচিতদের জাপানে যাওয়ার জন্য কোনো টাকাই গুনতে হবে না। সব খরচ বহন করবে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ। নির্বাচিতদের চার মাস জাপানি ভাষা ও সংস্কৃতি শেখানো হবে। প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে বিনা মূল্যে। তবে প্রশিক্ষণ চলাকালে নিজ খরচে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
বেতন ও অন্যান্য সুবিধা
এক বছরের শিক্ষানবিশকালে মাসিক বেতন পড়বে বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৬০ হাজার। এক বছর পর দক্ষতা প্রমাণ করতে পারলে বেতন বাড়বে। তখন দক্ষ কর্মী হিসেবে বেতন দেওয়া হবে জাপানের শ্রম আইন অনুসারে। শ্রম আইন অনুসারে দিনে আট ঘণ্টা কাজ করতে হবে। অতিরিক্ত কাজের জন্য শ্রমঘণ্টা হিসেবে দেওয়া হয় বাড়তি টাকা। কর্মীদের আবাসন সুবিধা দেবে জাপানের নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ। সে ক্ষেত্রে আবাসন ভাড়া গুনতে হবে ও নিজ উদ্যোগে খাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
যাবে অদক্ষ কর্মী, আসবে উদ্যোক্তা হয়ে
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, একজন কর্মী জাপানে যাবে অদক্ষ কর্মী হিসেবে; কিন্তু কাজ শেষে ফেরত আসবে দক্ষ কর্মী বা উদ্যোক্তা হয়ে। জাপান সরকারের অভিবাসন নীতি অনুসারে একজন কর্মীকে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে উঠতে সহযোগিতা করা হয়। এক বছর কাজ করে চলে এলে প্রত্যেক কর্মী পাবে দুই লাখ ইয়েন। আর পুরো তিন বছর কাজ শেষে ফিরে আসার সময় দেওয়া হবে ছয় লাখ ইয়েন, আসার পর যাতে নিজ দেশে ছোট বা মাঝারি ধরনের ব্যবসা বা সৃজনশীল উদ্যোগের মাধ্যমে আরো মানুষের কাজের সুযোগ তৈরি করতে পারে।
চোখ রাখুন পত্রিকায়
কর্মী বাছাইয়ের জন্য খুব শিগগির সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি দেবে আইএম জাপান। বিজ্ঞপ্তিতে প্রার্থী বাছাইয়ের স্থান ও তারিখ জানিয়ে দেওয়া হবে। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর বিএমইটি কার্যালয় থেকে জানা যাবে দরকারি তথ্য। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, প্রবাসী কল্যাণ ভবনে শিগগিরই অফিস খুলবে আইএম জাপান। সেখান থেকেও জানা যাবে কর্মী নির্বাচন, বাছাই ও এ-সংশ্লিষ্ট সব তথ্য। প্রতারণা এড়াতে কারো সঙ্গে কোনো প্রকার আর্থিক লেনদেন না করার পরামর্শ দিয়েছে বিএমইটি।