আসন্ন ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে বরিশাল-ঢাকা নৌপথে আজ থেকে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন সংস্থার (বিআইডব্লিউটিসি) ঈদ স্পেসাল সার্ভিস।
সরকারি এ সংস্থার ৭টি জাহাজের মাধ্যমে বিশেষ এ যাত্রী সেবা কার্যক্রম চলবে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।
বরিশাল বিআইডব্লিউটিসি’র সহকারী মহা-ব্যবস্থাপক সৈয়দ আবুল কালাম আজাদ সংবাদমাধ্যমকে জানান, শিডিউল অনুযায়ী এবারের স্পেশাল সার্ভিসে পিএস টার্ন, পিএস মাহসুদ, পিএস অস্ট্রিচ, পিএস লেপচা ও এমভি মধুমতি এবং এমভি বাঙালি জাহাজ যাত্রীসেবায় নিয়োজিত থাকবে। আর পিএস শেলাকে চাঁদপুরে স্ট্যান্ডবাই রাখা হবে। প্রয়োজন অনুযায়ী এটিকে স্পেশাল সার্ভিসে যুক্ত করা হবে।
তিনি জানান, আজ ঢাকা থেকে সংস্থার ৩টি জাহাজ ঈদে ঘরে ফেরা যাত্রীদের নিয়ে বরিশাল ও চাঁদপুরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে। এর মধ্যে বিকেল ৫টায় পিএস শেলা চাঁদপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হবে। আর এমভি মধুমতি সন্ধ্যা ৬টায় ও পিএস টার্ন ৭টায় বরিশালের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসবে।
বিআইডব্লিউটিএ সূত্র জানায়, সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে যাত্রী পরিবহনে আগের চেয়ে এবার বাড়তি লঞ্চ ও জাহাজের সংখ্যা অনেক বেশি রয়েছে। ফলে ঢাকা-বরিশাল নৌ-রুটের যাত্রীদের এবার ভোগান্তি অনেকটাই লাঘব হবে। পাশাপাশি বরিশাল নৌ-বন্দরসহ আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
এছাড়াও স্পেশাল সার্ভিস চলাকালে এবারই সর্বপ্রথম নৌপথে দুর্ঘটনা ঘটলে যাত্রীদের তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ধারের জন্য ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের একটি ডুবুরি দল এবং অসুস্থ্য যাত্রীদের দ্রুত চিকিৎসার জন্য একটি মেডিকেল টিম নৌ-বন্দরে উপস্থিত থাকবে।
বরিশাল বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের উপ-পরিচালক আবুল বাশার মজুমদার জানান, প্রতিবছর বরিশাল-ঢাকা রুটে বেসরকারি ১১ থেকে ১৫টি লঞ্চ স্পেশাল বা ঈদ সার্ভিসে যুক্ত হয়ে থাকে। আবার ঈদের সময় অন্যান্য রুটের আরো লঞ্চ প্রতিবছরই স্পেশাল সার্ভিসে যুক্ত হয়ে থাকে। এছাড়া এবার গ্রিন লাইনের দু’টি ডে সার্ভিস লঞ্চ থাকছে। সবমিলিয়ে এবছর আগের চেয়ে বেশি লঞ্চ যাত্রী পরিবহনে নিয়োজিত থাকবে। ফলে অন্যান্যবারের তুলনায় এবার ঈদ যাত্রীদের ভোগান্তি অনেকটা লাঘব হবে।
অন্যদিকে এবার বাড়তি লঞ্চ আর বাড়তি যাত্রীর কথা চিন্তা করে নৌ-বন্দর ও আশপাশের এলাকায় নৌ ও সড়ক পথে যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে। যাত্রীদের জন্য টার্মিনাল ছাড়াও বন্দর ভবনের সামনে প্যান্ডেলের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। নৌ-বন্দর ও লঞ্চে চুরি-ছিনতাই ও অজ্ঞান পার্টির তৎপরতারোধে আনসার, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ও পুলিশসহ সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কাজ করবেন। যাত্রীদের তথ্য সেবাসহ বিভিন্ন সেবা প্রদানের জন্য তথ্যসেবা কেন্দ্র ও রোভার স্কাউটের সদস্যরা কাজ করবেন।
এছাড়া পুরো এলাকায় সার্বক্ষণিক নজরদারি রাখতে জেলা প্রশাসন ও নৌ-বন্দর কর্তৃপক্ষের সমন্বয়ে মনিটরিং ব্যবস্থা চালু থাকবে। অতিরিক্ত যাত্রী বহনসহ অন্যান্য অপরাধ দমনে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হবে।
জেলা প্রশাসক ড. গাজী মো. সাইফুজ্জামান বলেন, ‘আসন্ন ঈদ-উল আযহায় সড়ক ও নৌপথের যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইতোমধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তাদের নিয়ে সভা হয়েছে। ঈদে ঘরমুখো মানুষদের সব ধরনের সেবা দিতে প্রশাসন সর্বোচ্চ সচেষ্ট রয়েছে বলে তিনি জানান।’