দেশের শেয়ারবাজারে ফের বড় ধরনের দরপতন হয়েছে। গতকাল দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন হওয়া ৭২ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারের দর কমেছে। দর কমে যাওয়ার কারণে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসই ব্রড ইনডেক্স বা ডিএসইএক্সের পতন হয়েছে ৫৯ পয়েন্ট। আর এর ফলে ডিএসইএক্স ফের সাড়ে ৪ হাজার পয়েন্টের নিচে নেমে এসেছে। দিনশেষে ডিএসই সূচক দাঁড়িয়েছে ৪৪৪৩.১৪ পয়েন্টে। এর আগে সাড়ে ৪ মাস আগে ২৫শে জুন ডিএসই সূচক সাড়ে ৪ হাজার পয়েন্টের নিচে ছিল। দেশের অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) প্রায় ৭০% কোম্পানির শেয়ারের দর কমেছে। এর ফলে সিএসসিএক্স’র পতন হয়েছে ৯২ পয়েন্ট। বাজার বিশ্লেষকরা জানান, নানা কারণেই দেশের শেয়ারবাজারে মন্দাবস্থা বিরাজ করছে। সমপ্রতি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে দুই বিদেশী হত্যার জের কাটতে না কাটতেইে এক প্রকাশক হত্যা, পুলিশ হত্যার ঘটনায় সবার মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে বিনিয়োগের ঝুঁকি নিতে চাচ্ছেন না বিনিয়োগকারীরা। ফলে বাজারে এক ধরনের ক্রেতা সংকট দেখা দিয়েছে। ক্রেতা না থাকায় বিক্রি চাপে দর হারাচ্ছে কোম্পানিগুলো। ফলে বাজারে দরপতনের ঘটনা ঘটছে। গতকাল দিনের শুরুতেই বাজারে বড় ধরনের বিক্রি চাপ দেখা যায়। লেনদেনের শেষ অবধি সে চাপ অব্যাহত থাকায় বড় ধরনের পতন দিয়ে শেষ হয দিনের লেনদন। এর ফলে ডিএসই সূচক ফের সাড়ে ৪ হাজার পয়েন্টের মনস্তাত্ত্বিক সীমার নিচে নেমে গেছে। সাড়ে ৪ হাজার পয়েন্টের মনস্তাত্ত্বিক সীমার নিচে সূচক নেমে যাওয়ায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ফলে বড় ধরনের পতনে শেষ হয় দিনের লেনদেন। ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া ৩১৩টি ইস্যুর মধ্যে দিনশেষে দর বেড়েছে ৬৪টির, কমেছে ২২৬টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ২৩টির দর। এদিকে সূচকের পাশাপাশি লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। বৃহস্পতিবার ৩৩৫ কোটি ৪৬ লাখ টাকা লেনদেন হলেও রোববার লেনদেন হয়েছে ৩১৪ কোটি ৭১ লাখ টাকা। লেনদেনের শীর্ষে রয়েছে ইফাদ অটোস। দ্বিতীয় স্থানে থাকা কেডিএস এক্সেসরিজের লেনদেন হয়েছে ১২ কোটি ১৮ লাখ ৩৪ হাজার টাকা। তৃতীয় স্থানে রয়েছে সাইফ পাওয়ারটেক। লেনদেনে এরপর রয়েছে যথাক্রমে- কাশেম ড্রাই সেল, বিএসআরএম, ইউনাইটেড পাওয়ার, বিএসআরএম স্টিল, লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট, বেক্সিমকো ফার্মা, তিতাস গ্যাস। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সিএসসিএক্স ৯২.৮০ পয়েন্ট কমে দিনশেষে ৮২৭৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। লেনদেন হয়েছে ২১ কোটি ১৪ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া কোম্পানি ও মিউচুয়ালফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৫১টির, কমেছে ১৬২টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২০টির দর।