দুই ছক্কা ও এক বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ঢাকাকে আশা দেখান ম্যাথিউ ওয়ালার। তবে মাত্র চার বলে তিন উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে ঢাকা। দলীয় ১১০ রানে এতে একে একে উইকেট দেন ওয়ালার, মোসাদ্দেক ও ইয়াসির শাহ। এতে ১১৭ রানে থামে ঢাকার ইনিংস । আর শেষ পর্যন্ত ১৮ রানে জয় নিয়ে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারের টিকিট পায় বরিশাল বুলস। আল আমিন হোসেন ও কেভন কুপার নেন তিনটি করে উইকেট। আসরে উভয়ের শিকার সমান ১৬ উইকেট। আসরে এ নিয়ে তিন সাক্ষাতে বরিশালের বিপক্ষে হার দেখলো ঢাকা ডায়নামাইটস।
গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচেও ওপেনিং ব্যাটিংয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাতে দেখা গেল ঢাকা ডায়নামাইটসকে। এর আগে পাকিস্তানি লেগ স্পিন তারকা ইয়াসির শাহকে টানা দুই ম্যাচে দেখা যায় ঢাকা ইনিংসের ওপেনিং ব্যাট হাতে। আর গতকাল দলীয় রানে ওপেনিং জুটি ভাঙে ঢাকার। ব্যক্তিগত ১১ রানে উইকেট দেন ঢাকা ওপেনার আবুল হাসান রাজু। আরও একবার ব্যাট হাতে ব্যর্থ পাকিস্তানি তারকা মোহাম্মদ হাফিজ। এবার ১ রানে উইকেট খোয়ালেন ঢাকা ডায়নামাইটসের এ টপঅর্ডার ব্যাটসম্যান। আসরে চার ইনিংসে হাফিজের সংগ্রহ ৮, ১, ২৫ ও ১। বাজে শটে ওপেনার ফরহাদ রেজা ও অধিনায়ক কুমার সাঙ্গাকারা উইকেট খোয়ালে সম্ভাবনা ধূসর হয় ঢাকার। এতে ১০ ওভার শেষে ঢাকার সংগ্রহ দাঁড়ায় ৫২/৪-এ। তবে ঢাকা সমর্থকদের ম্যাচের শেষ পর্যন্ত চাঙ্গা রাখেন ম্যালকম ওয়ালার ও মোসাদ্দেক হোসেন। বিআরবি বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগে গতকাল ক্রিস গেইলকে সাজঘরের পথ দেখান ঢাকার স্বদেশি পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। এতে বড় পুঁজির সম্ভাবনা নস্যাৎ হয় বরিশালের। ৬ ওভার শেষে বরিশাল বুলসের সংগ্রহ ছিল ৫৩/৩। ১২ বলে ৩০ রান নিয়ে এ সময় ব্যাট করছিলেন বরিশালের ক্যারিবীয় ওপেনার গেইল। তবে পরের ৭ বলে স্কোর বোর্ডে মাত্র ১ রান যোগ করেন এ ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যান। গেইলের বিদায়ে ৯.৩ ওভার শেষে বরিশালের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৭৪/২-এ। ১৯ বলের ইনিংসে গেইল হাঁকান ৪ বাউন্ডারি ও দুইটি ছক্কা। ব্যক্তিগত ৪ রানে উইকেট দিয়ে সাজঘরে ফেরেন বরিশালের অপর ওপেনার রনি তালুকদার। এদিন ব্যাট হাতে সাব্বির রহমান নিজেকে ফিরে পান কিছুটা। চলতি আসরে ১১ ম্যাচে সাব্বিরের সাকুল্যে সংগ্রহ ১০১ রান। গতকাল সাব্বির খেলেন আসরে নিজের সর্বোচ্চ ৪১ রানের ইনিংস। ৩৩ বলে ৩৭ রানের ইনিংসে ফর্ম দেখাচ্ছিলেন বরিশাল অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদও। তবে ঢাকা ডায়নামাইটসকে ফের আলো দেখান মুস্তাফিজ। মুস্তাফিজের ডেলিভারিতে ফরহাদ রেজার হাতে ক্যাচ দেন মাহমুদুল্লাহ। এতে শেষ পর্যন্ত ১৩৫/৫ সংগ্রহ নিয়ে থামে বরিশাল বুলসের ইনিংস। উইকেট না পেলেও নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে চার ওভারের স্পেলে ১৮ রান দেন ঢাকার পাকিস্তানি লেগ স্পিনার ইয়াসির শাহ। বিআরবি বিপিএল’র এলিমিনেটর ম্যাচে বরিশাল বুলসের বিপক্ষে টস জিতে ফিল্ডিং বেছে নেন ঢাকা ডায়নামাইটস অধিনায়ক কুমার সাঙ্গাকারা। রাউন্ড রবিন লীগের দুই সাক্ষাতে ঢাকার বিপক্ষে রান তাড়া করে জয় পেয়েছিল বরিশাল বুলস। প্রথম সাক্ষাতে তারা জয় কুড়ায় ৯ উইকেটে। ক্যারিবীয় ওপেনার এভিন লুইস ওই ম্যাচে হাঁকান আসরের একমাত্র সেঞ্চুরি। আর রাউন্ড রবিন লীগের একবারে শেষ ম্যাচে রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে বরিশাল দেখে ২ উইকেটের জয়। ক্যারিবীয় তারকা রায়াদ এমরিত আট নম্বরে ব্যাট হাতে খেলেন ২৮ বলে ৫৪ রানের ইনিংস। আসরে আট নম্বর ব্যাটসম্যানের এটাই প্রথম ফিফটি। ওই ম্যাচে এমরিত ও বরিশালের কানাডিয়ান ক্রিকেটার নিখিল দত্ত নবম উইকেটে গড়েন অবিচ্ছিন্ন ৪৩ রানের জুটি। বিপিএল ইতিহাসে নবম উইকেট জুটিতে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড এটি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বরিশাল বুলস: ১৩৫/৫ (রনি ৪, গেইল ৩১, সাব্বির ৪১, মাহমুদুল্লাহ ৩৭, মেহদি মারুফ ১০, এমরিত ৯*, মুস্তাফিজ ২/২১, নাবিল ১/১৬, নাসির ১/৯)।
ঢাকা ডাইনামাইটস: (আবুল হাসান১১, ফরহাদ ২০, সাঙ্গাকারা ১০, হাফিজ ১, নাসির ১৫, মোসাদ্দেক ২৬, ওয়ালার ১৮, ইয়াসির ০, আল আমিন হোসাইন ৩/১৫, কুপার ৩/১৭, তাইজুর ২/১৩)।
ফল: বরিশাল বুলস ১৮ রানে জয়ী।