টিভি নাটকের জনপ্রিয় অভিনেত্রী শান্তা ইসলাম। দীর্ঘদিন ধরে এ অঙ্গনের সঙ্গে সম্পৃক্ত তিনি। তবে এখন সে ব্যস্ততা নেই বললেই চলে। অবশ্য পর্দায় সরব রয়েছেন অনুষ্ঠান উপস্থাপনার মাধ্যমে। বর্তমান ব্যস্ততা ও অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয়ে আজকের ‘আলাপন’-এ কথা বলেছেন শান্তা ইসলাম। তার সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন মারুফ কিবরিয়া
কেমন আছেন? কেমন যাচ্ছে সব?
ভালো আছি। আর সব চলছে ভালো।
এখন ব্যস্ততা কি নিয়ে?
অভিনয় তো এখন করছি না। অনেকদিন ধরেই এ মাধ্যমটির সঙ্গে নেই। অনুষ্ঠান নির্মাণ ও উপস্থাপনা করছি। এখন এসএ টিভি, মাছরাঙা ও আরটিভিতে প্রচার চলতি তিনটি অনুষ্ঠানের কাজ চলছে।
অভিনয় থেকে দূরে সরে আছেন কেন?
আসলে দীর্ঘদিন অভিনয় করছি না। এর পেছনে তেমন কোন বিশেষ কারণ নেই। আমার ছেলে যখন টিনএজ বয়সে পা রাখে তখন থেকেই ওর দিকে বেশি খেয়াল করা শুরু করি। আর তাকে ঘিরেই আমার সব ব্যস্ততা। মনে হচ্ছিল, দুটো কাজ একসঙ্গে করা কঠিন হয়ে উঠছিল। মূলত সময় মেলানো যাচ্ছিল না। তাই তখন থেকেই নিজেকে গুটিয়ে নিই অভিনয় থেকে।
আপনি নাটক নির্মাণও করেছিলেন। সেখান থেকেও সরে এসেছেন?
২৬টি নাটক নির্মাণ করেছিলাম। ওই একই সমস্যা। অভিনয়ে যেমন বেশি সময় দেয়া লাগতো তেমনি নির্মাণেও। সময় করা হয়ে ওঠেনি। তাই সেখান থেকেও সরে এসেছি।
এখনকার নাটকগুলো কেমন লাগছে?
নাটকে এখন অনেক এক্সপেরিমেন্টাল কাজ হচ্ছে। এ অঙ্গনে নতুন নতুন মুখ দেখা যাচ্ছে। আমি ইয়াং জেনারেশনের ওপর আস্থা রাখি সবসময়। তাদের নিয়ে যেসব নাটক নির্মাণ হচ্ছে ভালোই লাগছে।
নাটক নিয়ে আপনার মূল্যায়ন কি?
এখন ভালো-মন্দ নিয়ে চলছে। ভালো নাটক যেমন নির্মাণ হচ্ছে তেমনি খারাপটাও দেখা যাচ্ছে। আসলে বিজ্ঞাপন একটা বড় সমস্যা। এর কারণে ভালো নাটক হলেও দর্শক দেখতে পারছেন না। নাটকের মাঝে বেশি বিজ্ঞাপন হলে দর্শক বিরক্ত হয়ে যান। আমি নিজেও একটি নাটক দেখতে বসলে বিরক্ত হয়ে যাই। এ সমস্যার সমাধান হলে ভালো কিছু প্রত্যাশা করা যাবে।
এই সমস্যা থেকে উত্তরণের উপায় কি বলে মনে করেন?
গত ঈদে কিছু চ্যানেল বিজ্ঞাপনহীন অনুষ্ঠান প্রচার করেছিল। সে সুফলটা আমরা কিছুটা হলেও পেয়েছি। বিজ্ঞাপন তো একেবারে বন্ধ করা সম্ভব নয়। তবে নিয়ন্ত্রণে রেখে কিভাবে দর্শককে বিনোদন দেয়া যায় সে বিষয়ে ভাবতে হবে। আর সেটা চ্যানেলের ওপর নির্ভর করে। চ্যানেল যদি বিজ্ঞাপন দাতাদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে বসেন তাহলে ইতিবাচক কিছু আশা করা সম্ভব।
ব্যস্ততার বাইরে সময়টা কিভাবে কাটে আপনার?
পরিবারের সঙ্গেই বেশি সময়টা কাটে আমার। আসলে সময় তো খুব একটা পাই না। কারণ আমি যখন একটি কাজ নিয়ে পরিকল্পনা করি তখন সেটি যানযটের এই শহর ভেঙে শেষ করতে গিয়ে আর সময় থাকে না যে আলাদা করে কিছু করবো। বাসায় ফিরে সংসারের কাজেই সময় দিই।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি?
দেখুন আমি নাটক থেকে সরে এসেছি আমার ছেলের জন্য। ওর ভালো একটি ভবিষ্যতের কথা ভেবে অভিনয় কিংবা নির্মাণ কোন কিছুই এখন করছি না। তাই পরিবারকে ঘিরেই আমার যত পরিকল্পনা।
ব্যক্তিগত জীবন কেমন যাচ্ছে?
আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। ভালো থাকার জন্য একটা চেষ্টা লাগে। আর সেটা নিয়মিত করে যাচ্ছি। সবচেয়ে বড় কথা হলো, ব্যস্ত দিন শেষে যখন ভাবি যে ভালো একটি দিন কেটেছে, একটি ভালো কাজ করেছি তখন সত্যিই স্বস্তি পাই। আর নিজেকে প্রচুর সময় দিই। ভালো থাকার জন্য আমি এই পন্থাটা অবলম্বন করছি। এটা সবারই করা উচিৎ বলে মনে করি।
নতুন যারা কাজ করছেন তাদের উদ্দেশ্যে আপনার পরামর্শ কি?
আসলে তাদের উদ্যমটাকে আমি খুব পছন্দ করি। এখন বহিঃবিশ্বের দরজা তো খোলা। নতুন শিল্পীরা সেটা দেখে দেখে অনেক এগিয়ে যাচ্ছে। সময়ের সঙ্গে থাকছে। এটা আমার কাছে খুবই ভালোলাগার একটি বিষয়। শুধু তাই নয়, অনেক নতুনকে দেখছি পেশাদারিত্ব বজায় রেখে কাজ করছেন। এটা ধরে রাখতে হবে সবাইকে। এক কথায় তাদের নিয়ে আমি দারুণ আশাবাদী।