বাংলাদেশে বর্তমানে সাড়ে ৭ লাখ মানুষ দৃষ্টিহীন। যাদের মধ্যে সাড়ে ৬ লাখ অন্ধত্ব বরণ করেছে ছানির কারণে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর দ্যা প্রিভেনশন এর গবেষণায় উঠে এসেছে এমন তথ্য। গতকাল রাজধানীর স্পেকট্রা কনভেনশন সেন্টারে প্রতিরোধযোগ্য অন্ধত্ব নিবারণের লক্ষ্যে প্রণীত ভিশন ২০২০ কর্মশালার এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, প্রতিবছর ২ লাখ ছানি অপারেশন হলেও বছরে ১ লাখ ৩০ হাজার ছানিজনিত দৃষ্টিহীন মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। কর্মশালার প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, চক্ষু-স্বাস্থ্য খাতে বাংলাদেশকে আরও বেশি মনোযোগ দিতে হবে। এজন্য সরকারের সঙ্গে বেসরকারি সংস্থাগুলোকে আরও শক্তিশালী সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। এ সময় চক্ষু স্বাস্থ্যসেবা ক্ষেত্রে অবদানের জন্য আন্তর্জাতিক, বেসরকারি ও উন্নয়ন সংস্থাগুলোর প্রশংসা করেন সচিব। তিনি বলেন, অর্থায়নের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থাগুলোকে পরামর্শ ও কারিগরি সহায়তা দিয়েও সহযোগিতা করতে হবে। কর্মশালায় অংশ নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক দীন মোহাম্মদ নূরুল বলেন, অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে চক্ষু চিকিৎসার ব্যয় কম। তবে ছানি অস্ত্রোপচারের ব্যয় আরও কমানো দরকার। যাতে দরিদ্ররা এ অস্ত্রোপচার করাতে পারে। চক্ষু চিকিৎসকদের ছানি অস্ত্রোপচার বিষয়ক প্রশিক্ষণ দেয়ায় জোর মত দেন তিনি। এ ছাড়া প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট গড়ে তোলার জন্য বেসরকারি সংস্থাগুলোর প্রতি আহ্বান জানান। কর্মশালায় বক্তারা আরও বলেন, চক্ষুচিকিৎসার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অর্জন করতে জনসংখ্যা অনুপাতে স্বাস্থ্যকর্মী বাড়ানো দরকার। তারা বলেন, এ খাতে দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলার জন্য বিনিয়োগ বাড়ানোও জরুরি। কর্মশালায় বিশেষজ্ঞরা চারটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র চিহ্নিত করেন। সেগুলো হলো- ১. যেসব রোগীর ছানি অস্ত্রোপচার ইতিমধ্যে জরুরি হয়ে পড়েছে তাদের অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করতে শল্যচিকিৎসকের সংখ্যা বৃদ্ধি, ২. অধিক সংখ্যক অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করতে এবং প্রাথমিক চক্ষু স্বাস্থ্যসেবায় অবদান বাড়াতে শল্যচিকিৎসকদের সহযোগী কর্মীর সংখ্যা বৃদ্ধি, ৩. চক্ষু স্বাস্থ্যসেবায় বরাদ্দ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি, ৪. সারা দেশে মানসম্পন্ন চক্ষুসেবা নিশ্চিত করা। কর্মশালায় বলা হয়, গবেষণা অনুযায়ী- বাংলাদেশে প্রতি ১০ লাখ জনগণের মধ্যে চোখের ছানি অপারেশন হয় ১ হাজার ৩শ’ জনের। চিকিৎসকের অপ্রতুলতার কারণে ছানি চিকিৎসায় বিগত কয়েক বছরে তেমন অগ্রগতি হয়নি। কর্মশালায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- এশিয়া প্যাসিফিক একাডেমি অব অফথালমোলোজির ভাইস-প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক আভা হোসেন, ওএসবি প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক মো. শরফুদ্দিন আহমেদ ও মহাসচিব অধ্যাপক এএইচএম এনায়েত হুসেন প্রমুখ