সুবল চন্দ্র দাস, কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ) ঃ কিশোরগঞ্জে নিত্য ব্যবহার্য কাঁচা পণ্যের বাজারে এখন আগুন। প্রতিটি পণ্যই এখন দ্বিগুণ বা তারও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে স্বল্প ও নির্দিষ্ট আয়ের পরিবারগুলোর যেন নাভিঃশ্বাস উঠেছে। কিশোরগঞ্জের বিভিন্ন বাজারে খোঁজ নিয়ে এমন চিত্রই পাওয়া গেছে। কিশোরগঞ্জ একটি অত্যন্ত উর্বর জেলা। এ জেলায় যেমন অফুরন্ত ধান ফলে, তেমনি মাছসহ বিভিন্ন জাতের শাকসবজি এবং মরিচেরও পর্যাপ্ত ফলন হয়। যে কারণে এ জেলা থেকে এসব পণ্য রাজধানীসহ দেশের বড় বড় জেলায় রপ্তানি হয়। কিন্তু এই জেলাতেই এখন এসব পণ্যের আকাশছোঁয়া দাম। শহরের বড় বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, কাঁচা মরিচ পাকারি দোকানে মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি। আর পাশেই খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা কেজি। অথচ এক মাস আগেও কাঁচা মরিচ ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে। টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা কেজি। বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি। করলা বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি। আর পটল, শশা, ঢেঁড়স বরবটি, মূলাসহ অন্যান্য তরকারি কয়েকদিন আগেও বিক্রি হয়েছে ৩০ টাকা কেজি। কিন্তু এখন বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি। কাকরোল আর চিচিংগা বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি। ঝিঙা বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা কেজি। ১৫ টাকার ঁেপপে বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা কেজি। পঞ্চমুখি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা আর মুখি ৩০ টাকা কেজি। হল্যান্ডের আলু বা ডায়মন্ড আলু বিক্রি হচ্ছে ২৪ টাকা আর স্থানীয় জাতের গোল আলু বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা কেজি। মাঝারি আকারের ডাটা বিক্রি হচ্ছে ১৫টাকা হালি। পুঁইশাক বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা কেজি। কচুর লতি বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজি। পেঁয়াজের দাম ৮০ টাকা থেকে ১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা কেজি। এস সময় গ্রীষ্ম এবং বর্ষাকালে সরবরাহের মারাত্মক ঘাটতির কারণে বাজারে এসব কাঁচা পণ্যের দাম আকাশচুম্বি হতো। কারণ শীতকালে নানা জাতের শাকসবজি উৎপাদিত হলেও গ্রীষ্ম ও বর্ষাকালে তরিতরকারির জাত কমে যেত। কিন্তু কৃষি বিজ্ঞানীদের বদৌলতে শীতকালীন বহু শাকসবজি এখন গ্রীষ্ম এবং বর্ষাকালেও আবাদ করা যাচ্ছে। সেই কারণে বাজারে তরিতরকারির খুব একটা কমতি নেই। তারপরও সরবরাহের ঘাটতির দোহাই দিয়ে ব্যবসায়ীরা শাকসবজির দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। মাছের দামও কিছুটা বেড়েছে। তবে তরিতরকারির তুলনায় মাছের দাম কম বেড়েছে বলে বাজার ঘুরে জানা গেছে। গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকা কেজি, খাশির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকা কেজি। আর ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা কেজি। মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ৩৬ টাকা হালি, আর হাঁসের ডিম বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা হালি। এসব নিত্যপণ্যের দাম অবিশ্বাস্য হারে বেড়ে যাওয়ায় প্রায় প্রতিটি পরিবারেই আয়-ব্যয়ের হিসাব ওলটপালট হয়ে গেছে বলে ক্রেতারা মনে করেন।