দেশীয় চলচ্চিত্রে নিজেকে স্থায়ী বাসিন্দা করে নিয়েছেন তরুণ প্রজন্মের ক্রেজ আরেফিন শুভ। টিভি নাটক ও বিজ্ঞাপনে নিয়মিত কাজের মাধ্যমে প্রশংসিত এ অভিনেতা এখন পুরোদস্তুর চিত্রনায়ক হিসেবেই পরিচিত সবার কাছে। এরই মধ্যে কয়েকটি ছবিতে অভিনয় করে দর্শকও মাতিয়েছেন শুভ। বর্তমান ব্যস্ততা ও অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয়ে আজকের ‘আলাপন’-এ কথা বলেছেন তিনি। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন মারুফ কিবরিয়া
কেমন আছেন?
আল্লাহর অশেষ রহমতে ভালো আছি। তবে খুব ব্যস্ততার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
কি কাজ করছেন এখন?
‘অস্তিত্ব’ ছবির কাজ চলছে। এ ছবিতে অভিনয়ের জন্য এখন কক্সবাজারে আছি। এটি পরিচালনা করছেন অনন্য মামুন। গল্পটা দারুণ। এখানে আমার বিপরীতে নুসরাত ইমরোজ তিশা অভিনয় করছেন।
এ ছবিতে আপনার চরিত্র কি ধরনের?
এখানে দর্শক আমাকে শিক্ষকের ভূমিকায় দেখবেন। একটি প্রতিবন্ধী স্কুলের শিক্ষক আমি। আগেই বলেছি গল্পটা অনেক সুন্দর। এখনই সব বলতে চাইছি না। বাকিটা দর্শকের জন্য চমক হিসেবে রেখে দিলাম।
তিশার সঙ্গে নাটকে দেখেছেন দর্শক। চলচ্চিত্রের অভিজ্ঞতা কেমন?
আসলে তিশাকে নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। টিভি পর্দায় তার জনপ্রিয়তার কথা সবাই জানেন। তার জনপ্রিয়তা কিন্তু অভিনয়ের কারণেই। আর সেটা এর আগেও চলচ্চিত্রে প্রমাণ করেছেন তিনি। এক কথায় বলবো, তিশার সঙ্গে কাজ করে খুবই ভালো লাগছে।
ছবিটি নিয়ে আপনি কতটুকু আশাবাদী?
দেখুন, প্রতিটি মানুষই তার করা যে কোন কাজের ভালো ফলাফলের জন্য প্রত্যাশা করেন। আমি এ যাবৎ যত ছবিতে অভিনয় করেছি, সবকটি নিয়েই ভালো ফল আশা করেছি। এ ছবি নিয়েও আমি দারুণ আশাবাদী। আর একটা ছবি নিয়ে ভালো কিছু তখনই আশা করা যায়, যখন সেটার গল্প, চরিত্র, সহশিল্পী ও নির্মাতা এমনকি পুরো ইউনিটের ভালো সমন্বয় থাকে। পাশাপাশি কাজটাও যদি ভালো হয়। এ ছবির সবই ঠিকঠাকভাবে হচ্ছে। আমি মনে করি শেষ পর্যন্তও এ ধারাবাহিকতা থাকবে। এবং দর্শকের কাছে একটি ভালো ছবি নিয়ে আসা সম্ভব হবে।
এ মুহূর্তে হাতে আর কোন ছবি রয়েছে?
ছবির প্রস্তাব রয়েছে কয়েকটির। তবে ‘অস্তিত্ব’ ছাড়া এখন আর কোন ছবিতে কাজ করছি না। সামনে জাজ মাল্টিমিডিয়ার একটি কাজ রয়েছে। প্রাথমিকভাবে ছবিটির নাম ‘প্রহরী’ রাখা হয়েছে। জানি না নামটি পরিবর্তন হবে কিনা। কিছুদিনের মধ্যেই ছবিটির কাজে হাত দেবো বলে আশা করছি।
অনেকদিন ধরেই চলচ্চিত্রে কাজ করছেন। কতটুকু সফল বলে মনে করেন?
অনেক কঠিন প্রশ্ন। সফলতাটা মানুষের দৃষ্টিভঙ্গির ওপর নির্ভর করে। বহুভাবে সফলতাকে দেখা যায়। আমি সফল বিফল জানি না। এতদিন অপেক্ষা করেছিলাম, দর্শক আমাকে ভালোবাসুন। সেই ভালোবাসাটা পেয়েছি, পাচ্ছি। চলচ্চিত্রে দর্শক আমাকে আরও দেখতে চান। এটাকে আসলে সফলতা বলবো না সফলতার প্রথম সিঁড়ি বলবো ঠিক জানি না।
চলচ্চিত্রে আবারও অশ্লীলতা প্রবেশ করছে। বিষয়টিকে আপনি কিভাবে দেখছেন?
কমার্শিয়াল দিকটা চিন্তা করতে গিয়ে কেউ কেউ অশ্লীল ছবি নির্মাণের চেষ্টা করছেন। এর পরিণতির ভাবনাটা যদি তারা করে থাকেন তাহলে এটা এলার্মিং কিছু নয় বলেই আমি মনে করি। কারণ আমাদের দর্শক যারা পরিবার নিয়ে হলে যান ও ছবি দেখেন তারা যখন আসবেন না তখনই ওই নির্মাতা প্রযোজকরা বুঝে ফেলবেন তাদের পন্থাটা ভুল ছিল। তাই আর সে ধরনের ছবি নির্মাণও করবেন না।
চলচ্চিত্র নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি?
ভবিষ্যৎ নিয়ে যে আহামরি ভাবি তা নয়। চলচ্চিত্রে কাজ করে যাচ্ছি। এ ইন্ডাস্ট্রিটাকে ভাল কিছু দিতে চাই। তবে আমার একার পক্ষে তো সম্ভব নয়। আমি আমার জায়গায় থেকে সর্বোচ্চটা দিচ্ছি আর সেটাই দিয়ে যাবো।
ব্যক্তিগত জীবন কেমন কাটছে?
এক কথায় বলবো খুবই বাজে। গত আড়াই মাসে পরিবারকে কোন সময় দিতে পারিনি। কাজের মাঝেই ডুবে আছি। আর এ ‘অস্তিত’্ব ছবির কক্সবাজারের অংশ শেষ হবে আগামী ৬ই নভেম্বর। এরপর ঢাকায় ফিরতে পারবো। তাই ব্যক্তি আমিটাকে কোনভাবেই সময় দিতে পারছি না।
এক্ষেত্রে আপনার স্ত্রীর মান-অভিমান…
হা হা হা… (হাসি)। মান-অভিমান তো প্রতিনিয়তই চলছে। কোন না কোন উপায়ে ম্যানেজ করছি।