রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে অভিযুক্ত শিক্ষকের পক্ষে পাল্টা অভিযোগ করেছেন রোকেয়া হলের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। মঙ্গলবার দুপুরে ওই ছাত্রীর শাস্তি দাবি করে উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তারা।
অভিযুক্ত শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এ টি এম রফিকুল ইসলাম। তিনি রোকেয়া হলের আবাসিক শিক্ষক। অভিযোগকারী ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগকর্মী।
অভিযোগে বলা হয়, গত ২৩ নভেম্বর ওই ছাত্রী সাংগঠনিক পরিচয় দিয়ে অবৈধভাবে হলের সিট দাবি করেন। তবে ওই শিক্ষক ও প্রাধ্যক্ষ সিট প্রদানে অপারগতা প্রকাশ করেন। সেখানে ছাত্রলীগ সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, গত ১৬ ডিসেম্বর হলের বিজয় র্যালি উদ্যাপন শেষে খাবার বিতরণ করার সময় ওই ছাত্রীকে খাবার গ্রহণ করতে দেখা যায়নি এমনকি ওই শিক্ষকের সঙ্গে তার দেখা বা কথা হয়েছে এমনটি হলের কারও নজরে পড়েনি। রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ একবারে বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। এই অভিযোগের প্রতিবাদ জানিয়ে অভিযোগকারী ছাত্রীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়।
রোকেয়া হলের প্রাধ্যক্ষের প্যাডে করা এই অভিযোগে স্বাক্ষর করেন হলের আবাসিক শিক্ষক রনক জাহান, কাজী ইমরুল কায়েশ, উপ-রেজিস্ট্রার প্রনব কুমার বিশ্বাস, সেকশন অফিসার আবুল কালাম আজাদ, হিসাব সহকারী পিয়ারুল ইসলাম, উচ্চমান সহকারী নূরুল ইসলাম, সেকশন অফিসার সামিমা আকতার, পিয়ন আলাউদ্দিন শেখ, সিনিয়র সহকারী শাহানা সুলতানা, ডেপুটি রেজিস্ট্রার ঝর্ণা রাণী গুণ, সহকারী রেজিস্ট্রার মকবুল হোসেন ও অফিস পিয়ন ফারুক আক্তার। এছাড়া অভিযোগের সঙ্গে ‘যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটেনি’ মর্মে হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের স্বাক্ষরও সংযুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক মুহম্মদ মিজানউদ্দিন বলেন, ‘গত রোববার ওই ছাত্রী শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছে। আজ (মঙ্গলবার) শিক্ষকের পক্ষে রোকেয়া হলের ছাত্রীদের স্বাক্ষর সংবলিত অভিযোগ পেয়েছি। আমরা সবার অভিযোগই খতিয়ে দেখছি। প্রকৃত ঘটনা তদন্ত করে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রসঙ্গত, গত রোববার অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনে শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করে রাবি শাখা ছাত্রলীগ। একই দাবিতে গত সোমবার তারা ক্যাম্পাসে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পালন করে। তবে গত রোববারই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাধ্যক্ষ পরিষদের পক্ষ থেকে অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যমূলক বলে জানানো হয়।