এ বছর আগস্টের প্রথম দিন বিয়ের পিঁড়িতে বসেছিলেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী নওরীন হাসান খান জেনি। চ্যানেল নাইনের অনুষ্ঠানপ্রধান তানভীর খানের সঙ্গে বেশ কিছুদিন প্রেম করেন তিনি। এরপর সম্পর্কটি বিয়ে পর্যন্ত গড়ায়। বিয়ের পর এখন সুখের জীবন কাটছে জেনির। সংসার সুখের হলেও কাঙ্ক্ষিত ইচ্ছাটা পূর্ণ হচ্ছে না তার। তিনমাস পেরিয়ে যাওয়ার পরও মধুচন্দ্রিমায় যেতে পারছেন না স্বামীকে নিয়ে। কারণ একটাই, সেটা হলো দুজনেরই ব্যস্ততা। জেনি ব্যস্ত তার নাটকের শুটিং নিয়ে। কোনমতেই শিডিউল মেলাতে পারছেন না। আবার তানভীর খানও তার চ্যানেলের কাজ নিয়ে ব্যস্ত। ছুটি হচ্ছে না। এ প্রসঙ্গে জেনি মানবজমিনকে বলেন, সবারই ইচ্ছা থাকে বিয়ের পর হানিমুনে যাওয়া কিন্তু আমাদের সে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও যেতে পারছি না। গত তিন মাসে কয়েকবার পরিকল্পনা করেও সেটা হচ্ছে না। কারণ আমরা দুজনই ব্যস্ত। আমার নাটকের শুটিং একটার পর একটা লেগেই আছে। কবে শুটিং শেষ হবে জানি না। আবার তানভীরও চ্যানেলের কাজে খুব ব্যস্ত। আর এখন তো আরও সমস্যা। বিপিএল শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোন কিছুই সম্ভব হচ্ছে না। সবমিলিয়ে এ মুহূর্তে হানিমুন নিয়ে কোন পরিকল্পনা আপাতত নেই। বর্তমানে বেশ কিছু ধারাবাহিকে নিয়মিত অভিনয় করছেন জেনি। এর মধ্যে তার অভিনীত ‘নগর আলো’ ধারাবাহিকটি আগামী মাস থেকে মাছরাঙায় প্রচারে আসছে। নাটকটি প্রসঙ্গে জেনি বলেন, এটি ভিন্ন ধাঁচের একটি গল্প নিয়ে নির্মাণ হয়েছে। আমার চরিত্রের মাঝেও অনেক ভ্যারিয়েশন রয়েছে। আর পুরো ইউনিট ভালো একটি সহযোগিতার ফলে একটি দারুণ নাটক দর্শকের জন্য অপেক্ষা করছে। আশা করছি সবার ভালো লাগবে। জেনি অভিনীত নতুন এ ধারাবাহিকটি পরিচালনা করেছেন এম আর মিজান। এছাড়া ‘দাগ’, ‘গ্র্যান্ডমাস্টার’সহ আরও কিছু ধারাবাহিকে নিয়মিত কাজ করছেন জনপ্রিয় এ অভিনেত্রী। পাশাপাশি খণ্ড নাটকেও নিয়মিত অভিনয় করছেন জেনি। টিভি পর্দায় বিজ্ঞাপনে অসাধারণ নৈপুণ্য ও নাটকে সুঅভিনয়ের কল্যাণে দর্শকের মন অনেক আগেই জয় করেছেন এ পর্দাকন্যা। মাত্র তিন বছর বয়সে শোবিজে পা রাখেন জেনি। তিব্বত ৫৭০ সাবানের সেই বিজ্ঞাপনের স্মৃতি যখন দর্শক ভুলেই যেতে বসেছেন, তখনই পূর্ণ তরুণী জেনি পর্দায় ফিরে আসেন পন্ডস ডেইলি ফেসওয়াশের বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে। জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী ও অভিনেতা তাহসানের বিপরীতে সেই বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে তিনি দর্শকদের মাতিয়েছেন। পরে এ্যাপোলো হসপিটাল, লিপটন ইয়েলো, মেরিল বেবী লোশনসহ বেশকিছু চমৎকার বিজ্ঞাপনে পারফর্ম করে দর্শক মন জয় করে জেনি নাম লেখান অভিনয়ে। ‘রমিজের আয়না’য় মুখ দেখিয়ে পরবর্তী সময়ে ‘টুলেট’ ও ‘শানত কুটির’সহ বেশ কিছু নাটকে সুঅভিনয় দিয়ে দর্শক হৃদয়ে স্থান করে নেন তিনি। জেনি বলেন, আজকের অবস্থানের জন্য আমি আমার ভক্তদের কাছে অনেক কৃতজ্ঞ। কারণ, তারাই আমাকে ভালবাসা দিয়ে এ পর্যন্ত আসার সুযোগ করে দিয়েছেন। ছোটবেলা থেকে আমি বিজ্ঞাপনের সঙ্গে জড়িত ছিলাম। এরপর বিজ্ঞাপন ও টিভি নাটকের অভিনয় করে দর্শকের কাছাকাছি আসতে পেরেছি। সেজন্য তাদের কাছে অনেক কৃতজ্ঞ আমি। একজন অভিনয়শিল্পীর বড় গুণ হলো শেখার মানসিকতা। এ ধারার শিল্পীদের মধ্যে জেনিকে একটু এগিয়ে রাখলে দোষের কিছু হবে না। কারণ বেশ কয়েক বছর ধরে অভিনয় করে অনেক নাটকের জন্য দর্শকদের ভালোবাসা অর্জনের পরও এই অভিনেত্রী এখনও নিজেকে অভিনয়ের শিক্ষার্থী ভাবতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। এ প্রসঙ্গে জেনি বলেন, আমি যেহেতু প্রাতিষ্ঠানিকভাবে অভিনয় শিখিনি তাই অভিনয় করতে করতেই আমাকে তা শিখতে হয়েছে। আমি একটি নাটকে কাজ করে যে অভিজ্ঞতা অর্জন করি, তাই পরবর্তী নাটকে কাজে লাগাই। কাজ করতে গিয়ে একেকজনের কাছ থেকে অভিনয়ের বিভিন্ন বিষয় রপ্ত করেছি। সত্যি বলতে কী, অভিনয়টা আসলে অবজারভেশনের বিষয়। তবে বেশিরভাগ সময়ই চেষ্টা থাকে নিজের চরিত্রগুলোকে একটু আলাদাভাবে উপস্থাপনের। অভিনয় নিয়ে আগামীর ভাবনার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন অভিনয়ই আমার সবকিছু। আমি অভিনয় নিয়েই থাকতে চাই আগামীতেও। দর্শকদের আনন্দ দিতে চাই। নিজেও অভিনয় করে আনন্দ পেতে চাই।