আরিফ উদ্দিন, গাইবান্ধা থেকেঃ শিশু সৌরভকে গুলি করে হত্যাচেষ্টা মামলায় কারাগারে থাকা গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য মোঃ মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনের জামিন আদালত নামঞ্জুর করেছেন। জেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-২ আদালতের দায়িত্বে থাকা বিচারক মোঃ ওয়াহেদুজ্জামান রবিবার দুপুরে জামিন শুনানি শেষে এ আদেশ প্রদান করেন। এর আগে ২১ অক্টোবর এমপি লিটনের আইনজীবী মোঃ সিরাজুল ইসলাম বাবু অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সুন্দরগঞ্জ) আদালতে দুটি মামলায় জামিন আবেদন করলে বিচারক মোঃ ময়নুল হাসান ইউছুফ রবিবার জামিন আবেদন শুনানির দিন ধার্য করেন। এমপি লিটনের আইনজীবী মোঃ সিরাজুল ইসলাম বাবু জানান, আদালতের বিচারক ময়নুল হাসান ইউছুফ ছুটিতে থাকায় তার স্থলে ওই আদালতের দায়িত্বে থাকা বিচারক মোঃ ওয়াহেদুজ্জামান শিশুকে গুলি করে হত্যাচেষ্টা মামলায় জামিন শুনানি শেষে জামিন নামঞ্জুরের আদেশ দেন। তিনি আরো জানান, এ ছাড়া বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাটের মামলায় জামিন শুনানি চলছে। শুনানি শেষে বিচারক আদেশ দেবেন। জামিন শুনানির সময় এমপি লিটন আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। হত্যাচেষ্টার মামলায় তারা উচ্চ আদালতে জামিনের আবেদন করবেন বলেও জানান তিনি। রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনাকারী আইনজীবি মোঃ এনামুল হক জানান, শিশুকে গুলি করে হত্যাচেষ্টা মামলায় ৩০৭ ও ৩২৬ ধারা রয়েছে। তাই এমপি লিটনের জামিন আবেদনের বিরোধিতা করা হলে জামিন নামঞ্জুর করা হয়। ১৪ অক্টোবর রাতে রাজধানীর উত্তরায় বোনের বাসা থেকে লিটনকে গ্রেফতার করেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। মাইক্রোযোগে পরদিন সকাল সাড়ে ৬টার দিকে তাকে গাইবান্ধা ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়। পরে তাকে গাইবান্ধা জেলা অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সুন্দরগঞ্জ) আদালতে হাজির করা হলে বিচারক মোঃ ময়নুল হাসান ইউছুফ শুনানি শেষে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। উল্লেখ্য, সুন্দরগঞ্জ উপজেলার দহবন্ধ ইউনিয়নের গোপালচরণ এলাকায় ২ অক্টোবর ভোরে এমপি লিটনের লাইসেন্স করা পিস্তলের গুলিতে আহত হয় শিশু সৌরভ। সৌরভ গোপালচরণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র। শিশুটি এখনো রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু সার্জারী বিভাগে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় সৌরভের বাবা বাদী হয়ে ৩ অক্টোবর এমপি লিটনকে একমাত্র আসামী করে সুন্দরগঞ্জ থানায় মামলা করেন। এ ছাড়া এমপি লিটনের বিরুদ্ধে বাড়ি-ঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগে ৬ অক্টোবর সুন্দরগঞ্জ থানায় আরো একটি মামলা করেন সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সর্বানন্দ ইউনিয়নের উত্তর সাহাবাজ গ্রামের হাফিজার রহমান।