বাংলাদেশের ওয়ানডে ইতিহাসে সেরা ওপেনিং জুটি কোনটি? পরিসংখ্যান বলে দিচ্ছে তামিম ইকবাল-ইমরুল কায়েস। ২০০৮ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত ৪৭ ম্যাচে ১৩৫৭ রান। কিন্তু অবাক করা বিষয় ওয়ানডেতে এই জুটির ব্যাট থেকে এবারই প্রথম এলো শত রানের বেশি। এর আগে ২০১০ সালে ভারতের বিপক্ষে ৮০ রানের জুটিই ছিল সর্বোচ্চ। কিন্তু গতকাল তারা জ্বলে উঠলেন নতুনরূপে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওপেন করতে নেমে। এই জুটি ভাঙার আগে স্কোর বোর্ডে যোগ করেন ১৪৭ রান। ইমরুল কায়েস ১২তম ফিফটি করে যখন সেঞ্চুরির দিকে ধাবিত হচ্ছিলেন তখনই সিকান্দার রাজার বল ডাউন দ্য উইকেট হাঁকাতে গিয়ে স্টাম্পড হলে ভেঙ্গে যায় জুটিও। এটি বাংলাদেশের হয়ে ওপেনিংয়ে ৫ম সর্বাধিক রানের জুটি। শুধু তাই নয়, এই বছর তৃতীয় বার শত রানের জুটি উপহার দিলেন বাংলাদেশের ওপেনাররা। বাকি দুটিতে তামিম ইকবালের সঙ্গী ছিলেন সৌম্য সরকার। অন্যদিকে ইমরুল কায়েস ৭৩ রানে আউট হওয়ায় তামিম ইকবালও আউট হন সমান সংখ্যক রানে। আউট হওয়ার ধরনও একই- স্টাম্পড। তবে তামিম ৯৮ বল খেললেও ইমরুল খেলেন ৩টি বল কম। ইমরুল তার স্বভাব বিরোধী ব্যাটে ছাড়িয়ে গেছেন তামিমকে। সেখানে তামিম ইকবালের ব্যাট থেকে এসেছে ৭টি চার ও একটি ছয়ের মার সেখানে ইমরুল ৬টি চারের সঙ্গে হাঁকিয়েছেন ৪টি ছয়ের মার। তবে এদিন তামিম স্থান পান অন্য এক রেকর্ডে। মিরপুর শেরে বাংলা মাঠে সাকিব আল হাসানের পর ২০০০ রান এখন তার।
জিম্বাবুয়ের সঙ্গে হোয়াইটওয়াশের মিশনে সিরিজের শেষ ওয়ানডে ম্যাচটি খেলতে নেমেছিল টাইগাররা। আগের দুই ম্যাচ টস ভাগ্য মাশরাফির না হলে শেষ ম্যাচে টসে জিতেই শুরু করেন। যথারীতি ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিলে তামিম ও ইমরুল শুরু করেন। তাদের দুজনের দুর্দান্ত শুরুতেই চালকের আসনে চলে আসে বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আগের ম্যাচে দলে সুযোগ পেয়েই ৭৬ রান করে আউট হয়েছিলেন ৮৯ বলে ৬টি চার ও ৪টি চারের মারে। এ ম্যাচে ইমরুল ৫০ করেন ৭৬ বলে আর তামিম ৫০ করেন ৭০ বলে।
অন্যদিকে তামিম ইকবাল বাংলাদেশের সেরা ওপেনার তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এ পর্যন্ত ওপেনিং থেকে আসা ১৪টি শতরানের জুটির মধ্যে ৭টিতেই আছেন
তিনি। এ বছরই দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সৌম্য সরকারকে সঙ্গে নিয়ে টাইগারদের ওয়ানডে ইতিহাসে তৃতীয় সর্বাধিক ১৫৪ রানের জুটি গড়েছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকার আগে জুন মাসে ভারতের বিপক্ষে সৌম্য সরকারকে নিয়ে ১০২ রানের জুটি গড়েছিলেন। দেশের দ্বিতীয় সর্বাধিক ১৫৮ রানের জুটিতেও এনামুল হক বিজয়ের সঙ্গে ছিলেন তামিম। প্রথম দুই ম্যাচে ফিফটি হাঁকাতে ব্যর্থ তামিম শুরু করেছিলেন একটু ধীর গতিতেই। কিন্তু সময় যতটা গড়িয়েছে ইমরুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তিনি ততোটাই ক্ষিপ্র হয়ে উঠেছেন। ১৫২ ম্যাচের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে এটি তার ৩৩তম ফিফটি। কিন্তু ইমরুলের মতো তিনিও আউট হয়েছেন সেঞ্চুরি হাত ছাড়া হওয়ার আফসোস নিয়ে। তবে মিরপুর মাঠে ২০০০ রান থেকে ১৭ রান দূরে থেকে ব্যাট হাতে নেমে তামিম ছুয়েছেন সাকিব আল হাসানকে।
ওয়ানডেতে দেশের সেরা পাঁচ ওপেনিং জুটি
জুটি রান প্রতিপক্ষ ভেন্যু/সাল
মেহেরাব হোসেন, শাহরিয়ার হোসেন ১৭০ জিম্বাবুয়ে ঢাকা/১৯৯৯
এনামুল হক. তমিম ইকবাল ১৫৮ জিম্বাবুয়ে চট্টগ্রাম/২০১৪
সৌম্য সরকার, তামিম ইকবাল ১৫৪ দ. আফ্রিকা চট্টগ্রাম/২০১৫
এনামুল হক, তামিম ইকবাল ১৫০ পাকিস্তান ঢাকা/২০১৪
ইমরুল কায়েস, তামিম ইকবাল ১৪০ জিম্বাবুয়ে ঢাকা/২০১৫
ওপেনিং জুটিতে সর্বাধিক রান
জুটি ম্যাচ রান সময়
তামিম ইকবাল-ইমরুল কায়েস ৪৭ ১৩৫৭ ২০০৮-২০০১৫
এনামুল হক-তামিম ১৯ ৬৫১ ২০১২-২০১৫
জুনায়েদ সিদ্দিক-তামিম ২৫ ৫৭৩ ২০০৭-২০০৯
সৌম্য সরকার-তামিম ১০ ৫৪০ ২০১৫-২০১৫
শাহরিয়ার নাফিস-তামিম ২৪ ৪৯০ ২০০৭-২০১১