বর্ষবরণের দিনে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে আটজনকে শনাক্ত করা হয় এবং ধরিয়ে দিলে পুরস্কার ঘোষণা করা হয় পুলিশের পক্ষ থেকে
পয়লা বৈশাখে টিএসসিতে যৌন নির্যাতনের ঘটনায় গ্রেফতার মো. কামালকে দুই দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপ-পরিদর্শক দীপক কুমার দাশ যৌন নির্যাতনের ওই ঘটনায় বৃহস্পতিবার কামালকে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ১০ ধারা মোতাবেক গ্রেফতার দেখিয়ে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন।
ঢাকা মহানগর হাকিম আবদুল্লাহ আল মাসুদ দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রাজধানীর চকবাজার এলাকা থেকে বুধবার রাতে পয়লা বৈশাখে টিএসসিতে যৌন নির্যাতনের ওই ঘটনায় কামালকে আটক করা হয়। পরে তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (দক্ষিণ) ডিসি মাসরুকুর রহমান খালেদ সংবাদমাধ্যমকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, লাঞ্ছনার ফুটেজের সঙ্গে মিল থাকায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আরো যাচাই বাচাই করা হচ্ছে।
গত পহেলা বৈশাখ (১৪ই এপ্রিল ২০১৫) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় কয়েকজন যুবক কর্তৃক নারীর শ্লীহতাহানীর ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনা দেশব্যাপী ব্যাপক আলোচিত হয়। শাহবাগ থানায় মামলাও হয় (মামলা নম্বর ২৫(৪)১৫)।
পহেলা বৈশাখের সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক মিলনায়তন (টিএসসি) এর সামনে এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ফটকে নারীদের শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটে।
১৫ এপ্রিল শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক আবুল কালাম আজাদ যৌন হয়রানির ঘটনায় মামলাটি দায়ের করেন। সিসিটিভির ফুটেজ দেখে আটজনকে শনাক্ত করা হয় এবং ধরিয়ে দিলে পুরস্কার ঘোষণাও করা হয়।
কিন্তু আট মাস পর আসামিদের খুঁজে না পাওয়ায় মামলাটির দ্রুত নিষ্পত্তির আবেদন জানিয়ে পুলিশের চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। বলা হয়, আসামিদের খুঁজে পাওয়া যায়নি। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক দীপক কুমার দাস গত মঙ্গলবার মামলাটি নিষ্পত্তির জন্য ঢাকা মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।
চূড়ান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্ষবরণে যৌন হয়রানির ঘটনা গোপন ও প্রকাশ্য তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে। তবে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে চিহ্নিত ৮ যৌন হয়রানিকারীকে গ্রেফতার করা যায়নি।
চূড়ান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘মামলার তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে প্রচণ্ড ভিড়ের মধ্যে ৮-১০ জন দুষ্কৃতকারী কতিপয় নারীর শাড়ি ধরে টান দেয়। তদন্তে সাক্ষ্যপ্রমাণ ও ঘটনার পারিপার্শ্বিকতায় মামলার অভিযোগ প্রাথমিকভাবে সত্য প্রমাণিত হয়।’
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ আছে, ‘মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করলে তাহারা মামলার বিস্তারিত বিষয় শুনে মামলাটি অহেতুক মুলতবি না রেখে দ্রুত নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দেন।’
চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার মাসখানেক পর এক আসামিকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পুলিশ।