পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমান হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করা হবে আজ। ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক সাঈদ আহমেদ এ রায় ঘোষণা করবেন। গত ৪ঠা নভম্বরে মামলার সর্বশেষ ধাপ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে উল্লিখিত আদালতের বিচারক ১২ই নভেম্বর রায় ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়ে দেন। আলোচিত এই মামলার আসামি হলেন নিহত দম্পতির কন্যা ঐশী রহমান ও তার দুই বন্ধু আসাদুজ্জামান জনি ও মিজানুর রহমান রনি। মামলার অন্য আসামি ঐশীদের বাড়ির কাজের মেয়ে সুমি আক্তারের বিচারকাজ শিশু আদালতে চলছে। ঐশী ও তার বন্ধু আসাদুজ্জামান বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। অপর আসামি মিজানুর রহমান জামিনে আছেন। এ মামলায় ৪৯ জন সাক্ষীর মধ্যে ৩৯ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন। গত ৮ই অক্টোবর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়। ১৪ই অক্টোবর ঢাকার ৩ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থন করে বক্তব্য রাখে ঐশী রহমান। এ সময় নিজ বাবা মাকে হত্যার দায় অস্বীকার করেন তিনি। ঐশী জানান, ঘটনার সময় তিনি অপ্রাপ্তবয়স্ক ছিলেন। তার বাবা, মা যখন খুন হন তখন তিনি বাসায় ছিলেন না। বন্ধুর বাসায় অবস্থান করছিলেন। তার বাবা মাকে কে বা কারা খুন করেছে তা তিনি জানেন না বলে আদালতকে অবহিত করেন ঐশী। ভয় দেখিয়ে পুলিশ তার কাছ থেকে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আদায় করেছে। ২০১৩ সালের ১৬ই আগস্ট রাজধানীর চামেলীবাগের একটি বাসা থেকে পুলিশ কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমানের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এই হত্যায় ঐশীর চাচা মশিহুর রহমান পরদিন ১৭ই আগস্ট পল্টন থানায় একটি মামলা দাযের করেন। একই দিন ওই দম্পতির কন্যা ঐশী রহমান পল্টন থানায় আত্মসমর্পণ করে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। এ ঘটনায় দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। গত বছরের ৯ই মার্চ ঐশী ও তার দুই বন্ধু আসাদুজ্জামান জনি ও মিজানুর রহমান রনির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। এর আগে গত বছরের ৯ মার্চ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক আবু আল খায়ের মাতুব্বর ঐশীকে প্রধান আসামি করে আসাদুজ্জামান জনি ও মিজানুর রহমান নামে আরও দু’জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয় ঐশী তার বন্ধুর সহযোগিতায় বাবা-মা’কে হত্যা করেছে। একই সঙ্গে ঐশীর বাসার গৃকর্মীর বিরুদ্ধে শিশু আইনে পৃথক অভিযোগপত্র দেয় ডিবি। ৮ই এপ্রিল অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন সংশ্লিষ্ট আদালত। ৬ই মে ঐশী, জনি ও মিজানুরের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত। মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হলে একই বছরের ৩০শে নভেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে আবারও অভিযোগ গঠন করা হয়।