ঢাকার অদূরে আশুলিয়ায় বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের শাখায় খুন করে ডাকাতির ঘটনায় ১১ জনকে আসামি করে পৃথক দুইটি অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ। আজ রোববার ঢাকা মহানগর মুখ্য হাকিম আদালতে এ দুটি অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। আসামিরা আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্য বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়।
এই ১১ জনের মধ্যে বর্তমানে ১০জন কারাগারে আছেন। একজন পলাতক। আর এ ঘটনায় জড়িত দুজন গণপিটুনিতে ও ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন। এ দুজনকে অভিযোগপত্র থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করেছে পুলিশ।
দীর্ঘ আট মাস মামলার তদন্ত শেষে আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) দীপক চন্দ্র সাহা আজ বিকেলে আদালতে ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন। মামলায় বিস্ফোরক দ্রব্য ব্যবহারের অভিযোগ থাকায় এ ঘটনায় ওই ১১ জনের বিরুদ্ধে পৃথক আরেকটি অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।
অভিযোগপত্র ভুক্ত আসামিরা হলেন, বোরহান উদ্দিন, আল-আমিন, বাবুল সরদার, মিন্টু প্রধান, জসিম উদ্দিন, আবদুল বাতেন, মোজাম্মেল হক, উকিল হাসান, মাহফুজুল হক, পলাশ ও শাহজাহান জমাদার। এদের মধ্যে পলাশ পলাতক। আর নিহত আবদুল্লাহ আল বাকী ও আসিফ হোসেনকে অভিযোগপত্র থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করে পুলিশ।
অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, হামলার মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন আবদুল্লাহ আল বাকী। তিনি এক সময় নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জেএমবির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। মতপার্থক্যের কারণে তিনি জেএমবি থেকে বের হয়ে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সঙ্গে সম্পৃক্ত হন। এরপর তিনি ও তাঁর সহযোগীরা অর্থ সংগ্রহে নামেন। তারই ধারাবাহিকতায় তাঁর নেতৃত্বে আশুলিয়ায় ওই ব্যাংকে ডাকাতি করতে যান।
সাভার সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) নাজমুল হাসান বলেন, অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত বেশির ভাগ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এখন পলাশকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
চলতি বছরের ২১ এপ্রিল বেলা আড়াইটার দিকে ওই ব্যাংকের কাঠগড়া শাখায় ডাকাতি করতে যান একদল যুবক। তাঁরা গুলি করে, বোমা মেরে এবং ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ব্যাংকের ব্যবস্থাপকসহ প্রথমে তিনজনকে হত্যা করে টাকা নিয়ে পালিয়ে যেতে থাকেন। স্থানীয় জনতা তাঁদের ধাওয়া করেন। তখন জনতাকে লক্ষ্য করে তাঁরা গুলি করেন ও বোমা মারেন। তখন আরও পাঁচজন সাধারণ মানুষ নিহত হন। পরে জনতা আরও তিনজনকে ধরে ফেলেন। বাকিরা পালিয়ে যান। আটক তিনজনের মধ্যে আসিফ হোসেন নামের একজন গণপিটুনিতে মারা যান। বাকি দুজনকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে জনতা।
এ ঘটনায় ব্যাংক কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম খুনসহ ডাকাতি ও বিস্ফোরক দ্রব্য ব্যবহারের অভিযোগে আশুলিয়া থানায় একটি মামলা করেন। মামলার পর আরও আটজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আর রাজধানীর গাবতলীতে ডিবির সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ আবদুল্লাহ আল বাকী নামের একজন মারা যান বলে পুলিশ জানায়।