স্কটল্যান্ডকে শেষ পর্যন্ত বড় ব্যবধানেই হারালো বাংলাদেশ। ১১৪ রানে জিতেছে স্বাগতিকরা। তাতে এক ম্যাচ হাতে রেখেই বাংলাদেশ উঠে গেল ঘরের মাঠের যুব বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে। কারণ, এদিন নামিবিয়া আরেক চমক দেখিয়েছে। তারা হারিয়ে দিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকাকে। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন প্রোটিয়ারা তাই সুপারলিগে উঠতে ব্যর্থ হলো। ‘এ’ গ্রুপ থেকে বাংলাদেশের সাথে সুপার লিগে গেল নামিবিয়া।
কক্সবাজারের শেখ কামাল ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ব্যাটসম্যানদের পর বোলাররাও জ্বলে উঠেছেন। স্কটিশদের বাধা তাই পার হওয়া গেছে সহজে। আগে ব্যাট করে নাজমুল হোসেন শান্তর অপরাজিত ১১৩ রানে ভালো সংগ্রহ পায় স্বাগতিকরা। তারা ৬ উইকেটে করে ২৫৬ রান। এরপর ৪৭.২ ওভারে স্কটল্যান্ডকে ১৪২ রানে অল আউট করে দেয়।
২৫৭ রানের টার্গেটে ছুটতে নেমে শুরুটা ভালো ছিল স্কটল্যান্ডের। ৪৮ রান করেছে কোনো উইকেট না হারিয়ে। কিন্তু ১০ উইকেট হারিয়ে তারা আর ৯৪ রান তুলতে পেরেছে। দুই ধসে শেষ হয়ে গেছে তারা। ৪৮ রান থেকে ৫৬ রানে যেতে তিন উইকেট হারায় তারা। আজিম দার ৫০ ও জ্যাক ওয়ালার ২৪ রান করে প্রতিরোধ গড়েছিলেন। কিন্তু পরের ধাক্কাটা রুখতে পারেননি। ২৯ রানে শেষ ৬ উইকেট হারায় তারা। আর এই ৬ উইকেট সমান ভাগে ভাগ করে নিয়েছেন বাঁ হাতি স্পিনার সালেহ আহমেদ শাওন ও পেসার মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। প্রথমে শাওন আঘাত হেনেছেন। পরপর তিন উইকেট নিয়েছেন। পরের তিন উইকেট নিয়েছেন সাইফুদ্দিন। এ ছাড়া ২ উইকেট নিয়েছেন আরেক বাঁ হাতি স্পিনার আরিফুল ইসলাম। ১ উইকেট অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজের।
এর আগে শান্তর সেঞ্চুরি, মিরাজের ৫১ ও সাইফ হাসানের ৪৯ রানে ভালো একটি সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ। এই ম্যাচের আগে চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। ওই খেলায় ৭৩ রান করে ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছিলেন শান্ত। এবারও বাংলাদেশের ত্রাতার ভূমিকায় তিনি। কক্সবাজারের শেখ কামাল ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মাত্র ১৭ রানেই ২ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। তারপর ক্রিজে আসেন শান্ত। শুরুতে শান্ত ব্যাটিং করেছেন। পরে হয়েছেন অশান্ত। স্কটিশরা তাতে দিশা হারিয়েছে।
ওপেনার সাইফ একটু ধীরে ব্যাট করেন। তিনি তাই করলেন। তবে শান্তর সাথে তার ১০১ রানের জুটি বাংলাদেশকে পথে এনেছে। প্রথম দুই উইকেট হারানোর ধাক্কাটা সামাল দেওয়ায় শান্তর সাথে সমান ভূমিকা সাইফের। ৩৩ ওভার পর্যন্ত এক সাথে ব্যাট করেছেন তারা। তখনো সাড়ে তিনের ওপর রান রেট। রানের গতি পরে বেড়েছে শান্ত ও মিরাজ জুটির ব্যাটিংয়ে।
মিরাজ আসার আগেই ফিফটি করেছেন শান্ত। ৭১ বলে ৫০ করলেও পরে আরো দ্রুত গতিতে রান তুলেছেন। শেষ ৬৩ রান তিনি করেছেন ৪৬ বলে। মিরাজ ও শান্ত চতুর্থ উইকেটে দলকে দিয়েছেন ১০০ রান। এই রান তারা তুলেছেন প্রায় ৭ গড়ে। ৪৫ বলে ৫০ করার পরই ফিরেছেন মিরাজ। এই ম্যাচে ৪ উইকেট নেওয়া বাঁ হাতি পেসার মোহাম্মদ গাফ্ফার নিয়েছেন তার উইকেট। দলের দারুণ প্রয়োজনে করা শান্তর সেঞ্চুরিটি ১১১ বলের। আর তার অপরাজিত ইনিংসটি ১১৭ বলের। যেটি সাজানো ১০টি বাউন্ডারিতে। টানা দুই ম্যাচে সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জিতলেন শান্ত।
এই ম্যাচে অনন্য একটি রেকর্ডও গড়েছেন শান্ত। যুবাদের ওয়ানডে আন্তর্জাতিক ম্যাচের ইতিহাসের সর্বোচ্চ রানের মালিক এখন এই বাঁ হাতি ব্যাটসম্যান। পাকিস্তানের সামি আসলামের আগের ১৬৩৪ রানের রেকর্ড ভেঙ্গেছেন তিনি। ওই রেকর্ড ভাংতে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ৬২ রান দরকার ছিল শান্তর।