আরিফ উদ্দিন, গাইবান্ধা থেকেঃ গাইবান্ধার পলাশবাড়ী থানা একটি জামায়াত-শিবির অধ্যুষিত এলাকা হওয়ায় সেখানে পুলিশের বিশেষ সাঁড়াশি অভিযানে অব্যাহত থাকায় চিহ্নিত প্রায় ৫ শতাধিক আসামীকে আটক করা হয়েছে। অন্যান্য অপরাধীরা বর্তমানে এলাকা ছাড়া হয়ে আত্মগোপন করেছে। এতে গোটা থানা এলাকা এখন সন্ত্রাস ও নাশকতামুক্ত নিরাপদ ঘাঁটিতে পরিণত হয়েছে। এমন দাবি করেছেন থানার বর্তমান অফিসার ইনচার্জ মজিবুর রহমান। সূত্রের মতে, উত্তরজনপদের বৃহৎ ঘাঁটি পলাশবাড়ী থানায় জামায়াত-শিবিরের সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও নাশকতার অভয়দূর্গ গড়ে উঠেছিল। এছাড়াও চুরি, ডাকাতি, খুন, ছিনতাই, মাদকপাচার ও চোরাচালানের বিশেষ এই ঘাঁটি এখন শান্ত ও নিরাপদ। জাতীয় মহাসড়কের উপর অবস্থিত এই থানার অতীত ঐতিহ্য কম নয়। এখানে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন ও স্বাধীন পলাশবাড়ী আন্দোলনের পতাকা উড়ানোর নজির আছে। মুক্তিযুদ্ধের অপরাজিত ঘাঁটি নামেও পরিচিত। সেই ঐতিহ্যবাহী থানায় স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি জামায়াত-শিবিরের ছত্রছাঁয়ায় সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও নাশকতা, অগ্নিসংযোগ ছাড়াও খুন, ডাকাতি, ছিনতাই, চোরাচালান, মাদকপাচার, অপহরণ, ধর্ষণ, ইভটিংজিং, বাল্যবিবাহ, লাইসেন্স বিহীন মোটরসাইকেল, বিভিন্ন মামলার ওয়ারেন্টভূক্ত আসামীদের গোপন আস্তানা, সড়ক পরিবহনে প্রকাশ্য ডাকাতির অভয় রাজত্বে থানা পুলিশের বিশেষ সাঁড়াশি অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় ৫ শতাধিক চিহ্নিত গ্রেফতার এবং পলাতক অপরাধীচক্র লাপাত্তা হয়েছে। পালানোর অপেক্ষায় আত্মগোপন থাকা অনেকেই গ্রেফতার হয়েছে। অন্যান্য দাগী আসামীকেও আটকের চেষ্টা চলছে। কিন্তু অভিযান আতংকে এরা এলাকা ছাড়া হয়েছে মাত্র। অফিসার ইনচার্জ মজিবুর রহমান আরো উল্লেখ করেন, তিনি থানায় যোগদানের পর থেকেই প্রকৃত অপরাধীদের বিরুদ্ধে পুলিশের বিশেষ অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। এতে আইন শৃঙ্খলার উন্নতি হয়েছে। বিগত দিনে বিএনপি-জামায়াতের নৈরাজ্য, নাশকতা, অবরোধ, বৃক্ষবিধন, গাড়ী পোড়ানো, বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, হামলা, সংঘর্ষ, পরিবহন যাত্রীদের মালামাল লুন্ঠন, ভাংচুর, রংপুর-ঢাকাগামী মহাসড়কে ও গাইবান্ধা-পলাশবাড়ী সড়কে নিত্য নৈমিত্তিক ডাকাতি, যাত্রা, জুয়া, হাউজির প্রসার, বাল্যবিবাহ, ইভটিজিং, অপহরন, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, লুটপাট, ছিনতাই প্রভূতি এখন বন্ধ। থানা পুলিশের আন্তরিকতায় আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়ন ও স্থিতিশীল সম্ভব হয়েছে। এই সাফল্য অর্জনের পেছনে রয়েছে উপজেলার স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মুক্তিযোদ্ধা, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় সভা, জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং নাগরিক ঐক্য গড়ে তোলা। যা অতীতে কেউ করতে পারেনি। অপরদিকে, পবিত্র ঈদ-উল-আযহাকে সামনে রেখে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ও নৈরাজ্য-নাশকতা ঠেকাতে বিশেষ সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত থাকায় হাট-বাজার, গ্রামাঞ্চল, শহর-বন্দর এলাকায় জানমালের নিরাপত্তা অনেকটা নিশ্চিত হয়েছে। অপরাধমুক্ত হয়েছে জাতীয় মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়ক যানজট মুক্ত করতে ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি টহল পুলিশের তৎপরতাও বাড়ানো হয়েছে