তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এবং বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অফ কলসেন্টার এন্ড আউটসোর্সিং (বাক্য) এর যৌথ উদ্যোগে আগামী ৯-১০ ডিসেম্বর ঢাকায় প্রথমবারের বিপিও সামিট ২০১৫ অনুষ্ঠিত হবে।পড়াশোনা করা অবস্থায় খন্ডকালীন কাজে করার ইচ্ছে ছিলো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর থেকেই। ভর্তির পর প্রায় এক বছরের মতো অতিবাহিত হলেও একটি টিউশনি ছাড়া তেমন কোনো কাজ জোগাড় করতে পারে নাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী মো. আল আমিন। ‘পরিবার থেকে পড়াশোনর খরচ দিতে খুবই কষ্ট হয়। তাই বাড়ি থেকে তেমন একটা টাকা নেই না। কষ্ট করে নিজের খরচ নিজেই চালাই। আজকের সেমিনারে এসে আমার চোঁখ খুলে গেল। আমি এখন থেকে কলসেন্টারে কাজ করবো এবং এখান থেকে ভালো আয় করতে পারবো আশা করি। এতে আমার পড়াশোনাও ক্ষতিও হবে এবং টাকা আয়ও করা যাবে। আশা করি এতে আর্থিক সমস্যা অনেকাংশেই কেটে যাবে এবং মাঝে মাঝে বাড়িতে টাকা পাঠানো যাবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিপিও সামিট ২০১৫ উপলক্ষে আয়োজিত অ্যাক্টিভেশন কার্যক্রম শেষে এমন কথাই বলেন মো. আল আমিন। সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এবং বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অফ কলসেন্টার এন্ড আউটসোর্সিং (বাক্য) এর যৌথ উদ্যোগে আগামী ৯-১০ ডিসেম্বর ঢাকায় প্রথমবারের বিপিও সামিট ২০১৫ অনুষ্ঠিত হবে। সামিট উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে একাধিক অ্যাক্টিভেশন কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ ধারাবাহিকতায় ২৬ নভেম্বর বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অডিটরিয়ামে ‘ক্যারিয়ার অপরচুনেটি ইন বিপিও ইন্ডাস্ট্রিজ’ বিষয় সেমিনার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অফ কলসেন্টার এন্ড আউটসোর্সিং (বাক্য) এর সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ হোসেন শিক্ষার্থীদের কাছে বিপিও সামিট ২০১৫ ও বিপিও এর প্রয়োজনীয়তা নিয়ে একটি প্রেজেন্টশন উপস্থাপন করেন। এ সময় তিনি বিপিও ক্ষেত্রে দেশ ও বিদেশে কাজের ক্ষেত্রের অবস্থা তুলে ধরে বলেন, সবার আগে শিক্ষার্থীদের নিজেকে যোগ্য হিসেবে গড়ে তুলতে হবে এবং বর্তমান বাজারে কোন কোন ক্ষেত্রে চাকরির বাজারে আছে সে সম্পর্কে ভালো জ্ঞান থাকতে হবে। বিপিও সামিট ২০১৫ শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তির চাকরির বাজার সম্পর্কে একটি ভালো দিবে বলে জানান তিনি। তৌহিদ হোসেন বলেন, ভারত ও শ্রীলংকায় বিপিও বাজার অনেক ভালো। আমাদের দেশে এই সেক্টরে ভালো করার অনেক সুযোগ রয়েছে। বিপিও সেক্টরে যে কোনো বিভাগের শিক্ষার্থী কাজ করতে পারবে। প্রযুক্তির এই সেক্টরে কাজ করতে হলে বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী হতে হবে এমন কোনো কথা নেই। বাণিজ্য ও মানবিক শাখার শিক্ষার্থীরা বিপিও সেক্টরে কাজ করতে পারবে। আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহন করেছে। সরকারি ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে। চাকরির বাজারেও তথ্য-প্রযুক্তির ক্ষেত্রে যোগ্যতা সম্পন্নদের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। শিক্ষার্থীদের চাকরির বাজারের জন্য যোগ্যতাসম্পন্ন করে গড়ে তুলতে হবে। তাই আমরা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাক্টিভেশন কার্যক্রম পরিচালনা করছি। বিক্রয় ডট কমের পক্ষ থেকে আয়োজনে অংশগ্রহণকারী ৩০ জন শিক্ষার্থীকে উপহার দেওয়া হয়। আমরা কোম্পানীজের আয়োজন অনুষ্ঠিত হয় শিক্ষার্থীদের মাঝে কুইজ প্রতিযোগীতা। প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহন শিক্ষার্থীকে আমরা কোম্পানীজের পক্ষ থেকে দু’টি স্মার্ট ফোন ও সেলফি স্টিক উপহার দেওয়া হয়। অ্যাক্টিভেশন কার্যক্রম বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী তামান্না ইসলাম বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পড়াশোনা করা অবস্থায় কাজ করা সুযোগ আছে । আমাদের দেশে সে সুযোগ এখনও তৈরি হয় নাই। এই অ্যাক্টিভেশন কার্যক্রম আশা করি সেই বন্ধ দুয়ার খুলে দিবে। ইংরেজি বিজ্ঞানের ২য় সেমিস্টারে ফারজানা শারমিন জানান, আগামী ৯-১০ ডিসেম্বর সামিট চলাকালীন প্রযুক্তি ক্ষেত্রে চাকরির সম্পর্কে আরও ভালো ভাবে জানতে পারবো। আশা করি এ আয়োজ আমাদের চলার পদে আলো দেখাবে। অ্যাক্টিভেশন কার্যক্রমে আরও উপস্থিত ছিলেন আমরা টেকনোলজিসের সহকারি ব্যবস্থাপক মেহেদি হাসান, বাংলাদেশ আইসিটি জার্নালিস্ট ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক তারিকুর রহমান খান, বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের সমন্বয়ক বাজেয়িদ ভূইয়া জুয়েলসহ অনেকে।