বিএনপি থেকে অনেকেই বেরিয়ে যাওয়ার অপেক্ষায় আছেন বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ। তিনি আশা প্রকাশ করে আরও বলেছেন, চলতি বছরের স্বাধীনতার মাস মার্চেই জামায়াতে ইসলামী নিষিদ্ধ হতে পারে। গতকাল বিকালে ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে ছাত্রলীগের বর্তমান ও সাবেক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও শীর্ষ নেতাদের বৈঠক শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। ২০দলীয় জোট থেকে ইসলামী ঐক্যজোটের বেরিয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে হানিফ বলেন, ইসলামী ঐক্যজোট কি কারণে জোট ছেড়েছে তা আমাদের জানা নেই। তবে, বিএনপি নেত্রী ক্ষমতায় থাকতে এদেশে দুর্নীতি, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটিয়েছিলেন। ধর্মের কথা বলে অধর্মের কাজ করেছিলেন তারা। ক্ষমতার বাইরে থেকেও বেগম জিয়া নিরীহ মানুষদের পেট্রলবোমা দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করেছেন। পবিত্র ইসলাম যেটা সমর্থন করে না। সেই অধর্মের কাজ করার জন্য কোনো দল যদি জোট থেকে বেরিয়ে যায়, তাহলে সেটা স্বাভাবিক এবং যৌক্তিক। তিনি বলেন, শুধু জোট নয়, সন্ত্রাসী ও অনৈতিক কাজের জন্য বিএনপির অনেক নেতাই দল থেকে বেরিয়ে যাওয়ার চিন্তাভাবনা করছেন। ইতিমধ্যে একজন বেরিয়ে গেছেন। অনেকে বেরিয়ে যাওয়ার অপেক্ষায় আছেন। তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাসী বলেই আমরা চাই দেশে একটি শক্তিশালী বিরোধী দল থাকুক। গণতন্ত্রের জন্যও এটি অপরিহার্য। কিন্তু বিএনপির বর্তমান যে অবস্থা তাতে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বের প্রতি দলের নেতৃবৃন্দের প্রতি যে অনাস্থার সৃষ্টি হয়েছে তাতে বিএনপির ভবিষ্যৎ কি তা তারাই বলতে পারবে। জামায়াত নিষিদ্ধকরণ বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ নেতা হানিফ বলেন, ইতিমধ্যে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল হয়েছে। জামায়াতকে রাজনৈতিকভাবে নিষিদ্ধকরণ বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়া চলছে। আশা করি স্বাধীনতার মাস মার্চেই এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। হারার ভয়ে আওয়ামী লীগ বিএনপির সঙ্গে আলোচনায় বসতে চায় না-বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভীর এমন মন্তব্যের প্রেক্ষিতে মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, জনগণের ভয়েই তো বিএনপি লুকিয়ে আছে। খালেদা জিয়া এবং বিএনপি নেতারা মুক্তিযুদ্ধের শহীদ ও বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে কটাক্ষ করার কারণে সারা দেশে জনমনে যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে সে জন্য খালেদাসহ বিএনপি নেতারা পৌরসভা নির্বাচনে প্রচারণায় অংশ নেননি। এখন রিজভী বলছেন উল্টোটা। বিএনপির সঙ্গে আলোচনার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়ে হানিফ বলেন, আমরা সবসময় আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানে বিশ্বাসী। কিন্তু এই মুহূর্তে দেশে এমন কোনো সংকট নেই যে, বিএনপির সঙ্গে আলোচনার প্রয়োজন আছে। তবে, সংকট আছে খালেদার মনে। তার মানসিকতায় সংকট। একাত্তরে শহীদদের নিয়ে কটূক্তির জন্য বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াকে অবিলম্বে ক্ষমা চাওয়ার জন্য ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে উল্লেখ করে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, এটি শুধু ছাত্রলীগ নয়, পুরো জাতির দাবি। এর আগে ধানমন্ডির কার্যালয়ে ছাত্রলীগের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা। দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, দপ্তর সম্পাদক আবদুল মান্নান, আবদুস সোবহান গোলাপ, কৃষি ও সমবায়বিষয়ক সম্পাদক ড. আবদুর রাজ্জাক, শ্রমবিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য এসএম কামাল হোসেন, এনামুল হক শামীম, সুজিত রায় নন্দি, ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ, সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসাইন প্রমুখ।