নিহত ব্লগার নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায়ের জিডি না নেওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন খিলগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান।
নিজের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে গেলে পুলিশ তা নেয়নি বলে নিহত হওয়ার আগে ফেসবুকে ব্লগার নীলাদ্রি স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন।
শনিবার এ বিষয়ে জানতে চাইলে খিলগাঁও থানার ওসি বলেন, নীলাদ্রি কোন থানায় গিয়েছিলেন সেটা তাঁর স্ট্যাটাসে উল্লেখ নেই। তারপরও তিনি ১৫ মে থানায় কর্তব্যরত দুই উপপরিদর্শককে (এসআই) এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করেছেন। এর মধ্যে সকালে থাকা এসআই রফিকুল ও বিকেলে থাকা এসআই ফখরুল ইসলাম এ বিষয়ে কিছু জানেন না বলে তাঁকে জানিয়েছেন।
ওসি আরও বলেন, আমার থানাতে প্রতিদিন হুমকির ঘটনায় একাধিক জিডি হয়। তাই জিডি না নেওয়ার কোনো কারণ দেখছি না। কর্তব্যরত কর্মকর্তার কাছে সহায়তা না পেলে বিষয়টি ওসি হিসেবে তাকে জানানো যেত বলে তিনি মন্তব্য করেন। ওসি বলেন, ১৫ মে খুব আগের ঘটনা না। আমার কাছে এ ধরনের কেউ আসেনি। এটা দুর্ভাগ্যজনক।
ওসি বলেন, তারা আলামত সংগ্রহ করেছেন। আলামত পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য আদালতের অনুমতি চাওয়া হয়েছে। মামলার প্রাথমিক তদন্ত খিলগাঁও থানার পুলিশ করছে। পাশাপাশি র্যাব, ডিবি, সিআইডিও তদন্ত করছে বলে তিনি জানান।
এদিকে যে ভবনে নীলাদ্রি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, পূর্ব গোড়ানের সেই ১৬৭ নম্বর ভবনের বাসিন্দারা আতঙ্কে আছেন। পাঁচ তলায় নিহত নীলাদ্রির পাশের ফ্ল্যাটের বাসিন্দা ফিরোজা বলেন, তাদের দুই বাসার জন্য একটি রান্না ঘর। ঘটনার সময় তিনি বাসায় ছিলেন না। তবে দুই মেয়ে ছিলেন। পাশের ফ্ল্যাট থেকে চিৎকার শুনে তার বড় মেয়ে বের হয়ে মূল ফটক দিয়ে ঢোকার চেষ্টা করে। তবে পিস্তল ঠেকিয়ে তাকে নিজেদের ফ্ল্যাটে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এর পর তার মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে।
বাড়িওয়ালা শামসুল কবির বলেছেন, পুলিশ ও গণমাধ্যমকর্মী ছাড়া কাউকে এ ভবনে ঢুকতে না দেওয়ার জন্য পুলিশ তাকে বলে গেছে।
গতকাল শুক্রবার দুপুরে নিজের ভাড়া বাসায় খুন হন নীলাদ্রি। গতকাল সন্ধ্যায় এক ই-মেইল বার্তায় হত্যার দায় স্বীকার করেছে আনসার আল ইসলাম নামের একটি সংগঠন। এ নিয়ে চলতি বছরের সাত মাসে চারজন লেখক ও ব্লগার খুন হলেন। এর আগে ২০১৩ সালে খুন করা হয় ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দারকে। নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায় (২৭) গণজাগরণ মঞ্চের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। গতকাল বেলা সোয়া একটার দিকে চার ব্যক্তি এই বাসার ভেতরে ঢুকেই নীলাদ্রিকে কুপিয়ে হত্যা করে।