জাতীয় ক্রিকেটে লীগে (এনসিএল) চতুর্থ শিরোপা ঘরে তুলেছে খুলনা বিভাগ। এর আগে ২০০২-২০০৩ সালে প্রথম চ্যাম্পিয়ন হয় খুলনা বিভাগ। এরপর ২০০৭/০৮ ও ২০১২/১৩ মওসুমে একই কৃতিত্ব অর্জন করেছিল দলটি। ওয়ালটন ১৭তম এনসিএল-এ গত আসরের চ্যাম্পিয়নদের সঙ্গে ড্র করে এবারও সেরার মুকুট পরেছে দলটি। এনসিএল-এ এবারই প্রথম টায়ার পদ্ধতি চালু করা হয়। বলা চলে নতুন নিয়মে প্রথম চ্যাম্পিয়ন খুলনা। তবে এদিন অবনমন হয়েছে গত আসরের চ্যাম্পিয়ন রংপুর বিভাগের। টায়ার-১ থেকে টায়ার-২ নেমে গেছে দলটি। অন্যদিকে পয়েন্ট তালিকার তলানিতে থাকা দল বরিশাল বিভাগ সবাইকে চমকে দিয়ে দ্বিতীয় থেকে প্রথম স্তরে উঠে এসেছে। বগুড়া শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে চট্টগ্রামের বিপক্ষে ড্র করে তারা। বরিশাল বিভাগ ৬ ম্যাচে ৪টি ড্র ও ২টি ম্যাচে জয় লাভ করে। এছাড়াও শেষ রাউন্ডের শেষদিন মাঠে নামার সুযোগ শিরোপা প্রত্যাশী ঢাকা বিভাগ ও ঢাকা মেট্রো পলিটনের। কক্সবাজার শেখ কামাল স্টেডিয়ামে বৃষ্টিতে তাদের টানা দিন মাঠে নামার সুযোগ হয়নি। এই দুই দলের খেলা হলে শিরোপার ভাগ্য অন্যরকমই হতে পারতো। তবে বৃষ্টিতে ড্র করা হতাশার দিনেও সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন মেট্রোর ওপেনার শামসুর রহমান শুভ। আরেক ব্যাটম্যান মেহেদি মারুফের মাংপেশিতে টান পড়ায় ৯৯ রানে রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে ফিরেন সাজঘরে। দল হতাশ হলেও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বিসিবি একাদশে ঢাকা পেয়েছেন মেহেদি মারুফ।
গতকাল চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে খুলনার শিরোপা জয়ের দিন সেঞ্চুরি করেছেন ইমরুল কায়েস। তার আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের সুবাদে ৭ উইকেটে ২৮৬ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে খুলনা। খুলনার ইনিংস শেষেই ড্র মেনে নেন দুই অধিনায়ক। ১০৪ বলে ১০৭ রানের ইনিংস খেলেন ইমরুল। তার ঝড়ো ইনিংসটি ১৩টি চার ও ৩টি ছক্কায় সাজানো। ৬২ রানে অপরাজিত থাকেন অলরাউন্ডার জিয়াউর রহমান। রংপুরের তানভীর হায়দার ৫৬ রানে নেন দুই উইকেট। প্রথম ইনিংসে ইনিয়ংসে সেঞ্চুরির সুবাদে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন তিনিই। এর আগে ৭ উইকেটে ৩২৪ রান নিয়ে চতুর্থ ও শেষ দিনের খেলা শুরু করেছিল রংপুর বিভাগ। ২০ রান যোগ করতেই শেষ তিন উইকেট হারিয়ে অলআউট হয় ৩৪৪ রানে। ১২৭ রানে ৫ উইকেট নিয়ে খুলনার সেরা বোলার অধিনায়ক আবদুুর রাজ্জাক। এছাড়া মুরাদ খান ৬৬ রানে নেন ৪ উইকেট।
নাফীসের জোড়া সেঞ্চুরিতে প্রথম স্তরে বরিশাল
এনসিএল-এর দ্বিতীয় স্তর (টায়ার-১) থেকে প্রথম স্তরে উঠেছে বরিশাল বিভাগ। দলকে প্রথম স্তরে নিয়ে যেতে চট্টগ্রামের বিপক্ষে ড্র ম্যাচে দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরি করেন ওপেনার ব্যাটসম্যান শাহরিয়ার নাফীস। বাংলাদেশে অষ্টম ব্যাটসম্যান হিসেবে প্রথম শ্রেণীর ম্যাচে দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরির কৃতিত্ব দেখালেন নাফীস। এবারের আসরে মার্শাল আইয়ুবের পর দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি করেন তিনি। জাতীয় দল থেকে দীর্ঘদিন বাইরে থাকা এই তারকা ব্যাটসম্যান যে এই সেঞ্চুরিতে নতুন জীবন পেয়েছেন। এদিনই তিনি ডাক পেয়েছেন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বিসিবি একাদশে।
গতকাল বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে ৮ উইকেটে ৪২৩ রান নিয়ে খেলা শুরু করে চট্টগ্রাম। প্রথম ইনিংসে ৪৮৯ রান করা বরিশাল ৬৬ রানে এগিয়ে ছিল। চতুর্থদিন মাত্র ৩ ওভার স্থায়ী হয় চট্টগ্রামের ইনিংস। এদিন ২ রান যোগ করেই শেষ দুই উইকেট হারিয়ে ৪২৫ রানে অলআউট হয়ে যায় চট্টগ্রাম। ১৩৪ রানে ৫ উইকেট নিয়ে সোহাগ গাজী বরিশালের সেরা বোলার। ৬৪ রানে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করা বরিশাল দ্বিতীয় ইনিংসে ৬ উইকেটে ৩০৩ রান করে। এরপর দুই অধিনায়কই ড্র মেনে নেন। ৬৯ রানে তিন উইকেট হারানো বরিশালের দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুটা ভালো হয়নি। তবে আল আমিন জুনিয়রের সঙ্গে ১২২ রানের জুটিতে প্রতিরোধ গড়েন নাফীস। ৬৮ রান করে আল আমিন ফিরে গেলেও অবিচল থাকেন প্রথম ইনিংসে ১৬৮ রান করা নাফীস। সোহাগ গাজীর সঙ্গে ৫৩ রানের জুটিতে ম্যাচে নিজের দ্বিতীয় সেঞ্চুরিতে পৌঁছান নাফীস। শেষ পর্যন্ত ১৭৪ রানে অপরাজিত থাকেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। তার ২০৯ বলের ইনিংসটি ২১টি চার ও দু’টি ছক্কা মারে সাজানো। নাফীসের সঙ্গে যৌথভাবে ম্যাচ সেরা হন চট্টগ্রামের পক্ষে ডবল সেঞ্চুরি করা জাতীয় দলের তারকা মুমিনুল হক সৌরভ।