পরপর দুই দফা আন্দোলন ব্যর্থ হবার পর দল পুর্নগঠনের ঘোষণা দিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার একমাসেরও বেশি সময় ধরে লন্ডন সফর রাজনৈতিক মহলকে আগ্রহী করে তুলেছে । তিনি কবে দেশে ফিরবেন আর ফিরে দল পুর্নগঠনে কী পদক্ষেপ নেবেন তা গভীর আগ্রহের বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে রাজনৈতিক অঙ্গনে। চিকিৎসার উদ্দেশ্যে তিনি লন্ডন যান গেল মাসের ১৫ তারিখে। এক মাসেরও বেশি সময় সেখানে অবস্থান করে চোখ ও হাঁটুর চিকিৎসা ছাড়াও রাজনৈতিক বিভিন্ন কর্মসূচীতেও যোগ দিচ্ছেন তিনি। এ মাসের ২৭ তারিখে লন্ডনে একটি সমাবেশ অনুষ্ঠানের কথাও শোনা যাচ্ছে। বেগম খালেদা জিয়ার বড় সন্তান ও দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডনে অবস্থান করছেন প্রায় সাতবছর যাবত। ধারণা করা হচ্ছে দল পুর্নগঠনসহ রাজনৈতিক বিভিন্ন বিষয়ে তার সঙ্গে পরামর্শ করছেন বেগম জিয়া। যা দেশের রাজনীতিতে কোনঠাসা হয়ে পড়া বিএনপিকে ঘুরে দাঁড়াতে সাহায্য করবে। তবে সরকারি দলের পক্ষ থেকে তার লন্ডন অবস্থানকে ব্যাখ্যা করা হয়েছে বিভিন্নভাবে। সাম্প্রতিক সময়ে দেশে দুই বিদেশি হত্যাকাণ্ডের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে বেগম জিয়াকে অভিযুক্ত করে বক্তব্য রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া কয়েকজন মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারাও ওই ঘটনায় তাকে অভিযুক্ত করে বক্তব্য রেখেছেন। যদিও বিএনপির তরফ থেকে বরাবরই এসব অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এরকম পরিস্থিতিতে কবে দেশে ফিরবেন খালেদা জিয়া সে প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে রাজনৈতিক অঙ্গনে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকের বরাতে কোন কোন সংবাদমাধ্যম এরইমধ্যে বলেছে চিকিৎসা শুধু নয় বরং রাজনৈতিক কৌশলের অংশ হিসেবেই দেশে ফিরতে দেরি করতে পারেন খালেদা জিয়া। তাদের মতে, ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক ‘রোডম্যাপ’ তৈরি ছাড়াও দেশে মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবি আদায়ে বিদেশিদের মধ্যে ‘ইতিবাচক মনোভাব তৈরি’র চেষ্টাও থাকতে পারে। সূত্রের বরাতে কয়েকটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, এ মাসের ৮, ১৬ ও ২১ তারিখে কয়েকটি সম্ভাব্য তারিখ ছিলো বেগম জিয়ার দেশে ফেরার। এক চোখে অস্ত্রপচার বাকি থাকা আর হাঁটুর চিকিৎসা সম্পূর্ণ না হওয়ায় এসব সম্ভাব্য তারিখে দেশে ফেরা হয়নি তার। এরই মধ্যে এ মাসের ২৭ তারিখে লন্ডনে বিএনপির একটি সমাবেশ আয়োজনের কথাও জানা যাচ্ছে সংবাদমাধ্যমে। সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে ওই সমাবেশে দেশে মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবির যৌক্তিকতা তুলে ধরবেন বেগম জিয়া। এরপর চিকিৎসা শেষ হলেই দেশে ফিরবেন বলে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল নেতা। তবে এরইমধ্যে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয়ভাবে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সে বিষয়ে এখনও অবস্থান পরিস্কার করেনি বিএনপি। নির্বাচনে অংশগ্রহণ বা বর্জনের সিদ্ধান্ত বেগম জিয়া দেশে ফিরলে নেয়া হবে বলে বলছেন দলীয় নেতারা। যদিও দলীয় সরকারের অধীনে দশম জাতীয় নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্তে অটল থাকলেও সিটি কর্পোরেশনসহ কয়েকটি স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নেয় বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীরা। এ অবস্থায় দলীয়ভাবে প্রথমবারের মত অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া তৃণমুল পর্যায়ের এই গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনে বিএনপির অংশ নেয়ার বিষয়টি নির্ভর করেছ খালেদা জিয়ার সিদ্ধান্তের উপর।