সম্পাদনায়-আরজে সাইমুর, স্বদেশ নিউজ২৪.কম: আমরা সব সময় বলে থাকি যে, জীবন থাকলে সমস্যা থাকবে,আর সমস্যা থাকলে উত্তরনের উপায় ও থাকবে,কিছু কিছু সমস্যা প্রকট অবার কিছু সমস্যা সামান্য। তবে সব সমস্যাই সমস্যা, আর এই সব সমস্যা মোকাবেলা করে জীবন কে এগিয়ে নিতে হবে সবাইকে এটাই বলে থাকি সব প্রশ্নের উত্তরে। প্রতিদিন আমরা অগণিত মেইল ও মেসেজ পেয়ে থাকি পাঠকের নির্বাচিত কিছু প্রশ্নের উত্তর আমরা দেবার চেষ্টা করি।
আপু, আশা করি ভালো আছেন, আমি অনেকদিন থেকে আপনাদের লেখা পড়ছি, আপনার পরামর্শ গুলো আমার অনেক ভালো লাগে আর এই জন্যই আমার আজকের এই লেখা, আমি আমার জীবনের একটা করুন ঘটনা আপনার কাছে বলতে চাই, আপনি আমাকে সাহায্য করেন। আমিতো দিশেহারা আমি কি করবো কিছুই বুজতে পারছি না?
ভেবেছিলাম মরে যাবো কিন্তু বাবা মায়ের কথা ভেবে আর এগোতে পারেনি। পরিবারের অসচ্ছলতার জন্য খুব কস্ট করে গ্রামে থেকে এস,এস,সি পাস করেছি, বিয়ে হয়ে যেতো কিন্তু আমার পড়াশোনার অনেক আগ্রহ ছিলো একারণেই হয়নি। একদিন আমাদের বাড়িতে আমার আব্বার এক দুর সম্পর্কের বোন আসে উনি আমাকে ঢাকাতে নিয়ে যেতে চায়, বলে আমার তো কোন মেয়ে নেই, আমার বাড়িতে থাকবে, ঘরের কিছু কাজ করবে আর লেখা পড়া করবে। বাড়ি থেকে যেতে দিতে রাজি হয়নি কিন্তু আমি রাজি ছিলাম। ঢাকাতে আসলাম আমাকে একটি কলেজে ভর্তি করে দিলো। আন্টির তিন ছেলে- বড় ছেলে ইন্টার পাস করে পড়াশোনার জন্য দেশের বাইরে গেছে আর ছোট দুই ছেলে ক্লাস এইটে পড়ে, খুব ভালোই চলছিল আমার পড়াশোনা। এভাবে ইন্টার পাস করেছি এই বাড়ি থেকে।
2012 সালের দিকে আন্টির বড় ছেলে দেশে আসে, কিছুদিন থাকবে তারপর আবারো চলে যাবে। খুব স্মাট এবং সুদর্শন, আমার সাথে আসার পর থেকে খুব ভালো ব্যাবহার করে। এভাবে চলতে থাকে মনে হয় উনি যেন আমাকে অনেকদিন থেকে চেনে। এভাবে আমাদের ভিতরে একটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে কিন্তু হঠাৎ বাদ সাধে আন্টি একদিন আমাকে ডেকে বলে তুমিতো মেয়ে মানুষ তাই সবসময় আমার ছেলেদের থেকে দুরে দুরে থাকবে। আমি সেটাই মেনে নিই, তারপর থেকে খুব বেশী কথা বলতাম সোহানের সাথে। একদিন সোহান আমাকে বললো মিম তুমি আমার সাথে কথা বলোনা কেন, কিন্তু আমি বললাম এমনিতেই বাসায় অনেক কাজ আছে এইজন্য সময় পাইনা।
এভাবে চলতে থাকে, সোহান একদিন আমাকে বলে সে আমাকে ভালোবেসে ফেলছে, আজ কয়েকদিন কথা না বলার কারণে সে অনেক কস্ট পাচ্ছে। আমি বললাম এটা সম্ভব না, কিন্তু কে শোনে কার কথা আমার কথা শোনার সাথে সাথেই রুমে দরজা দিয়ে নিজের হাত কাটে ব্লেড দিয়ে। আমি খুব কস্ট পাই, আমাকে দুইদিনের সময় দেওয়া হয়। আমি কিছুতেই ভেবে পারছিলাম না কি বলবো? আমি না করে, দিই বোঝানোর চেষ্টা করি যে এটা সম্ভব না, আমার কথা শোনার পরেই ওর চোখ দিয়ে অঝোরে পানি ঝরতে থাকে। আমাকে কিছু না বলেই ছাদে উঠতে থাকে আর বলে লাফিয়ে পড়ে মরবে আমাকে না পেলে। আমিও ছুটে যাই, শ্বান্ত হতে বলি, একপর্যায়ে সে আমার পায়ে পড়ে, আমিও খুব ক্লান্ত আর পারছি না সহ্য করতে অবশেষে রাজি হয়ে যাই। পিছে ভয় হয় আন্টিকে নিয়ে, কিন্তু সোহান বলে যে আন্টিকে সে ম্যানেজ করবে। এভাবেই আমাদের সম্পর্ক সবার অগোচরে এগোতে থাকে।
আমার একটা ফোন ছিলো রাতে ওর রুম থেকে আমাকে কল দিতো, প্রায় রাতেই দীর্ঘ সময় কথা হতো। একদিন বাসা থেকে সোহান সহ আন্টিরা সবাই বেড়াতে যায়, আন্টিরা থেকে গেলেও সোহান বাসায় চলে আসে। আমরা একসাথে অনেক গল্প করি, আমি ভীষণ ভয় পাই। যদি আমাদের ভিতরে কিছু হয়ে যায়, কিন্তু সোহানের প্রতি আমার বিশ্বাস আরো বেড়ে যায়। সে আমাকে অন্যভাবে কিছুই করেনি, সত্য কথা বলতে কি ওর এই ব্যবহারে আমি রিতিমত মুগ্ধ। এভাবেই চলতে থাকে, সবাই ঘুমিয়ে গেলে ও মাঝেমধ্যে আমার রুমে আসতো, কিন্তু অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে একদিন আমাদের ভিতরে সবকিছুই হয়, আমি কাদতেঁ থাকি এটা কি হলো? কিন্তু সোহান আমাকে শ্বান্তনা দেয়, বলে যে খুব শীগ্রই আমাদের বিয়ে হবে, এভাবেই প্রতিরাতে ও আমাকে……
একদিন আন্টি সবকিছুই বুজতে পারে, আমাকে মারধর করে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। সোহান কে দেশেই বাইরে চলে যেতে বলে। আপু আমি বাড়িতে আসার পর একদিন ও ঠিক থাকতে পারিনি। সোহান ও আমাকে আর ফোন দেয় নাই। আমার বাড়ির সবাই এই ঘটনা জানতে পারে! একদিন আন্টি হঠাৎ আমাদের বাড়িতে চলে আসে, বলে যে সোহান না খেয়ে খেয়ে মরে যাবার পথে। আমি না গেলে হয়তো ওকে বাচাতে পারবো না। আমার বাড়ি থেকে যেতে দিতে চায় না। সোহান সুস্থ হলে আমাদের বিয়ে হবে এই কথা বলে বাড়ি থেকে আমাকে নিয়ে আসে। আমি আসার পর সোহান সুস্থ হয়ে যায়, আমাদের সম্পর্ক চলতে থাকে। আমাদের বাড়ি থেকে বিয়ের কথা বললে, আন্টি টালবাহানা করতে থাকে। আমাদের ভিতরে আবারো শারিরীক সম্পর্ক হয়, ওর বিদেশে যাবার ডেট ঘনিয়ে আসে, আন্টি আমাদেরকে বলে সোহান পড়াশুনা শেষ করে দেশে আসলে আমাদের বিয়ে হবে। ও আবারো লন্ডনে চলে যায়। যেদিন যায় তারপরের দিনই আমাকে আমাদের বাড়িতে রেখে আসে, আর আমার আব্বু কে কিছু টাকা দিয়ে বলে আমাকে অন্য কোথাও বিয়ে দিয়ে দিতে। কিন্তু আমার আব্বু টাকা ফেরত দিয়ে দেয়। আর যাবার সময় আন্টি শাশিয়ে যায় সোহানের সাথে যোগাযোগ করলে আমার সহ আমার পরিবারের পরিনাম খুব খারাপ হবে। আপু আমি এখন কি করবো? আমার তো সবই শেষ! আমিতো সোহান কে ভুলতে পারবো না! আপু আমার নাম ঠিকানা প্রকাশ না করে আমাকে পরামর্শ দেন।
পরামর্শঃ মেয়েরা যে মেয়েদের শত্রু সেটার আরো একবার প্রমাণ পেলাম, আমরা আজ পাঠকের থেকে এই ছোট বোনের সমস্যার জন্য পরামর্শ নিবো, তারপর সম্মিলিতভাবে একটি পরামর্শ প্রদান করবো।
বি:দ্র: আমরা শুধুমাত্র মানুষিক শক্তির জন্য পরামর্শ দিয়ে থাকি। আইনগত সহযোগীতার জন্য অবশ্যই বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা ও আদালত আছে। সমস্যা অতি গুরুতর হলে সেখানে গেলে আপনি অবশ্যই আইনি সহায়তা পাবেন।
এই লেখাটি ভূক্তভোগী শুধু মাত্র স্বদেশ নিউজ২৪.কম এ পাঠিয়েছেন, এই লিখাটি কেউ অন্য কোথাও প্রকাশ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।