সিলেটে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসুচিতে চড়াও হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে শাখা ছাত্রলীগের কর্মীরা।
আন্দোলনরত অন্তত সাতজন শিক্ষক সরকারসমর্থক এই ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীদের মারধরের শিকার হয়েছেন বলে সংবাদমাধ্যমে দাবি করেছেন ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ শিক্ষক পরিষদ’র আহ্বায়ক অধ্যাপক সৈয়দ সামসুল ইসলাম।
উপাচার্য আমিনুল হকের বিরুদ্ধে অসদাচরণ, দুর্নীতি ও নানা অনিয়মের অভিযোগ এনে গত ১৩ এপ্রিল থেকে আন্দোলন করে আসা শিক্ষকদের রোববার সকাল ৯টা থেকে ৫টা পর্যন্ত প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা ছিল। একই দিনে উপাচার্য বিকাল ৩টায় অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের বৈঠক ডাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়।
উপাচার্যের সমর্থনে বিশ্ববিদ্যালয়ে শাখা ছাত্রলীগের কর্মীরা ভোর থেকে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেয়। এর পরে সকাল সাড়ে সাতটার দিকে আন্দোলনরত শিক্ষকরা সেখানে অবস্থান নেয়।
পরে সকাল সাড়ে আটটার দিকে উপাচার্য তার কার্যালয়ে প্রবেশ করতে গেলে শিক্ষকদের উপর চড়াও হয় ছাত্রলীগের কর্মীরা। সে সময় কয়েকদফা ধস্তাধস্তির পর শিক্ষকদের ব্যানার কেড়ে নেয় ছাত্রলীগ কর্মীরা। সে সসময় সুযোগ পেয়ে নিজ কার্যালয়ে প্রবেশ করেন উপাচার্য।
জালালাবাদ থানার ওসি আক্তার হোসেন দুই পক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানালেও ছাত্রলীগ কর্মীদের কাছে পাত্তা পাননি তিনি।
আন্দোলনরত শিক্ষকদের নেতা অধ্যাপক সৈয়দ সামসুল ইসলাম সংবাদমাধ্যমে অভিযোগ করেন, ‘ উপাচার্য ছাত্রদেরকে আমাদের ওপর লেলিয়ে দিয়েছে।’
তিনি নিজে এবং অধ্যাপক ইয়াসমিন হক ছাড়াও মারধরের শিকার শিক্ষকদের মধ্যে রয়েছেন শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউনূস, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবদুল গণি, অধ্যাপক এ ন ক সমাদ্দার, মোস্তফা কামাল মাসুদ, সহযোগী অধ্যাপক মো. ফারুক উদ্দিন।
শিক্ষকদের মারধরের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি পার্থ দাবি করেছেন, ‘বাধা দেওয়ার বিষয়টি সাংগঠনিক কোনো সিদ্ধান্ত নয়। ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তে এতে অংশ নিয়েছে কর্মীরা।’
প্রসঙ্গত, উপাচার্য আমিনুল হকের বিরুদ্ধে অসদাচরণ, দুর্নীতি ও নানা অনিয়মের অভিযোগ এনে গত ১৩ এপ্রিল থেকে আন্দোলন শুরু করে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ শিক্ষক ফোরাম। পরে ভিসির প্রত্যাহারের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৭টি পদ থেকে লেখক অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালসহ ৩৫ জন শিক্ষক একযোগে পদত্যাগ করেন। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে কয়েকদফা বৈঠক হলেও কোন সমাধান আসেনি।