পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের মরাভোলা চরে আটকা পড়া ফ্লাই আ্যাশবাহী জাহাজ এমভি শোভনের উদ্ধার কাজ ৪ দিনেও শুরু হয়নি। এ অবস্থায় ৭৪৫ মেট্রিক টন ফ্লাই আ্যাশ (সিমেন্ট তৈরির কাঁচামাল) চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে এমভি শোভন-১। ধীরে ধীরে পলি জমে আটকে যাচ্ছে জাহাজটি। ইতিমধ্যে জাহাজের উপরিভাগের বিভিন্ন অংশে ছোট ছোট ফাটল দেখা দিয়েছে। গতকাল সুন্দরবনের মরাভোলার চর গিয়ে এ অবস্থা দেখা গেছে। পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ ঘটনায় গতকাল শরণখোলা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, গত বৃহস্পতিবার রাতে এমভি সাথীভাই নামের উদ্ধারকারী একটি কোস্টার জাহাজ ও ৩০ জন শ্রমিক ঘহটনাস্থলে অবস্থান করলেও অজ্ঞাত কারণে কাজ শুরু করতে পারছেনা জাহাজ কর্তৃপক্ষ। আর দুর্ঘটনার পর থেকেই পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা স্টেশন কর্মকর্তা একেএম ইউসুফ আলমের নেতৃত্বে বনরক্ষীরা সার্বক্ষণিক দেখাশোনার দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছেন। আটকা পড়া জাহাজের মাস্টার আঃ ওহাব জানান, তিনি থানায় জিডি করেছেন। পুলিশের অনুমতি পেলে মাল আনলোডের (খালাস) কাজ শুরু করা হবে। জাহাজের সুকানী (চালক) মো. রাব্বি জানান, জাহাজের পেছনের অংশ বালুতে আটকে গেছে। সামনের দিকে পানির গভীরতা বেশি থাকায় জাহাজটি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। যে কোনো সময় মাঝখান থেকে বড় ধরনের ফাটল দেখা দিতে পারে।
মেসার্স আলমগীর নেভিগেশন কোম্পানির সুপারভাইজার মো. জয়নাল আবেদীন জানান, উদ্ধারকারী জাহাজ এমভি সাথীভাই ঘটনাস্থলে অবস্থান করছে। এমভি শোভন-৯ নামের আরেকটি জাহাজ পাঠানো হয়েছে। আজকালের মধ্যে উদ্ধার কাজ শুরু করা হবে বলে জানান তিনি। শরণখোলা স্টেশন কর্মকর্তা (এসও) একেএম ইউসুফ আলম জানান, বনবিভাগ সার্বক্ষণিক তদারকিতে রয়েছে। দ্রুত উদ্ধার তৎপরতা শুরু না হলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সব ধরনের প্রস্তুতি থাকা সত্ত্বেও কি কারণে জাহাজের মাল অপসারণ কাজ শুরু হচ্ছেনা তা তিনি জানাতে পারেননি।
শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ আলম জানান, এ ঘটনায় জাহাজ কর্তৃপক্ষ থানায় একটি জিডি করেছেন। থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই মনিরুল কবিরের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম গতকাল শুক্রবার সকালে ঘটনাস্থ পরিদর্শন করেছেন। জাহাজটির মালামাল উদ্ধারে জাহাজ কর্তৃপক্ষকে অনুমতি দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১লা ডিসেম্বর রাত ১১টার দিকে পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের মরাভোলা চরে ৭৪০ মেট্রিকটন ফ্লাইঅ্যাশ নিয়ে এমভি শোভন-১ নামের জাহাজটি আটকে পড়ে। রাতের বেলা ঘন কুয়াশায় চালক দিক হারিয়ে ফেলায় জাহাজটি চরে উঠে যায়। মেসার্স আলমগীর নেভিগেশন কোম্পানির ওই জাহাজটি গত ২৫ নভেম্বর ভারতের বজবজিয়া এলাকা থেকে সিমেন্ট তৈরির কাঁচামাল বোঝাই করে ঢাকার মুক্তাপুর আমিরাত সিমেন্ট ফ্যাক্টরিতে যাচ্ছিল। জাহাজটি পথিমধ্যে সুন্দরবনের মরাভোলা এলাকার চরে এ দুর্ঘটনার শিকার হয়।