কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ) থেকে সুবল চন্দ্র দাস ঃ কিশোরগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলায় বহু রোপা আমন জমির ধানগাছ ঝলসে যাচ্ছে বলে জানা গেছে। কোথাও কোথাও পুরো জমির ধানই লাল বা হলুদ হয়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আবার কোথাও জমির আংশিক ধান ঝলসে যাচ্ছে। এমনকি অনেক জমিতে পোকার আক্রমণও পরিলক্ষিত হচ্ছে। এরকম বিপদের ফলে ফসল পাওয়া নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। অবশ্য অধিকাংশ আমন জমিই এখনো ভাল আছে বলে কৃষি বিভাগ জানিয়েছে। তবে এক সপ্তাহের মধ্যে সমস্যা কেটে যাব; ফলে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম কৃষকদের আতঙ্কিত না হতে বলেছেন। এখন আমন জমিতে ধানের শীষ বেরুনোর সময়। এই সময়টাতে জমির ধান নষ্ট হয়ে গেলে আর এই ক্ষতি পোষানোর সময় পাওয়া যাবে না। ফলে কৃষকের পুরো বিনিয়োগই ভেস্তে যাবে। বৃহস্পতিবার সদর উপজেলার যশোদল কুদখাইল এলাকার ফসলের মাঠে গিয়ে দেখা গেছে, বেশ কিছু আমন জমির ধানগাছ মরে গেছে, আবার কোনটির আংশিক পাতা মরে যাচ্ছে। তবে পুরো জমির ধান খুব কমই নষ্ট পাওয়া গেছে। প্রায় সব জমির ধানই আংশিক নষ্ট দেখা গেছেজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন অনেক জমিতে রেইনট্রি গাছের ছায়া পড়েছে। রেইনট্রি গাছ নিজেও কিছু ইউরিয়া (নাইট্রোজেন) উৎপাদন করে জমিতে সরবরাহ করে। ফলে এসব গাছের ছায়ায় যেসব জমি রয়েছে, সেগুলোতে কৃষকের ইউরিয়া প্রয়োগের সঙ্গে আরো বাড়তি ইউরিয়া যুক্ত হয়। যে কারণে ওইসব জমির ধানগাছ একটু বেশি রসালো হয়ে গেলে তখন পোকার আক্রমণ বেড়ে যায়। এছাড়া এবার বৃষ্টিপাতও বেশি হয়েছে। বৃষ্টির পানিতেও কিছু নাইট্রোজেন থাকে। সেই কারণে সব জমিতেই কিছু বাড়তি নাইট্রোজেন পড়েছে। এসব কারণেও জমি রসালো হয়ে যাওয়ায় অন্যান্য জমিতেও পোকার প্রাদুর্ভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এর পাশাপাশি অনেক কৃষক তার জমিতে প্রয়োজনীয় পটাশ সার প্রয়োগ করেননি। যে কারণে তাদের জমিগুলো লালচে বা হলুদ হয়ে যাচ্ছে। আর এই সমস্যার লক্ষণ কোন নির্দিষ্ট জাত নয়, প্রায় সব জাতের ধানের জমিতেই পরিলক্ষিত হচ্ছে। এসব জমিতে মাত্রা অনুযায়ী পটাশ প্রয়োগ করার পরামর্শ দিয়েছেন। যেসব জমিতে পোকা ধরেছে, কেরোসিন মিশ্রিত পানিতে দড়ি ভিজিয়ে সেসব জমিতে টেনে দেয়ার জন্যও উপ-পরিচালক কৃষকদের পরামর্শ দিয়েছেন। তবে তিনি প্রতিটি ব্লকের উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তাসহ কৃষি বিভাগের সকল স্তরের কর্মকর্তাকেই নির্দেশ দিয়েছেন মাঠ পর্যায়ে পরিদর্শন করে কৃষকদেরকে পরামর্শ দেয়ার জন্য। তারা ইতোমধ্যে মাঠ পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করছেন বলেও উপ-পরিচালক জানিয়েছেন। ফলে এক সপ্তাহের মধ্যেই সমস্যাটি কেটে যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। ফলে তিনি কৃষকদের আতঙ্কিত না হতে আহবান জানিয়েছেন।